বিজেপির বিক্ষোভে সোমবার বিক্ষোভে উত্তাল হয় বিধানসভা। গেরুয়া বিধায়কদের বিক্ষোভে বাজেট অধিবেশনের প্রারম্ভিক ভাষণই দিতে পারেননি রাজ্যপাল। শেষমেষ বক্তব্যের প্রথম ও শেষ লাইন দুটি পড়ে কক্ষ ছাড়েন জগদীপ ধনকড়। ঘটনায় বেজায় অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির এই বিক্ষোভকে 'নাটক ও পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলা' বলে কটাক্ষ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কিছুক্ষণেই পাল্টা শাসক শিবিরকে তোপ দেগেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি, 'তৃণমূল গণতন্ত্র মানে না। তোলাবাজ, গুন্ডাদের দিয়ে ভোট করিছে। আমরা দূর থেকে প্রতিবাদ করেছি।'
কেন রাজ্যপালের ভাষণের সময় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা? এদিন তারই ব্যাখ্যা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেছেন, 'রাজ্যপালের ভাষণের বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত। তাই তার উপর আলোচনা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু, তৃণমূল তা মানেনি। বক্তব্যের প্রতিলিপি দেখে আমরাও তা মানতে পারিনি। পুরসভার ভোট গুন্ডা, তোলাবাজদের দিয়ে করানো হয়েছে। ছাপ্পা, ভোট লুঠ হয়েছে। পুলিশ নীরব ছিল। এই বক্তব্যে ভোট লুঠ, কর্মসংস্থান' শিল্প তৈরি, সরকারি কর্মীদের ডিএ বৃদ্ধি, আস্থায়ী সরকারি কর্মীদের স্থায়ীকরণের কোনও কথা নেই। তাই বিক্ষোভ করেছি।'
আরও পড়ুন- বিধানসভায় হট্টগোল, ধনকড়কে হাতজোড় মমতার, পদ্ম বিধায়কদেরও ধমক
শুভেন্দু অধিকারীর হুঁশিয়ারি, শাসক দল, সরকার গণতান্ত্রিক প্রথা না মানলে রাজ্যজুড়ে বিচ্ছিন্নবাদী শক্তি মাথাচাড় দেবে। রাজ্যভাগের কথা উঠে আসবে। অর্থাৎ, তৃণমূল পরিচালিত সরকারকে কৌশলে আগেই থেকেই রাজ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য দায়ী করে রাখলেন বিরোধী দলনেতা।
বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভের মাঝে কক্ষ ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। সাংবিধানিক সংকট কাটাতে সেইসময় রাজ্যপালকে হাতজোড় করে মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ শুরুর অনুরোধ করেছিলেন। রাজ্যপালও বিক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়কদের আসন গ্রহণ করে শান্ত হওয়ার আর্জি জানান। একসময় রাজ্যপালকে তৃণমূলের মহিলা বিধায়করা ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শেষে বক্তব্যের প্রথম ও শেষ লাইন দুটি পড়ে কক্ষ ছাড়েন জগদীপ ধনকড়। যা নিয়ে সোচ্চার শুভেন্দু অধিকারী।
আরও পড়ুন- পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলা, হেরে গিয়ে নাটক বিজেপির: মুখ্যমন্ত্রী
রাজ্যর বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, 'রাজ্যপাল পাঁচবার কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁকে ঘিরে ছিলেন তৃণমূলের শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সহ মহিলা বিধায়করা। মুখ্যমন্ত্রীর চোখের ইশারায় তাঁরা রাজ্যপালকে ধাক্কা মেরেছেন, নিগ্রহ করেছেন।'
বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনেই তোলপাড় পড়েছে বিধানসভায়। শুরু দিনেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। বাকি অধিবেশনজুড়ে যে দ্বৈরথ চলবে, এদিনের ঘটনা যেন তারই আভাস।