দিদির দূত নয় বরং তারকার মর্যাদা পেলেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিক। শনিবার তাঁকে সামনে থেকে দেখতে, একটু ছুঁয়ে দেখতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল উত্তরপাড়ার শিমুলতলা এলাকায়। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরাই দলীয় প্রার্থীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পার্টি অফিসে ঢোকান। সেখানে আবার ফুল-মালা-শাঁখ নিয়ে দাঁড়িয়ে দলের মহিলা কর্মীরা। কাঞ্চন মল্লিক ঢুকতেই তাঁকে বরণ করে নেওয়া হল। এসব দেখে কাঞ্চনের দাবি, ‘বিশ্বাস করুন মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে চাই।‘
তিনি বলেন, ‘এটা ভাবলে হবে না, পরিযায়ীর মতো এসেছি চলে যাব। এটা ভাবলেও হবে না ভোট মিটলেই এখানে কোনও অনুষ্ঠানে করতে আসলে পয়সা নেব। দলীয় কর্মীদের উষ্ণতা আমার মন কেড়েছে। আমি উত্তরপাড়ার মানুষের পাশে আছি। গাড়িতে বসে হাত নাড়িয়ে নয়, বরং মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, মানুষের কাজ করতে চাই।‘ ঘটনাচক্রে সম্প্রতি দলবদল এবং দলে যোগদানের যে হিড়িক পড়েছে, প্রত্যেকেই মানুষের জন্য কাজ করতেই দল বদলেছেন বা রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েছেন। এমন দাবি সংবাদমাধ্যমের সামনে করছেন।
সেই কথা ফের একবার প্রার্থী হিসেবে উত্তরপাড়ায় শোনা গেল কাঞ্চন মল্লিকের গলায়। যদিও কাঞ্চনের এই উষ্ণ অভ্যর্থনাকে কটাক্ষ করছেন প্রবীর ঘোষাল। সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেওয়া উত্তরপাড়ার দুই বারের বিধায়ক বলেন, ‘আমার বাড়ির পুজো ২৫ বছরের। তাই উত্তরপাড়ায় কেউ আমাকে বহিরাগত বললে লোকে তাঁকে পাগল বলতে পারে। সেলিব্রিটি প্রার্থী হলে কী হয়, মানুষ আগে টের পেয়েছে। যদিও উত্তরপাড়ায় সক্ত জমির ওপর দাঁড়িয়ে বিজেপি।‘
এদিকে, কাঞ্চন মল্লিকের পাশাপাশি আরও এক তারকা প্রার্থী ব্যারাকপুরের রাজ চক্রবর্তী। সেই এলাকায় আবার বিজেপির সাংসদ দাপুটে অর্জুন সিং। শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পরই অর্জুন সিং মন্তব্য করে বসেছিলেন, “ব্যারাকপুরে হার নিশ্চিত জেনে, ‘যাকে তাকে’ টিকিট দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” নজর এড়ায়নি সদ্য তৃণমূলের যোগ দেওয়া তথা ব্যারাকপুর কেন্দ্র থেকে টিকিট পাওয়া পরিচালকের। অতঃপর পাল্টা দিতে ময়দানে নামলেন তিনিও। বিজেপি নেতার এহেন ‘যাকে তাকে’ কটাক্ষের প্রেক্ষিতে রাজও কষিয়ে উত্তর করলেন। বললেন, “আমি হয়তো যা-তা, কিন্তু আমার নামে তো আর ৯৭টা কেস নেই, আমি তো বোমা বানাই না। আমি সিনেমা বানাই।”
ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং টলিউড পরিচালককে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, “ব্যারাকপুর ফিল্মি ডিরেক্টর বা চলচ্চিত্রকে তোল্লাই দেওয়ার মতো জায়গা নয়, এখানে প্র্যাক্টিকেল কাজটা বেশি হয়। এখানে লোক নাটক বা ছবি কম দেখে বা কম বোঝে। মমতা বুঝে গিয়েছেন যে, ব্যারাকপুর কেন্দ্র নেওয়াটা অসুবিধার, তাই যাকে-তাকে টিকিট দিয়েছেন।”