ব্রিগেডের জনসভা থেকে রবিবার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার রাজ্যের প্রথম দুই দফা ভোটের প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করেছে বিজেপি। জল্পনা সত্যি করে নন্দীগ্রামে সেই মমতা বনাম শুভেন্দু। ঠিক তারপর দিন ব্রিগেড মঞ্চ থেকে কী বার্তা দেন প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী উৎসাহ ছিল গেরুয়া শিবিরে। তাদের হতাশ না করে এদিন শুভেন্দু বলেন, ‘নন্দীগ্রামে মাননীয়াকে আমি হারবই, হারাবই, হারাবই। ওই মাটি আমার চেনা। ২০ বছর কাজ করেছি। নন্দীগ্রাম বুথে ভোট দেব। আমি ওখানকার ভোটার। টিভিতে দেখতে হবে আপনাকে। নন্দীগ্রামে আপনি হারবেন। আপনাকে প্রাক্তন বিধায়কের পোস্টার ছাপিয়ে রাখতে হবে’
তৃণমূলের ভোট প্রচারের অস্ত্র বাংলার মেয়ে স্লোগানকে এদিন আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারি। তিনি বলেন,’মাননীয়া বুদ্ধি কিনেছেন ৫০০ কোটি টাকা দিয়ে। প্রথমে তারা ‘দিদিকে বলো’ চালু করল। তার পর বিমানবন্দর থেকে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ পোস্টারে ঢেকে দিল। কেন বিদ্যাসাগর, নেতাজি, রবীন্দ্রনাথ, শ্রী চৈতন্য, গুরুচাঁদ ঠাকুর, অনুকুল ঠাকুর বাংলার গর্ব হতে পারেন না? বিবেকানন্দও হারিয়ে গেল। ‘দিদির দূত’ নিয়ে ঘুরে বেড়াল তোলাবাজ ভাইপো। এখন বলছেন ‘বাংলার মেয়ে’। আপনাকে বাংলার মানুষ ঘরের মেয়ে মনে করেন না। আপনি বাংলাদেশি, রোহিঙ্গাদের ফুফা’।
তাঁর দাবি, ‘চিটফান্ড কাণ্ডে ৩ কোটি মানুষ টাকা হারিয়েছেন। সেই বঞ্চনার জবাব দিন পদ্মে ছাপ দিয়ে। বিজেপিই আপনাদের দুঃখ ঘোচাতে পারে। বিজেপি প্রতারিতদের টাকা ফিরিয়ে দেবে। বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটকেও এদিন কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শুভেন্দু। এই বিজেপি নেতা সেই জোটকে ‘হ-য-ব-র-ল’ কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘সিপিএম কংগ্রেসকে ভোট দিতে বলছেন এক পীরসাহেব। আজ এখানে যাঁদের দেখছেন তাঁরা সকলেই নির্বাচনী প্রতিনিধি। তৃণমূল-সিপিএম-কংগ্রেস এখনও তুষ্টিকরণের রাজনীতি করছে। বাংলায় তৃণমূল ফিরে এলে বাংলা কাশ্মীরে পরিণত হবে। কাশ্মীরের পণ্ডিতদের মতোই অবস্থা হবে আমাদের।‘
মিঠুন চক্রবর্তীর বিজেপিতে যোগদান প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘বাংলার আগামী প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাক, কৃতী মানুষ হিসেবে তা চান না মিঠুনদা। তাই আজ এখানে ছুটে এসেছেন তিনি।‘ কাটমানি, সিন্ডিকেট রাজত্ব এবং তোলাবাজির জন্যই আজ পিছিয়ে বাংলা। এ সব উপড়ে ফেলতে না পারলে বাংলা আরও পিছিয়ে যাব। তৃণমূলে ২১ বছর ছিলাম। এখন আর তৃণমূল কোনও দল নয়, বরং প্রাইভেট কোম্পানি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর তোলাবাজ ভাইপোই তার হর্তাকর্তা। তৃণমূলে মমতা ছাড়া বাকি সবাই ল্যাম্পপোস্ট। এভাবেও ব্রিগেড মঞ্চ থেকে আক্রমণ ছুঁড়ে দেন শুভেন্দু অধিকারী।