ব্যাটল ফিল্ড নন্দীগ্রাম। কারণ পয়লা এপ্রিল এই বিধানসভায় ভোট। আর প্রধান দুই প্রতিপক্ষের নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। গোটা দেশ তাকিয়ে এই বিধানসভার দিকে। রবিবার থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘাঁটি গেড়েছেন নন্দীগ্রামে। আর সেখান থেকেই শুভেন্দু অধিকারী-সহ গোটা অধিকারী পরিবারকেই নিশানা করছেন তিনি। পাশাপাশি শুভেন্দুর গলায় ‘ভূমিপুত্র’ স্লোগান। চলতি বিধানসভা নির্বাচনে ‘ভূমিপুত্র’ বনাম ‘বাংলার মেয়ে’ প্রচারেই জোর দিয়েছে যুযুধান দুই ফুল।
এদিন নন্দীগ্রামে শেষ মুহূর্তের প্রচারে সেই ‘ভূমিপুত্র’ প্রসঙ্গ উসকে দিলেন একদা মমতার আস্থাভাজন শুভেন্দু অধিকারী। এই আসনের বিজেপি প্রার্থী এদিন বলেন, 'আমি স্থানীয় ছেলে, তাই এখানেই থাকব। বাকি যাঁরা উড়ে এসেছেন, তাঁরা আবার উড়ে চলে যাবেন।'
সুর চড়িয়ে তাঁর মন্তব্য, 'উনি যা বলেন, সব মিথ্যা কথা। ওনার কাছে এখন লোকে কাজ চাইছে, কাজ নেই। শিল্প চাইছে, শিল্প নেই। এসব কথা বলে এখন লাভ নেই। মানুষ ওনাকে বিশ্বাসই করে না।'
শুভেন্দুর দাবি, 'অমিত শাহ কমসম করে বলেছেন ৩০-এ ২৬ পাবেন। আমি বলছি, প্রথম দফার ভোটের ৩০ আসনের ৩০টিই আমরা পাব। মানুষ তোষনের বিরুদ্ধে, উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আমাদের লক্ষ্যই হল, সবকা সাথ-সবকা বিকাশ। মানুষ সেই বিকাশের স্বার্থেই ভোট দিয়েছেন।'
এদিকে, নন্দীগ্রামে পা রেখেই রবিবার ১৪ বছর আগের গণহত্যার ষড়যন্ত্রের নেপথ্যেও অধিকারীদের ভূমিকার কথা তুলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এমনকি, সিপিএমের সঙ্গে শুভেন্দুদের আঁতাত নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। কিন্তু শুভেন্দু শুরু থেকেই নন্দীগ্রামে ধর্মীয় মেরুকরণের যে রাজনীতি শুরু করেছেন, তার অন্যথা হল না সোমবারও। মঙ্গলবার বিকেলেই নন্দীগ্রামে ভোটের শেষ প্রচার।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল যখন মমতার জন্য 'বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়' বলে গোটা রাজ্যে প্রচারে নেমেছে, শুভেন্দু সেখানে নিজেকে নন্দীগ্রামে 'ঘরের ছেলে' বলে নিজেকে দেখানোর চেষ্টা করছেন। যদিও নন্দীগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। আর তখনই তিনি বলে উঠেছেন, 'নন্দীগ্রামে ঝামেলা করছেন পাকিস্তানিরা', আবার কখনও বলেছেন, তৃণমূল ফিরলে বাংলা কাশ্মীর বা বাংলাদেশ হয়ে যাবে।
যদিও নন্দীগ্রাম গণহত্যায় মমতার আক্রমণের মুখে পড়ে শুভেন্দু গোটা বিষয়টিকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।