নাম না-করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলার পরও চুপ করে ছিলেন। তার বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর আর জবাব না-দিয়ে পারলেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটপ্রিয় রাজ্যপালের সমালোচনার জবাব দিতে টুইটকেই বেছে ছিলেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। তাঁর টুইট, 'আমি সবসময় ক্ষমতাসীনের কাছেও সত্য কথা বলায় বিশ্বাসী। গতকাল, আমি বলেছিলাম যে কিছু ব্যক্তিকে রক্ষা করার জন্য কীভাবে কলকাতা হাইকোর্টের এক শতাংশ কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। লোকেরা দেখছে, তাঁরা জানেন কে আসলে চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করছে। আমি বিষয়টি নিয়ে এখানেই থামছি!'
এর আগে নাম না-করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রীতিমতো বিরক্তির সঙ্গে বলেছিলেন, 'একজন সাংসদ সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। বিচার ব্যবস্থাকে আক্রমণ করাটা বিপজ্জনক প্রবণতা।' শনিবার হলদিয়ার সভায় বিচার ব্যবস্থার একাংশের কঠোর সমালোচনা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার প্রেক্ষিতেই ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল একথা জানান। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের ব্যাপারে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ করারও নির্দেশও দেন রাজ্যপাল।
সাম্প্রতিক সময়ে তৃণমূল নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে একের পর এক রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে সিঙ্গল বেঞ্চ। এসএসসি থেকে শুরু করে কাউন্সিলর খুন, বগটুইয়ে বাড়ি জ্বালিয়ে খুন-সহ বেশ কিছু মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যা নিয়ে অস্বস্তি বেড়েছে রাজ্যের। একের পর এক তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীকে প্রায় প্রতিদিনি সিবিআই অফিসে হাজিরা দিতে হচ্ছে। কয়লা, গরুপাচার-কাণ্ডে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়েছে তৃণমূলের একাধিক নেতার নাম। খোদ অভিষেক বন্দ্যোপধ্যায়কেই কয়লা পাচার-কাণ্ডে দিল্লিতে দু’বার ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন- ‘এক সাংসদ সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছেন’, নাম না করে অভিষেককে নিশানা ধনকড়ের
সেসব ঘটনাকে মাথায় রেখেই শনিবার নজিরবিহীনভাবে বিচার ব্যবস্থাকে নিশানা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বিচার ব্যবস্থায় যুক্ত দু-একজনের বিরুদ্ধে বিজেপিশাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ ও তল্পিবাহক হওয়ার অভিযোগ তিনি তোলেন। অভিষেক বলেন, ‘আমার বলতেও লজ্জা লাগে, বিচার ব্যবস্থায় একজন-দু’জন এমন আছেন, যাঁরা যোগসাজশে কাজ করছেন তল্পিবাহক হিসেবে। কিছু হলেই সিবিআই দিয়ে দিচ্ছে। মার্ডার কেসে স্টে দিয়ে দিচ্ছে, ভাবতে পারেন! আপনি অভিযুক্তকে নিরাপত্তা দিতে পারেন। কিন্তু মামলায় স্টে দিতে পারেন না।’ শনিবার অভিষেকের এই মন্তব্যকেই 'বিপজ্জনক প্রবণতা' বলে নিন্দা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।