প্রথম দফার ভোটের আগে আজই প্রচারের শেষবেলা। এদিন দক্ষিণবঙ্গ ও জঙ্গলমহল মিলিয়ে মোট ২৬টি জনসভা করার কথা তৃণমূল-বিজেপির। সেই সভাগুলোর মধ্যে নজরকাড়া নন্দীগ্রাম আর নামখানায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উপস্থিতি। বিজেপির তারকা প্রচারকের তালিকায় একদম উপরের সারিতে নাম ছিল এই মুখ্যমন্ত্রীর। তাই প্রচারের স্লগ ওভারে যোগীর আক্রমণকে কাজে লাগাতে চাইল বিজেপি। এমনটাই গেরুয়া শিবির সুত্রে খবর।
নামখানায় এদিন যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘''বছরের পর বছর ধরে ভ্রষ্টাচার করছে টিএমসি। সবাই জানে, টিএমসির গুন্ডরা কী করছে। বিজেপি কর্মীদের নির্মম হত্যা হচ্ছে। ৪০ দিন সময় আছে আর। ৩৫ দিনের পর টিএমমসি খারাপ সময় শুরু হবে। খুঁজে খুঁজে টিএমসির গুন্ডাদের সাজা দেব। বাংলা সম্প্রীতির রাজ্য ছিল একটা সময়। মাথা পিছু বাংলায় আয় ছিল সবথেকে বেশি। কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল সব শেষ করেছে। তৃণমূলের আমলে সবাই চাকরি হারিয়েছে। দশ বছরে কজনকে বাড়ি দিয়েছে মমতা দিদি। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছে বহু মানুষ। ২ কোটি ৪২ লাখ কৃষক ছয় হাজার টাকা করে পেয়েছে। কিন্তু বাংলার কৃষকরা কেন পায় না। মমতাদি জবাব দাও।''
এদিন বাংলার মাটি, বাংলার জল থিওরি প্রয়োগ করেন তিনি। ভারতের একদা সাংস্কৃতিক পীঠস্থান বাংলা। দেশের দুঃসময়ে বাংলাই ভারতকে পথ দেখিয়েছে। যোগীর মুখে নিয়মমাফিক সেসব কথাই শোনা গেল এদিন। আর সেই একই হিন্দুত্বের কার্ড। তিনি আবার মনে করালেন, চৈতন্য মহাপ্রভু বাংলজুড়ে সনাতন ধর্মের প্রচার করতে কী কী করেছিলেন! বাংলার মাটিতেই জাতীয় সঙ্গীতের জন্ম। বাংলার, রবীন্দ্রনাথ, স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব ফিরে এলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন বিজেপির সোনার বাংলা কর্মসূচির কথা মনে করিয়ে যোগী আরও বললেন, ''বিকাশে কোনও রুচি নেই মমতার। হাইওয়ে, রেলপথ, কিছুই চাইছেন না দিনি। শ্রীরামের নাম শুনলে রেগে যাচ্ছেন। রামের জয়জয়কার আটকালে জনতা সেই সরকারকে সরাবে। উত্তরপ্রদেশেও তাই হয়েছে। এখন গেরুয়া কাপড় দেখলেই ভয় পাচ্ছে দিদি।''
এদিন নামখানার পাশাপাশি নন্দীগ্রামেও জনসভা করেন মোদী-শাহের এই নয়নের মণি। এদিন সকালেই বাংলায় পা রাখার কথা নিজেই ট্যুইট করে জানিয়েছেন আদিত্যনাথ। আদিত্যনাথ ট্যুইটারে লিখেছেন, "বিপ্লবের ধারক-বাহক বাংলা। আজ পরিবারতন্ত্র, স্বৈরাচার এবং দুর্নীতি থেকে মুক্তি চাইছে। বিজেপি এই অনুভবের সঙ্গে আছে। এই আবেগই আজ আমায় আরও একবার বাংলার ভাই-বোনেদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। আজ বেশ কয়েকটি জনসভা থেকে আমি তাদের সঙ্গে কথা বলব।"
আদিত্যনাথ এর প্রথম সভা সাগরে। সেখান থেকে তিনি পৌঁছন চন্দ্রকোনা। শেষ সভা নন্দীগ্রামের তেখালি বাজার ময়দান। পয়লা এপ্রিল এখানেই লড়াই শুভেন্দু বনাম মমতার।
রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ আদিত্যনাথকে নন্দীগ্রামের নিয়ে যাওয়ার সবথেকে বড় কারণ হিন্দু ভোটকে এক জায়গায় করা। শুভেন্দু নিজের মুখেই বারংবার দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি নন্দীগ্রামের প্রার্থী হয়েছেন সংখ্যালঘু ভোটে ভরসা করে।
রাজ্য জুড়ে এর পাল্টা বিজেপি চাইবে সংখ্যাগুরুর ভোটকে একজোট করতে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।