সিএএ নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক। বিজেপি বিরোধী দল পরিচালিত রাজ্য সরকারগুলি নয়া আইন লাগুর বিপক্ষে মত দিয়েছে। কিন্তু, কংগ্রেস নেতা, সাংসদ তথা আইনজীবী কপিল সিবালের মুখে ভিন্ন সুর। তাঁর কথায়, 'কোনও রাজ্য সরকার যদি বলে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন লাগু করবে না তবে তা অসাংবিধানিক হবে।' তাঁর মতে এনপিআর না করলে বোঝা যাবে না কে দেশের নাগরিক আর কে নয়। তাই কোনও রাজ্য কেন্দ্রের অসহযোগিতা করলেই এনপিআর কার্যকর রদ করা সম্ভব। ফলে সিএএ বাস্তবায়িত হওয়াও বেশ অসম্ভব। কিন্তু, সংসদে পাস হওয়া আইন কোনও রাজ্যই বলতে পারবে না যে লাঘু করা হবে না।
সিএএ বাতিলের দাবিতে সরব কংগ্রেস। নতুন আইন বাতিল করতে বিধানসভায় প্রস্তাব পাস করেছে কংগ্রেস পরিচালিত পাঞ্জাব। বাংলা ও কেরালা সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়েছে রাজ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন লাগু করবে না। তারই মাঝে কেরালায় সিবালের বক্তব্য সিএএ বিতর্কে নয়া মাত্রা যোগ করল।
আরও পড়ুন: ভিনদেশী কালো টাকার কারবারিদের নাগরিকত্ব দিতেই সিএএ: মমতা
ঠিক কী বলেছেন কপিল সিবাল?
কেরালার বাম সরকার বিধানসবায় সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাস করেছে। নয়া আইনকে বাতিলের দাবিতে কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে। পাঞ্জাবে বিধানসভাতেও পাস হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্রস্তাবনা। ক্যাপটেন অমরিন্দর সিংও সিএএ বাতিলের দাবিতে কোর্টে যাওয়ার কথা বলেছেন। এই প্রসঙ্গে সানডে এক্সপ্রেসকে কোঝিকোড়ে সিবাল বলেন, 'সিএএ সংসদ অনুমোদিত আইন। কোনও রাজ্য যদি বলে এই আইন লাগু করবে না তবে তা সংবিধান বিরোধী। কেউ এই আইনের বিরোধিতা করতে পারে, বিধানসভায় প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে আইন বাতিল করার দাবি জানাতে পারে। কিন্তু, এই আইন সমস্যযুক্ত ও লাগু করলে অসুবিধা হবে বলে যদি লাগু করা না হয় তবে তা সংবিধান বিরোধী বলে গণ্য হবে।'
তাহলে কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীরা কি করে বলছেন সিএএ তাদের রাজ্যে লাগু করতে দেওয়া হবে না? এ বিষয়ে কপিল সিবাল বলেন, 'তাঁরা বলেছেন এনআরসি লাগু করবেন না। এনআরসি এনপিআরের মাধ্যমে কার্যকর হবে। তাঁরা বলতে চেয়েছেন, কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন না। তাঁরা একবারও বলেননি দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব কোনও আইনই নেই।'
সিবালের ব্যাখ্যা, এনআরসি-এনপিআর ব্যাতীত সিএএ-কার্যকর কার্যত আসম্ভব। কে বৈধ নাগরিক আর কে নয়, তা এনপিআর ও এনআরসি ছাড়া জানা যাবে না। এগুলিতে রাজ্য সরকারের কর্মীদেরই কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে রাজ্যগুলি বলতেই পারে তারা কেন্দ্রকে সহায়তা করবে না। কিন্তু, বলতে পারে না যে কেন্দ্রীয় কোনও আইন তারা রাজ্যে লাগুই করবে না। তাঁর কথায়, 'এনপিআর না করা পর্যন্ত আপনি কীভাবে সিএএ বাস্তবায়ন করবেন? নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইনটি কেবল একটি আইন। কীভাবে সেই আইন কার্যকর করা যায়? কে নাগরিক এবং কে নাগরিক নয় তা আগে নির্ধারণ করতে হবে। কীভাবে তা করা হবে? এনপিআরের মাধ্যমে। কীভাবে এনপিআর বাস্তবায়িত হবে? স্থানীয় রেজিস্ট্রারকে প্রতিটি এলাকার জন্য কর্মী নিয়োগ করতে হবে, যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসার মাধ্যমে গণনা চালাবেন। এই প্রক্রিয়া রাজ্য সরকারকেই করতে হবে, এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে যে রাজ্য এই বিষয়ে কেন্দ্রকে সহযোগিতা করবে না।'
Read the full story in English