শেষ দফায় বেলা বাড়তেই উত্তেজনা ছড়াল মুর্শিদাবাদের ডোমকলে। এই আসনের ১০৯ নম্বর বুথের অদূরে দুই ড্রামভর্তি বোমা উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয়দের মারফৎ সেই খবর কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাছে গেলে ঘিরে ফেলা হয় এলাকা। ড্রামগুলোর ওপর গাছ ফেলে নিরাপদ করা হয় স্থানীয়দের। এরপর খবর যায় বোম স্কোয়াডের কাছে।
তাঁরা এসে একটা একটা করে ড্রাম সরিয়ে সেই বোমা নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করে। একটা ফাকা মাঠে প্রায় ৪০০-৫০০ মিটার এলাকা জনমানবশূন্য করে চলে বোমা নিস্ক্রিয় করার কাজ। জানা গিয়েছে, দুই ড্রাম বোমা উদ্ধার হলেও, প্রশাসনের তৎপরতায় এড়ানো গিয়েছে বড় দুর্ঘটনা। শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোট দিয়েছেন ওই বুথের ভোটাররা। গত কয়েকটি ভোটে সকাল থেকেই উত্তপ্ত থাকতো মুর্শিদাবাদের এই বিধানসভা। ভোটের দিন বোমাবাজি, সংঘর্ষ, দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য যেন রোজনামচা ছিল। কিন্তু চলতি ভোটে সেই আবহ অনেকটাই ফিকে। এমনটাই জানান সেই এলাকার ভোটাররা।
এদিকে, ভোট শুরুর কয়েকঘণ্টার মধ্যেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল মানিকতলা-বেলেঘাটা। মানিকতলার রামকৃ্ষ্ণ সমাধি এলাকায় তুমুল বিক্ষোভের মধ্যে পড়েন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে। তাঁর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। অন্যদিকে, রক্তাক্ত হল বেলাঘাটা বিধানসভার ট্য়াংরা সেকেন্ড লেনও। ইঁট, রড, পাথর নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় তৃণমূল-বিজেপি।
মানিকতলার রামকৃ্ষ্ণ সমাধি এলাকায় নিউ ন্যাশনাল হাই স্কুলের বুথে অশান্তি শুরু হয়। এরপরই অশান্তির খবর পেয়ে বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে ফুলবাগান সংলগ্ন ২৪০ ও ২৪১ নম্বর বুথ এলাকায় যেতেই উত্তেজনা ছড়ায়। বিজেপি প্রার্থীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে গেলে তাঁদের সঙ্গেও বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। এরপরই কল্যাণ চৌবেকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মানিকতালর বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, স্থানীয় বিদায়ী কাউন্সিলরের ছেলে মারধর করেছে তাঁকে। এমনকী লাথিও মারা হয়েছে তাঁর গাড়িতে। ধস্তাধস্তির জেরে ছিঁড়ে যায় পুলিশের উর্দি।
তৃণমূলের অভিযোগ,সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট চলছিল ওই এলাকায়। বিজেপি প্রার্থী এলাকায় গিয়ে উত্তেজনা তৈরি করে। অশান্তির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন বিদায়ী বিধায়ক তথা তৃণমূল প্রার্থী সাধন পাণ্ডে (Sadhan Pande)। তার সামনেও চলে তুমুল অশান্তি। সাধন পাণ্ডের অভিযোগ, তৃণমূলের মহিলা কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। গলা টিপে দেওয়া হয়েছে।
মানিকলতায় যখ এই পরিস্থিতি তখন ধুন্ধুমার বাঁধে বেলেঘাটাতেও। ট্যাংরার সেকেন্ড লেন এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি। বাঁশ-লাঠি-হকি স্টিক নিয়ে চলে তাণ্ডব। দু’পক্ষের মধ্যে পাথর ছোড়়াছুড়ি হয়। একে অপরকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় বোতল-লোহার রড। আহত হয়েছেন উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন। একজন বিজেপি সমর্থককে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাঁর মুখ ফেটে যায়।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ গেলে তাদেরও ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা। লাঠি উঁচিয়ে জমায়েত ভাঙে পুলিশ।