TMC Shahid Diwas Updates 21 July, 2021: বাংলার ভোটের পরই খেলা শেষ নয়, খেলা চলবে। আরও বড় পরিষরে খেলা হবে। ২১শের মঞ্চ থেকে ফের খেলার ডাক দিলেন তৃণমূল নেত্রী। ২০২৪-কে সামনে রেখে এবার খেলা হবে জাতীয়স্তরে। সাফ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২১ মঞ্চে বিজেপি দেশব্যাপী সব বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ফ্রন্ট গড়ার আহ্বান জানান তৃণমূল নেত্রী। এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেছেন, ‘২রা মে একটা খেলা হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের রেজাল্ট বিজেপি দেখতে পেয়েছে। আবার খেলা হবে। যতদিন বিজেপিকে ভারতবর্ষ থেকে আমরা বিতাড়িত না করতে পারছি, ততদিন রাজ্যে রাজ্যে খেলা হবে। বুথে বুথে খেলা হবে। সমস্ত জায়গায় খেলা হবে।’
আরও পড়ুন- ফোনের ক্যামেরা ঢেকেছেন প্লাসটারে, ‘পেগাসাস মোদীর নাভিশ্বাস’ তোপ মমতার
মোদী সরকারকে উৎখাতে এদিন মমতা বলেন, ‘পরের সপ্তাহে দিল্লি যাচ্ছি। বিরোধী নেতারা বৈঠক ডাকুন। আমি থাকবো। সব নেতাদের বলছি একটা ফ্রন্ট গড়ুন। একটা খেলা হয়েছে। আবার খেলা হবে। আর দেরি করলে চলবে না। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ে তুলতে হবে।’
আরও পড়ুন- বাংলা দখলের পরই মমতার মুখে ‘জয় হিন্দুস্থান’ ধ্বনি, বিরোধী ফ্রন্টের ডাক
একুশে ভোটে বাংলাজুড়ে আলোড়িত হয়েছে ‘খেলা হবে’ স্লোগান। ২রা মে-র পর যা দেশজুড়ে জনপ্রিয়। ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ুতেও ছড়িয়ে পড়েছে ‘খেলা হবে’ ধ্বনি। সেই সূত্র এবার লোকসভা ভোটের আগে গোটা দেশে এই স্লোগানকে জনপ্রিয় করে তুলতে মরিয়া জোড়া-ফুল নেতৃত্ব। যার পুরোভাগে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- ‘গদ্দারদের রাজনৈতিক বিদায় হবে’, নাম না করে শুভেন্দুকে হুঁশিয়ারি মমতার
এছাড়াও বাংলার সদ্য সমাপ্ত ভোটে বিজেপি মানি ও মাসেল পাওয়ার ব্যবহার করেছে বলেও অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি বলেন, ‘মা, মাটি, মানুষকে ধন্যবাদ জানাই। শারদ পাওয়ার, পি চিদাম্বরম, দ্বিগিজয় সিং, কেশব রাও, জয়া বচ্চনকে স্বাগত। বাংলার মানুষ নির্বাচনে মানি, মাসেল পাওয়ারকে উপেক্ষা করে তৃতীয়বার তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছেন। আমি কৃতজ্ঞ।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন
'উন্নততর তৃণমূল তৈরি করুন। তাহলেই উন্নতর দেশ গড়তে পারা সম্ভব। সবাইকে গুরুত্ব, সম্মান দিন।'
'বিজেপি পার্টিতে গদ্দারদের জন্ম হয়। ভালো লোকেদের জন্ম হয় না। কারণ ওরা সভ্যতা জানে না। সংস্কৃতি জানে না। এভাবেই ওরা সবার মুখ বন্ধ করে দেয়। অমি বিশ্বাস করি গদ্দারদের মানুষ রাজনৈতিকভাবে বিদায় দেবে। কে গদ্দার মানুষ ভালো করে জানেন। নন এমএলএ মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে তা কাউকে শিখতে হবে না। সাহায্য সত্ত্বেও কেন একাধিকবার এনডিএ-র হাত ছেড়েছেন উনি আগে তার জবাব দিক। তারপর কে গদ্দার প্রমাণ হবে।'
'কোভিডে মনুমেন্টাল ফেলিওর হয়েছে কেন্দ্রের। মেডিসিন, ভ্যাকসিন নেই। ডেড বডি গঙ্গায় ভাসছে। তবু প্রধানমন্ত্রী বলছেন উত্তরপ্রদেশ বেস্ট'
বিচারপতিদের ফোনও ট্যাপ হয়েছে। তাই ফোন ট্যাপকাণ্ডে সুপ্রিমকোর্টকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করার আবেদন জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচার ব্যাবস্থা গণতন্ত্রকে বাঁচাতে পারে বলে মনে করেন তৃণমূল নেত্রী।
'পরের সপ্তাহে দিল্লি যাচ্ছি। বিরোধী নেতারা বৈঠক ডাকুন। আমি থাকবো। সব নেতাদের বলছি একটা ফ্রন্ট গড়ুন। একটা খেলা হয়েছে। আবার খেলা হবে। আর দেরি করলে চলবে না। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ে তুলতে হবে।'
ত্রিপুরায় শহিদ দিবসের ভার্চুয়াল বার্তা শোনার জন্য জায়েন্ট স্ক্রিনের সামনে তৃণমূল সমর্থকরা জড়ো হন। ত্রিপুরা পুলিশ ১০০ জন তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তীব্র প্রতিবাদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। টুইট করে বিজেপি শাসিত রাজ্যে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উপর আক্রমণের প্রতিবাদ করেছেন।
'পেগাসাস ডেঞ্জারাস। কেউ কাউকে বিশ্বাস করছে না। আমি অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি না। নিজের ফোনের ক্য়ামারায় প্লাসটার লাগিয়ে দিয়েছি। অভিষেক, পিকের ফোন ট্যাপ হয়েছে। দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিচ্ছে বিজেপি। গণতন্ত্রের বদলে গোয়েন্দাগিরি চলছে।'
'মা, মাটি, মানুষকে ধন্যবাদ জানাই। শরদ পাওয়ার, পি চিদাম্বরম, দ্বিগিজয় সিং, কেশব রাও, জয়া বচ্চনকে স্বাগত। বাংলার মানুষ নির্বাচনে মানি, মাসেল পাওয়ারকে উপেক্ষা করে তৃতীয়বার তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছেন। আমি কৃতজ্ঞ।'
ভার্চুয়াল মঞ্চে বক্তব্য শুরু তৃণমূল সুপ্রিমোর।
২০২৪কে সামনে রেখে এবার জাতীয়স্তরে ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা ছড়িয়ে দিতে মরিয়া তৃণমূল। দিল্লির সংবিধান ক্লাবে আয়োজন করা হয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমোর বার্তা শোনানোর। ইতিমধ্যেই একাধিক দলের নেতা মমতার ভাষণ শুনতে দিল্লির সংবিধান ক্লাবে হাজির। অকালি দল, আরজেডির সাংসদ ছাড়াও সেখানে এসেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। চিদম্বরম, সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চনও।
'বাংলার বিশ্বাসযোগ্য মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে আজকের শপথ নিতে হবে দেশ থেকে বিজেপি হঠাও। উত্তরপ্রদেশ হোক বা গুজরাত, তামিলনাড়ু অথবা ত্রিপুরা, ২০২৪ সালের নির্বাচনে বাংলা থেকে আওয়াজ উঠবে, জনবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চাই।' শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে বললেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়
শহিদ বেদিতে তৃণমূল নেতৃত্বের মাল্যদান।

ছবি: শশী ঘোষ
ধর্মতলায় শহিদদের স্মরণে বেদিতে শ্রদ্ধা জানালেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি fসুব্রত বক্সী, রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসরা। দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন সুব্রত বক্সী।
জেলায় জেলায়, ব্লকে ব্লকে আজ পালিত হচ্ছে তৃণমূলের শহিদ দিবস। কোথাও শহিদদের তর্পণ আবার কোথাও শহিদ বেদীতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
করোনাকালে ভার্চুয়ালভাবে পালন করা হচ্ছে তৃণমূলের শহিদ দিবস। কিন্তু ২০১১ সাল ছাড়া ১৯৯৪ সাল থেকে প্রতি বছর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কোভিডের জেরে গতবার শহিদ দিবস ভার্চুয়ালি পালিত হয়েছিল। এবারও তাই। কিন্তু প্রথা মেনে ধর্মতলায় তৈরি করা হয়েছে শহিদ বেদি। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো নেতারা।

ধর্মতলার ২১শের শহিদ বেদি। ছবি- শশী ঘোষ

ধর্মতলায় শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ জানাবেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রস্তুতি সম্পন্ন। ছবি- শশী ঘোষ
ভোটের পর থেকে বহু বিজেপি কর্মী হিংসার বলি হয়েছেন বলে অভিযোগ পদ্ম শিবিরের। বিজেপির দাবি, মমতা সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় এই হিংসা। তাই মৃত কর্মীদের শহিদের মর্যাদা দিয়ে ২১ জুলাই পাল্টা ‘শহিদ দিবস’ পালন করছে বঙ্গ বিজেপি।
শহিদ দিবস উপলক্ষে টুইট করে স্মৃতিচারণা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের। তিনি লিখেছেন, “১৯৯৩ সালের সেই যন্ত্রণাদায়ক স্মৃতি এখনও টাটকা। তত্কালীন সরকারের অমানবিক নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছিলেন ১৩ জন কর্মী। কোনওদিনও তা ভোলা যাবে না। শহিদদের আত্মবলিদানের জন্য সেদিনের নায়কদের শ্রদ্ধার্ঘ জানাই। জয় হিন্দ! জয় বাংলা!”
ভাটপাড়ায় গঙ্গার ঘাটে শহিদ তর্পণ তৃণমূলের। শহিদ দিবস উপলক্ষে ১৩ জন নিহত কর্মীর আত্মার শান্তির জন্য বুধবার সকালে বলরাম সরকার ঘাটে ভাটপাড়া টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে শহিদ তর্পণ করা হয়।
শহিদ দিবস উপলক্ষে টুইট বার্তায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অমানবিক আচরণ যারা করে তাদের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার আহ্বান মমতার।
দলনেত্রীর বার্তা দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল। তাই এবছর বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে ভিন রাজ্যেও মমতার ভার্চুয়াল বক্তব্য জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে পৌঁছে দেবে তৃণমূল। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, আসাম, ত্রিপুরা-সহ একাধিক রাজ্যে সরাসরি সম্প্রচার।
শহিদ দিবস কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ বিজেপির। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শহিদ দিবস কর্মসূচি পালন করবেন যুব কংগ্রেস কর্মীদের মৃত্যুর প্রতিবাদে, এদিকে বাংলায় রোজ আমাদের কর্মীদের খুন করা হচ্ছে।”
১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই, সচিত্র ভোটার পরিচয় পত্রের দাবিতে রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান করে যুব কংগ্রেস। তৎকালীন রাজ্য যুব কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সেদিন অভিযান হয়। কলকাতার রাজপথে সেদিন পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মী। তাঁদের স্মৃতিতেই প্রতি বছর ২১ জুলাই দিনটিতে শহিদ দিবস পালন হয়ে আসছে।