হুগলিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামাতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। কোচবিহারে পদ ছেড়েছেন দলীয় বিধায়ক। এছাড়া দলের অভ্যন্তরে সমালোচনাও চলছে নানা সভায়। এবার বিষ্ফোরক মন্তব্য করলেন পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল সংসদ সুনীল মণ্ডল। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের সাহাপুরে দলীয় সভায় তিনি বলেন, "আমাদের শত্রু আমরাই। তৃণমূলের শত্রু তৃণমূলই। এটা যদি না হত তাহলে আগামী ১০০ বছরের রাজনীতিতে কোন বিরোধী দল বাংলায় প্রবেশ করতে পারত না। পূর্ব বর্ধমানের দলীয় সাংসদ সুনীল মণ্ডলের এই মন্তব্যে তৃণমূলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তোলপাড় রাজনৈতিক মহল।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি-তৃণমূল দুই যুযুধান পক্ষই। করোনা আবহে কোনওরকম বিধি না মেনেই মিছিল-মিটিং করে চলেছে রাজ্যের সর্বত্র। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব বর্ধমানের দুটি লোকসভা আসনের মধ্যে একটি বিজেপি দখল করেছিল। পূর্ব বর্ধমান আসনে জয় পায় তৃণমল। কিন্তু সেই জয়েও দলের অভ্যন্তরেই যে কাঁটা ছিল সেকথা এদিন স্বীকার করে নেন সুনীল মণ্ডল। তাঁর স্পষ্ট স্বীকারোক্তি, "২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে জামালপুর বিধানসভা এলাকায় দলের একাংশ বিরোধিতা করায় মাত্র সাড়ে চার হাজার ভোটের লিড পেয়েছিলাম। তা নাহলে ৪০-৫০ ভোটের লিড থাকত । ২০২১ নির্বাচন যত সামনে এগিয়ে আসছে নানা জেলায় তৃণমূল নেতৃত্বের নানান স্বীকারোক্তি প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন “জেলে যাব, কিন্তু মমতাকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চাই”, ডিগবাজি গুরুংয়ের
শুধু নিজের এলাকার গোষ্ঠীকলহ নিয়ে সোচ্চার হননি এই তৃণমূল সাংসদ। একসময়ের বাম বিধায়ক এদিন জানিয়ে দেন, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁয়ের জয়ের পিছনে নির্বাচনী ক্ষেত্রে তাঁর ঢুকতে না পারা বড় ভূমিকা নিয়েছে। তাঁর মতে, "ওই নির্বাচনে সৌমিত্র খাঁ নির্বাচনী ক্ষেত্রে প্রবেশ করেত পারেননি। তাঁর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তিনি যদি প্রচার করতেন তাহলে তিনি জিততে পারতেন না। গোহারা হেরে যেতেন।" এদিন এমন নানা বিষয় টেনে এনে তিনি দলের একাংশের তীব্র সমালোচনা করেন।
আরও পড়ুন মুসলিম বলেই ধরপাকড়, জঙ্গি সন্দেহে ধৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দিক এনআইএ, দাবি সিদ্দিকুল্লার
২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে জামালপুরে বামেদের পরাজিত করে তৃণমূল জয় পায়। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে আসনটি হাতছাড়া করে তৃণমূল। দিন কয়েক আগে জামালপুরে সভা করতে এসেছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেদিন বিজেপি কর্মীদের ওপর ইট-পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল। তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের অভিমত, "সেদিন যাঁরা পথে নেমে দিলীপ ঘোষের বিরোধিতা করতে গিয়েছেন তাঁরা ঠিক করেননি। আমি মনে করি যাঁরা ওইসব করেছেন তারা রাজনীতির প্রেক্ষাপট বোঝেন না। দিলীপ ঘোষের সঙ্গে এইসব করার জন্যই ওই দিন বিজেপির জনসভায় লোক বেড়ে গেল।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন