ভোট বাজারে ফের শিরোনামে পূর্ব বর্ধমানের রসিকপুর। গত মাসেই এই রসিকপুরে বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল এক শিশুর। এবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের রোড শোয়ে হামলার অভিযোগ উঠলো। গত সপ্তাহে কোচবিহারে ভোট প্রচারে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন বিজেপি সভাপতি। তাঁর গাড়িতে চলে ভাঙচুর। এবার মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রসিকপুরে বিজেপি এবং তৃণমূলের সংঘর্ষে চরম উত্তেজনা এলাকায়৷ ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি বাইক এবং দোকানে৷ এই ঘটনায় পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে বিজেপি (BJP) এবং তৃণমূল (TMC)৷
জানা গিয়েছে, বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সন্দীপ নন্দীর সমর্থনে এদিন বর্ধমান শহরের পাওয়ার হাউস মোড় থেকে পার্কাস রোড মোড় পর্যন্ত রোড শো করেন দিলীপ ঘোষ৷ এই রোড শো রসিকপুর মোড় দিয়ে যাওয়ার সময়ই উত্তেজনা দেখা দেয়। এই হামলার পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বর্ধমানে সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে বাধা দিয়ে এরা ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইছে। দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম চলে গিয়েছে, তৃণমূলের যাওয়ার দিন এসেছে। তাই আমরা চাই নির্বাচন নির্বিঘ্নে হোক। কেন্দ্রীয় বাহিনী আছেন। আমরা বর্ধমানবাসীকে অনুরোধ করব আপনা আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করুন। কেউ আটকাতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন শান্তিতে ভোট করাচ্ছে। সারা রাজ্যে নির্বিঘ্নে ভোট হচ্ছে। কয়েকজন দুষ্কৃতী ভোট প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারবে না।‘
জানা গিয়েছে, স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে থাকা কর্মী, সমর্থকদের সঙ্গে প্রথমে বচসা শুরু হয় বিজেপি কর্মীদের৷ ক্রমে তা হাতাহাতির চেহারা নেয়৷ তৃণমূলের অভিযোগ, এর পর তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালান বিজেপি সমর্থকরা৷ তৃণমূলের কার্যলয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ৷
বিজেপি-র পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূলের পার্টি অফিস থেকেই বিজেপি সমর্থকদের উদ্দেশে কটূক্তি করা হয়৷ তার থেকেই ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা৷ ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি৷ প্রসঙ্গত কিছুদিন আগে এই রসিকপুরেই বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল এক শিশুর৷
পূর্ব বর্ধমানের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের অভিযোগ, ‘বিজেপি-ই সর্বত্র প্ররোচনা ছড়াচ্ছে৷ এ দিন রসিকপুরেও একই ঘটনা ঘটেছে৷’ এ দিনের ঘটনার জন্য বিজেপি রাজ্য সভাপতির দিকেই আঙুল তুলেছেন স্বপন দেবনাথ৷ যদিও এই ঘটনায় এখনও বিজেপি-র কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷
বিজেপি-র হামলার প্রতিবাদে পাল্টা বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরাও৷ রসিকপুর মোড় অবরোধ করেন তাঁরা৷ রাস্তার উপরে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়৷ বিজেপি-র সমস্ত ব্যানার, পতাকা খুলে ফেলা হয়৷ এই ঘটনার জেরে বর্ধমান শহরের অন্যত্রও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খায় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ রসিকপুর মোড় হয়েই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে যাওয়ার মূল রাস্তা৷ অবরোধের জেরে আটকে ছিল একাধিক অ্যাম্বুল্যান্স৷