২৭ মার্চ রাজ্যের প্রথম দফার ভোট। দুই মেদিনীপুর এবং জঙ্গলমহল মিলিয়ে মোট ৩০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। তার আগে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর এবং নন্দীগ্রামে শেষবেলার প্রচারে ঝড় তুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে ভোটপ্রচারে যুব তৃণমূলের সভাপতি ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই নরেন্দ্র মোদির সরকারকে আক্রমণ করেন। এদিন বিজেপির ইশতেহারকে কটাক্ষ করেন তিনি। তাঁর কথায়, 'বিজেপির ইশতেহার অডিও ক্যাসেট, শুধু শোনা যায়, চোখে দেখা যায় না। আর তৃণমূলের ইশতেহার হাই কোয়ালিটি ডিভিডি ক্যাসেট। আপনি শুনতেও পাবেন, দেখতেও পাবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অক্ষরে অক্ষরে পালন করে দেখিয়েছেন।'
আয়ুষ্মান ভারত ও স্বাস্থ্যসাথীর পার্থক্য তুলে ধরে মোদি সরকারকে আক্রমণ করেন অভিষেক। তাঁর দাবি, 'দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, দুয়ারে সরকার ভাঁওতা, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নাকি জুমলা। তার পর দিলীপ ঘোষের পরিবার নিজেরাই গিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করেছে। তখন বলছে তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ। এই তো বিজেপির কথা। এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। কেউ করে দেখাতে পারেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারা পৃথিবীকে এই যুগান্তকারী কাজ করে দেখিয়েছেন। এটা নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক।'
বিজেপির বিরুদ্ধে অভিষেকের তীব্র কটাক্ষ, 'পশ্চিমবঙ্গের লোকসংখ্যা ১০ কোটি। বিজেপি চেয়েছিল, আয়ুষ্মান ভারত দিতে চেয়েছিল ১ কোটি লোককে। আমি যদি মিথ্যে কথা বলি, আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা করে জেলে ঢোকাবেন। কিন্তু মমতা বলেছেন, যাঁরা আমাকে ভোট দেননি তাঁদের জন্যও স্বাস্থ্যসাথী করব। মমতার উন্নয়ন সবার জন্য। তাঁর একটাই ধর্ম মানবধর্ম। আরে শুধু বাস-ট্রামে নয়, ক্ষমতা থাকলে মহিলাদের জন্য পারলে ভারতীয় রেল ফ্রি করে দিন।'
নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি অভিষেকের প্রশ্ন, 'গুজরাটের মোতেরায় সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের নাম পরিবর্তন করে মোদির নামে হয়ে গিয়েছে। আগে বাংলার মণীষীদের অপমান করত, এখন সারা ভারতের মণীষীদের করে। ক্ষমতায় এলে ভগবানপুর মোদিপুর হবে। নিজের নাম পালটে জায়গার দাম পালটে দিচ্ছে। কে নেবে এর দায়িত্ব?’
এদিকে,বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের নির্বাচনী জনসভা থেকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। একনজরে দেখে নিন কী বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-
- মোদীর মতো এত বড় একটা মিথ্যেবাদী আমি জীবনে দেখিনি। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারটাকে আগে সম্মান করতাম। এখন আর করি না।
- বীরসা মুণ্ডার মূর্তি বলে কার মূর্তিতে মালা দিয়েছিল? মনে আছে? বিষ্ণুপুর কি ভুলে গিয়েছে?
- ফুল একটাই, মাটি মানে ঘাস, ঘাস মানে জোড়াফুল। আর সেই জোড়াফুলেই ভোটটা দেবেন।
- বিষ্ণুপুরে হেরিটেজ টাউন হবে। আগেও বিষ্ণুপুরের ঘোড়া ও পট শিল্পীদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও উন্নতি হবে। আমি যা বলি করে দেখাই।
- ২৯১টা সিটে আমাকেই ভোট দেবেন। তবেই তো আপনাদের বিনামূল্যে চাল দিতে পারব। সুবিধা দিতে পারব। আমাকে চাইলে জোড়া ফুলে ভোট দিন।
- বাংলায় ভিন রাজ্য থেকে যারা আসে তাঁদের বহিরাগত বলি না। যারা শুধু ভোটের আগে আসে, তাদের বহিরাগত বলি।
- সপ্তম পে কমিশনের কথা বলেছে বিজেপি। এদিকে ত্রিপুরায় প্রভিডেন্ট ফান্ড তুলে দিল, গ্র্যাচুইটি তুলে দিল। মিথ্যেবাদীর দল বিজেপি।
- জঙ্গলমহলে রোজ রক্ত ঝড়ত। এখন বলুন তো, জঙ্গলমহলে মানুষ মরছে? বাঁকুড়া ভাল আছে তো? জঙ্গলমহলে ৪০ হাজার ছেলেমেয়েকে চাকরি করে দিয়েছি। যাতে তাঁরা মূলস্রোতে ফিরে আসেন, অনেকে এসেছেনও। যা বলেছি তা করে দেখিয়েছি।