শনিবারের বারবেলায় রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতিতে বিস্ফোরণ। আসানসোলের দুবারের সাংসদ, সাড়ে ছবছর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব করা বাবুল সুপ্রিয় সাত বছর পর বিজেপি ছেড়ে যোগ দিলেন তৃণমূলে। গত ৩১ জুলাই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, রাজনীতি ছাড়ার কথা। তবে একটাই দল তিনি করবেন বলে স্পষ্ট করেছিলেন। কিন্তু দুমাসের মধ্যেই সিদ্ধান্ত পাল্টে ঘাসফুল শিবিরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েও দিয়েছেন, আসানসোলের সাংসদ পদও ছেড়ে দেবেন। বাংলার জন্য আরও বড় দায়িত্ব পালন করার ইঙ্গিত পাওয়া গেল তাঁর কথায়।
তাহলে এখানে প্রশ্ন উঠছে, এই কারণেই কি রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দিলেন অর্পিতা ঘোষ। ইস্তফা দিতেই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক পদে আনা হয় এই নাট্যব্যক্তিত্বকে। কিন্তু এদিন বাবুলের তৃণমূলে যোগ এবং আসানসোলের সাংসদ পদ ছাড়ার কথা ঘোষণার মধ্যে একটা ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। তিনি এও বলেছেন, শেষ তিন-চারদিনে তিনি দলবদলের সিদ্ধান্ত নেন। তাহলে কি অর্পিতার ইস্তফা আচমকা সিদ্ধান্ত নয়! ভেবেচিন্তেই ঘুঁটি সাজিয়েছে তৃণমূল। অর্পিতার জায়গায় বাবুলকে রাজ্যসভায় পাঠাতে পারে তৃণমূল। এমনটাই জল্পনা।
উল্লেখ্য, রাজ্যসভায় অর্পিতার মেয়াদ ছিল ২০২৬ পর্যন্ত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবারই সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অর্পিতা। তার পরের দিনই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক করা হয় অর্পিতাকে। শনিবার বাবুল তৃণমূলে যোগ দিতেই নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে। তাহলে কি বাবুলকেই অর্পিতার জায়গায় রাজ্যসভায় পাঠানোর ছক কষে রেখেছিল তৃণমূল? রাজনৈতিক মহলে এই প্রশ্নই এখন মুখরিত। কারণ বাবুল নিজেও এদিন বলেছেন, তাঁর কাছে একটা বড় সুযোগ এসেছে যা তিনি হাতছাড়া করতে চান না। তাহলে কি সেই সুযোগ কি রাজ্যসভায় যাওয়ার?
আরও পড়ুন ‘শেষ তিন-চারদিনে সিদ্ধান্ত নিয়েছি’, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে মন্তব্য বাবুলের
তৃণমূলে যোগদানের পর এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “শেষ চারদিনে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর মধ্যে কোনও প্রতিহিংসা নেই। রাজনীতি ছাড়ার কথা মন থেকেই বলেছিলাম। নিজের সিদ্ধান্ত বদল করার জন্য আমি গর্বিত। রাজনীতি ছাড়ব বলার পর ৭ বছরের পরিশ্রম ধুলোয় মিশে গিয়েছিল। বাংলার জন্য কাজ করতেই রাজনীতিতে ফেরা। সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করব। বিজেপির তরফ থেকে প্রচুর কটাক্ষ আসবে, আমি জানি। কিন্তু আমার সামনে যে বড় সুযোগ এসেছে তা আমি এবার ছাড়ব না। যদি আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়, দল যা বলবে তাই করব। মমতা দিদির অন্য কারওর প্রচারের দরকার পড়ে না। তবে নির্দেশ পেলে ভবানীপুরে মমতা দিদির জন্য প্রচার করব।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন