পঞ্চম দফায় সকাল থেকেই বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে উত্তপ্ত থাকল কল্যাণীর গয়েশপুর। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগে এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন তৃণমূল-সমর্থকরা। উত্তেজনা চরমে ওঠে যখন বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে বহিরাগত নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানোরে অভিযোগ ওঠে। এই ক্ষোভে বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করেন তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা। বাঁশ, লাঠি, ইট দিয়ে বিজেপি কর্মীদের বাড়ির চাল, অ্যাসবেস্টর ভাঙতে দেখা যায়। দরজা ভেঙে রীতিমতো ‘তাণ্ডব’ চালায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। এমনটাই বিজেপি সুত্রে অভিযোগ। সেই হামলার মুখে পড়ে রক্তাক্ত হয়েছেন বিজেপি নেতার মা।
জানা গিয়েছে, ভাঙচুর চলেছে পার্থ হাজরার বাড়িতে। কল্যাণী বিধানসভার বিজেপির ২০৭ নম্বর বুথ সভাপতি পার্থ। এই হামলার জেরে নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তোলেন পার্থর মা। বিজেপি করায় এই হামলা, দাবি সেই মহিলার। এই ঘটনার পর পার্থ হাজরার দাবি, ‘তৃণমূলের কারণে আমার চাকরি গিয়েছে। তাই আমি বিজেপি করা শুরু করি। আমার ঘরবাড়ি সব ভেঙে দিয়ে চলে গিয়েছে।‘
এরপরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই হামলার পুরোভাগে ছিলেন শাসক দলের মহিলা কর্মীরা। এমনটা গেরুয়া শিবির সুত্রে খবর। যদিও তৃণমূলের দাবি, ‘এই ঘটনা জনরোষের ফল।‘ বহিরাগত দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দিয়েছিল ওই পরিবার। এমনটাই অভিযোগ করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘ভয় পেয়েই হামলা চালিয়েছে তৃণমূল।‘ কমিশন সুত্রে খব্র, এই ঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই বিজেপি নেতার বাড়িতে পুলিশ ক্যাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, পঞ্চম দফার ভোটে বিক্ষিপ্ত অশান্তি নদিয়া জেলায়। শনিবার কল্যাণী বিধানসভার গয়েশপুরের ২৭০ নম্বর বুথে বোমাবাজি। এই ঘটনায় কাঠগড়ায় তৃণমূল। ভোট দিতে এসে বোমার আঘাতে জখম এক বিজেপি কর্মী। চৈতন্য ভট্টাচার্য নামে ওই বিজেপি সমর্থকের পায়ের সামনে বোমা পড়েছে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে পথ অবরোধে বিজেপি। তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। অনেকে হাতে লাঠিসোটা নিয়েও বেরিয়ে পড়েন। পাল্টা স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাপি দাস নামে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে চরাও হয়েছিলেন বিজেপি কর্মীরা।এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সেই বাপি দাস, এমনটাই অভিযোগ বিজেপির।
পাশাপাশি পুলিশের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। গত ৭ দিন ধরে তাঁকে খোঁজা হচ্ছে। পরিবারের দাবি, বহুদিন ধরে বাড়িতে নেই ওই তৃণমূল নেতা। এদিন আবার বেলা বাড়ার সঙ্গে অশান্ত হয়ে ওঠে গয়েশপুর। বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরকে ঘিরে বিক্ষোভ। তাঁকে বন্দুক উঁচিয়ে পুলিশের সামনেই হুমকির অভিযোগ বিজেপির। বহিরাগত দুষ্কৃতী নিয়ে এসেছেন বিজেপি সাংসদ। এই অভিযোগে সরব তৃণমূল। যদিও বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, ‘আগ্নেয়াস্ত্র জড়ো করেছে ত্রিনমুল্ল। এখানে অশান্তি হচ্ছে শুনে দেখতে এসেছিলাম।’
পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে, এবার শান্তিপুরেও অশান্তি, চলল ‘গুলি’। গুলি চালানোর অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। আহত তৃণমূল সমর্থক শক্তিনগর হাসপাতালে ভর্তি।প্রথমে বোমাবাজি ও পরে গুলি চালানোর অভিযোগ। যদিও এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে দায় এড়িয়েছে গেরুয়া শিবির। রাজপুর পাড়ার এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টহলদারী শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তৃণমূলের অভিযোগ, ‘এদিন দুপুরের দিকে বাইকে চেপে এসে দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করেছে।‘
অপরদিকে, দক্ষিণ বর্ধমানে মহিলাদের ওপর কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ। স্থানীয়দের মহিলাদের বিক্ষোভ। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা ছাপ্পা ভোট দিচ্ছিল প্রতিবাদ করায় তাঁদের মারধর করা হয়। এরপর তাঁরা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়।