ইংরেজরা দখলের আগে অবিভক্ত বাংলার রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে প্রবল পরাক্রমী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনার হাতে পরাস্ত হন বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা। কিন্তু সেই যুদ্ধ ইংরেজদের সাহায্য করে সিরাজের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন মীরজাফর, জগৎ শেঠ, উর্মিচাঁদরা।
রবিবার সেই মুর্শিদাবাদের মাটিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিরাজ ও শুভেন্দু অধিকারীকে মীরজাফরের সঙ্গে তুলনা টেনে ইতিহাস টেনে আনলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বললেন, 'সিরাজের' মতো মমতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন 'মীরজাফর' শুভেন্দু। মুর্শিদাবাদের মানুষ তাঁকে কোনওদিন ক্ষমা করবে না।
আরও পড়ুন ‘বাংলায় পদ্ম ফোটাবই’, জঙ্গলমহল থেকে চ্যালেঞ্জ শুভেন্দুর
গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দায়িত্বে যেকটি জেলা ছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল মুর্শিদাবাদ। এই জেলাতেই কংগ্রেসের দুর্গে আঘাত হেনে দুটি লোকসভা আসনে জেতে তৃণমূল। সেই জয়ের পিছনেও শুভেন্দুর সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল তা অনস্বীকার্য। কংগ্রেসের ঘর ভেঙে অপূর্ব (ডেভিড) সরকার এবং আবু তাহের খানকে তৃণমূলে আনার পিছনে তাঁর মস্তিষ্ক ছিল। কিন্তু এখন ছবি অন্য। শুভেন্দু দলত্যাগ করে বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই তাঁর কপালে জুটেছে 'মীরজাফর', 'গদ্দার', 'বিশ্বাসঘাতকের' মতো তকমা।
এদিনও আবু তাহের থেকে শুরু করে সদ্য বিজেপি থেকে আসা সুজাতা মণ্ডল খাঁ এবং ফিরহাদ হাকিমরা শুভেন্দুকে মীরজাফর বলে কটাক্ষ করেন। বিজেপি এবং মিমের মেরুকরণের রাজনীতির তুমুল সমালোচনা করে ফিরহাদ বলেন, "ওরা সবাই লাফাচ্ছে। কেউ জয় শ্রীরাম বলে, কেউ আল্লা-হু-আকবর বলে। কিন্তু মুর্শিদাবাদের মাটি সম্প্রীতির মাটি। এখানে বিভেদকামী শক্তি দাঁত ফোটাতে পারবে না। মুর্শিদাবাদ মীরজাফরদের ক্ষমা করেনি আর করবেও না।"
আরও পড়ুন অধিকারীদের ডানা ছাঁটল তৃণমূল, পূর্ব মেদিনীপুরে দলের যুব সভাপতি পদে অখিল গিরির ছেলে
বিজেপি এনআরসি-সিএএ জুজু দেখিয়ে ভোট চাইছে বলে তোপ দাগেন ফিরহাদ। বলেন, "যাঁরা আম্বানি-আদানিকে দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে তাঁরা এখন বাংলায় গণতন্ত্রের কথা বলছে। বিজেপি-মিমকে একটাও ভোট নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিতিয়ে হ্যাটট্রিক করাতে হবে।"