একুশের নির্বাচনে বাংলায় দলের ভরাডুবির পর থেকে শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত বিজেপি নেতা তথাগত রায়। বিভিন্ন সময়ে টুইটবাণে বিদ্ধ করেছেন দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন এবং শিবপ্রকাশকে। ভোটে বাংলার দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন তাঁদের ব্যর্থতার জন্য দল ডুবেছে বলে সরব তিনি। এবার কৈলাসকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কুৎসিত আক্রমণ মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপালের।
টুইট করে বঙ্গ বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে কুকুরের সঙ্গে তুলনা করলেন তথাগত রায়। পাশাপাশি একটি পাগ প্রজাতির কুকুর এবং কৈলাসের মুখ দিয়ে মিম তিনি শেয়ার করেছেন টুইটারে। সেই মিমের ক্যাপশনে লেখা ছিল, ভোডাফোন আবার পশ্চিমবঙ্গে। উল্লেখ্য, টেলিকম সংস্থা ভোডাফোন পাগ কুকুরকে বিজ্ঞাপনে বেশ কয়েক বছর আগে ব্যবহার করেছিল নেটওয়ার্কের শক্তি বোঝানোর জন্য। এবার সেই পাগের সঙ্গে কৈলাসের তুলনা করলেন তথাগত।
এক টুইটার ইউজার প্রথম এই ছবিটে শেয়ার করেন। লেখেন, ভোটে ভরাডুবির পরও কৈলাসকে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক পদেই বহাল রাখল বিজেপি। সেই মিমটি শেয়ার করেছেন তথাগত। এদিকে, রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রবিবারই মুখ খুলেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, তৃণমূলত্যাগীদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়াতেই ভোটে পদ্ম বাহিনীর শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে।
সোমবার দলের তরুণ কেন্দ্রীয় নেতার মতামতকে সমর্থন জানিয়ে টুইট করেছেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি তথাগত রায়। অনুপম হাজরার দাবি, দলের তিন মহিলা প্রার্থীর তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের সঙ্গে নাচ ও শিখা মিত্রের প্রার্থীপদ প্রত্যাখ্যানের বিষয়টিকে তুলে ধরেছেন তথাগত। জানিয়েছেন, ‘পৃথিবীর বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের পক্ষে এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে?’
রবিবার অনুপম হাজরা বলেছিলেন যে, ‘ভোটের আগে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। সিনেমা জগৎ থেকে আসা ব্যক্তিদের নিয়ে বেশি নাচানাচি হয়েছিল। আর সেই কারণে দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন পুরানো নেতা-কর্মীরা। আসলে কৌশল যে ভুল হয়েছিল, তা স্পষ্ট। সেটা তখন বোঝা না গেলেও পরে বোঝা গিয়েছে।’
আরও পড়ুন ‘এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে ?’, ফের বিষোদগার তথাগতর
এ দিন কেন্দ্রীয় সম্পাদকের এই বিশ্লেষণকে ‘প্রণিধানযোগ্য’ বলে দাবি করেছেন তথাগত রায়। টুইটে লিখেছেন, ‘তৃণমূলের নেতাদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়াতেই ভরাডুবি। দলের পুরোনো নেতাদের গুরুত্ব না দেওয়াটা ঠিক হয়নি।-বিজেপির কেন্দ্রীয় সচিব অনুপম হাজরা। বয়সে ছোট এবং অভিজ্ঞতায় সীমিত হলেও অনুপমের বিবৃতি প্রণিধানযোগ্য। এবার বিজেপি এমন লোককে টিকিট দিয়েছিল যিনি তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন (শিখা মিত্র)। তিনটে নগরীর নটী টিকিট পেয়ে মদনের সঙ্গে জলকেলি করেছে, তারপর হেরে গিয়ে ভ্যানিশ হয়ে গেছে। পৃথিবীর বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের পক্ষে এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে?’
বঙ্গে দলের ভোটের ব্যর্থতার জন্য আগেই দিলীপ ঘোষ, অরবিন্দ মেনন, কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের দায়ী করে তুলোধোনা করেছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। বাঙালি নেতাদের গুরুত্বহীন করে কেন ভিন রাজ্যের নেতাদের ভোট পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হল তা নিয়ে বিষোদগার করেছিলেন তিনি। অবশ্য এরপরও ‘বেসুরো’ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির আমন্ত্রিত সদস্যের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন। রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষকের পদ থেকে বাদ পড়েনি কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নাম। তাই ফের তথাগতর নিশানায় বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন