বিধানসভায় শোচনীয় পরাজয়। উপনির্বাচনেও ফলাফল হতাশজনক। এই প্রেক্ষাপটে রাজ্য বিজেপির সংগঠনে ব্যাপক রদবদলের দাবি উঠছিল দলের অন্দর থেকেই। শেষ পর্যন্ত কলকাতা পুরভোটে ভরাডুবির পর সংগঠনের শীর্ষ পদে ব্যাপক বদল করল বঙ্গ বিজেপি। বাদ পড়লেন 'আদি' বিজেপির শীর্ষ নেতারা। কমিটি গঠনে প্রাধান্য পেলেন অপেক্ষাকৃত তরুণ মুখরা।
বুধবার রাজ্য বিজেপির তরফে যে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে রয়েছেন ১১ জন সহসভাপতি। ৫ জন সাধারণ সম্পাদক। সম্পাদকের সংখ্যা ১২ জন। সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বাদ পড়েছেন দলের দীর্ঘ দিনের নেতা সায়ন্তন বসু। রাজ্য কমিটিতে বাতিলের তালিকায় প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরীও। সঞ্জয় সিংকে রাজ্য সম্পাদক পদ থেকে সরালেও সহ সভাপতি করা হয়েছে। তবে, সাধারণ সম্পাদক পদে আনা হয়েছে এতদিন দলের রাজ্য যুবমোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁকে। রয়েছেন রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। এই পদেই রয়েছেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, বিধায়ক দীপক বর্মন, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় (গত বিধানসভা নির্বাচনে সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন তিনি)।
সহসভাপতি করা হয়েছে যে ১১ জনকে তাঁরা হলেন, সাংসদ জগন্নাথ সরকার, অর্জুন সিং, খগেন মুর্মু, জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর। রয়েছেন সঞ্জয় সিং, শ্যামাপদ মণ্ডল, রথীন বসু, অনিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণ বৈদ্য, সমীর দাস ও মধুছন্দা কর।
রাজ্য বিজেরির সচিব পদে রাখা হয়েছে, বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, গোপাল সাহা, গৌরীশঙ্কর ঘোষ, অশোক দিন্দা, বিমান ঘোষ, লক্ষ্ণ ঘড়ুই। রয়েছেন, ফাল্গুনী পাত্র, প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল, নবারুণ নায়েক, সোনালী মুর্মু, দীপাঞ্জন গুহ, উমেশ রাই, অশীস বাপত, প্রবীণ আহারওয়াল, প্রণয় রায়, প্রত্যুষ মণ্ডল।
অগ্নিমিত্রা পালের বদলে রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তনুজা চক্রবর্তীকে। সৌমিত্র খাঁয়ের বদলে যুব মোর্চার দায়িত্বে ডাঃ ইন্দ্রনীল খান। একুশের ভোট কসবা থেকে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন তিনি। বিভিন্ন আলোচনাতেও দেখ গিয়েছে তাঁকে। এসটি-এসসি মোর্চার প্রধানের দায়িত্বে বিধায়ক জোয়েল মুর্মু ও ডঃ সুদীপ দাস। ওবিসি মোর্চা সামলাবেন অজিত দাস। কিষাণ মোর্চার প্রধানের পদে মহাদেব সরকার। কৃষকদের দাবিদাওয়ার প্রতি অনমনীয় মমতা সরকার, এই অভিযোগে দিন কয়েক আগেই সিঙ্গুরে তিন দিনের ধর্না আন্দোলন করেছে বিজেপি। তাতে মুখ্য ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল মহাদেব সরকারকে। সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি পদে রয়েছেন চার্লস নন্দী।
দলের রাজ্য কমিটির মুখ্য মুখপাত্র থাকছেন শমীক ভট্টাচার্য। এছাড়া এই পদে থাকছেন জয়প্রকাশ মজুমদার। মিডিয়ার ইনচার্জ করা হয়েছে প্রাক্তন যুব সভাপতি তুষার কান্তি ঘোষকে। এতদিন ইনচার্জ ছিলেন সপ্তর্ষি চৌধুরী। তাঁকে এবার কো- ইনচার্জ করা হল।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি থেকে সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে বদল এল। কিন্তু এতেই কী গেরুয়া শিবিরের সংগঠন চাঙ্গা হবে? সময়ের গর্ভে লুকিয়ে এই প্রশ্নের জবাব।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন