এক ব্যক্তি এক পদ দাবি উঠতেই অস্বস্তি বেড়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসে। তার মধ্যেই শনিবার তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যদের নাম ঘোষণা হল। শীর্ষস্তরের সব পদের আপাতত অবলুপ্তি। জাতীয় কর্মসমিতির সভানেত্রী হলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বৈঠকের পর জানালেন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২০ জনের জাতীয় কর্মসমিতি ঘোষণা তৃণমূলের। তৃণমূলের শীর্ষস্তরে সমস্ত পদের আপাতত অবলুপ্তি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতি পরিচালিত হবে।
জাতীয় কর্মসমিতিতে রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন, অমিত মিত্র, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মলয় ঘটক, অনুব্রত মণ্ডল, গৌতম দেব। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, বুলুচিক বরাইকের নামও রয়েছে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, কাকলি ঘোষদস্তিদার, রাজীব ত্রিপাঠীরাও রয়েছেন কর্মসমিতিতে। পার্থ এদিন বলেন, কর্মসমিতির পদাধীকারীদের নাম পরে ঘোষণা করবেন তৃণমূল নেত্রী। আপাতত দলের শীর্ষস্তরের সমস্ত পদের অবলুপ্তি ঘটল।
এদিন ২০ জনের মধ্যে ১৬ জন সদস্যের নাম ঘোষণা করেন পার্থ। পরে ২০ জনের নাম ঘোষণা করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বিজেপি থেকে ঘরওয়াপসি হওয়া মুকুল রায়ের নাম নেই। তৃণমূলে ফেরার পর তাঁকে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভপতি করেছিলেন মমতা-অভিষেক। কিন্তু গতকালই বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীর করা মামলার প্রেক্ষিতে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মুকুল দলবদল করেননি, তিনি বিজেপিরই বিধায়ক। তাই মুকুলের নাম জাতীয় কর্মসমিতিতে না থাকার কারণ এটাও হতে পারে। কারণ নাম থাকলে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ হওয়া অবশ্যম্ভাবী।
আরও পড়ুন রাজ্যপালের বেনজির সিদ্ধান্ত, ‘স্থগিত’ ঘোষণা বিধানসভার অধিবেশন
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ওয়ার্কিং কমিটি দেখেই সংগঠনে রদবদলের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এক ব্যক্তি এক পদ নিয়ে যেভাবে অভিষেক-অনুগামীরা দলের মধ্যে সরব হয়েছেন, তাতেই জাতীয় কর্মসমিতি ঘোষণা করে এবং শীর্ষস্তরের সব পদ অবলুপ্ত করে ভাইপো অভিষেককেই গুরুত্ব বেশি দিলেন দলনেত্রী মমতা। যে দুজনের সঙ্গে দলের মধ্যে বিরোধ প্রকট হচ্ছিল অভিষেকের, তাঁদের মধ্যে অন্যতম কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটিতে তাঁর নাম না থাকা একপ্রকার চরম বার্তা হতে পারে। নাম নেই সৌগত রায় এবং ডেরেক ওব্রায়েনের। রয়েছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, যশবন্ত সিনহা, অসীমা পাত্র।
তার উপর কমিটিতে বাকি যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে অভিষেকের বিরোধ তো দূরের কথা, সখ্যতাই বেশি। তাই এই কমিটি দেখেই আঁচ করা যাচ্ছে, দলের সর্বময় নেত্রী মমতার পর তাঁর ভাইপোর গুরুত্বই বেশি থাকছে তৃণমূলে। কিন্তু দলের রাশ মমতার হাতেই থাকছে, দিদি-ই দলের শেষ কথা তা এদিন স্পষ্ট হয়ে গেল।
আরও পড়ুন দলে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নিয়ে নবীন বনাম প্রবীণ, তৃণমূলে বিরোধের নেপথ্যে কৌশল?
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের জরুরি বৈঠকে যোগ দিতে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে একে একে পৌঁছন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সহ-সভাপতি সুব্রত বক্সিরা। তৃণমূলে সূত্রে খবর, শুরু হয়েছে বৈঠক। বৈঠকে হাজির হয়েছেন দলের প্রথম সারির নেতৃত্ব।