মর্যাদার লড়াই, তারুণ্যের আগ্রাসন বধে অভিজ্ঞতায় ভরসা নেত্রীর

নন্দীগ্রাম আন্দোলনের দুই কান্ডারী প্রতিপক্ষ। একজন প্রার্থী হবেন বলে নিজে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করে দিয়েছেন। অন্যজন যে বিজেপির মুখ তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

নন্দীগ্রাম আন্দোলনের দুই কান্ডারী প্রতিপক্ষ। একজন প্রার্থী হবেন বলে নিজে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করে দিয়েছেন। অন্যজন যে বিজেপির মুখ তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update

২০২১ রাজ্যে পরিবর্তনের নির্বাচনের পর এবারও রাজনৈতিক লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে নন্দীগ্রাম। সেই সময় রক্তাক্ত নন্দীগ্রামের বিপ্লবের ফসল তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের দুই কান্ডারী এখন একে অপরের বিপক্ষে। একজন প্রার্থী হবেন বলে নিজে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করে দিয়েছেন। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যজনের নাম এখনও ঘোষণা হয়নি। তবে নন্দীগ্রামের বিজেপির তিনিই যে মুখ তা নিয়ে সন্দেহ নেই। সেই নন্দীগ্রামের জয়ের ভিত মজবুত করতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছেন বর্ষীয়াণ তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। যারা হাত ধরেই ১৯৮৪ সালে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরাজিত করেছিলেন ডাকাবুকো আইনজীবী সিপিএম প্রার্থী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে।

Advertisment

কেন ভরসা করলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে? তৃণমূল কংগ্রেসে সাংগঠনিকভাবে তেমন কোনও দায়িত্বে নেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়। একসময় আইএনটিটিইউসির নেতৃত্বে ছিলেন। এখন সেই পদেও নেই। তাছাড়া সেভাবে জেলাওয়ারী পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব খুব একটা তাঁকে সামলাতে হয়নি। ইস্যু ভিত্তিক লড়াইয়ের ক্ষেত্রেও সেভাবে সামনের সারিতে থাকতে দেখা যায় না। সেখানে অন্যদের ভিড় করতে দেখা যায়। তিনিই এবার মুখ্যমন্ত্রীর আসনের সার্ভে করবেন। তৃণমূল ভবনে দলের পর্যায়ক্রমে সাংবাদিক বৈঠকে সুব্রতবাবু হাজির থাকেন। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরেই সংসদীয় রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী। ক্ষমতায় থেকেও জীবনের কঠিন লড়াইয়ের ক্ষেত্রেও ভরসা করলেন প্রবীণ এই রাজনীতিককেই।

সুব্রত মুখোপাধ্যায় নিজেই এদিন জানিয়েছেন, তিনি নন্দীগ্রামে যাবেন। সেখানে তিনি দিন থাকবেন। মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। অভাব-অভিযোগ শুনবেন। মোদ্দা কথায় তাঁকে নন্দীগ্রামের সার্ভে করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাজনীতির অভিজ্ঞতায় এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেসে সব থেকে বেশি নম্বর পেতে পারেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ৭০ দশকে ছাত্র রাজনীতি থেকে ওঠা সুব্রতবাবু রাজ্য-রাজনীতির ওঠানামা দেখেছেন। অল্প বয়সে বিধায়ক হয়েছেন, রাজ্যের মন্ত্রীত্ব সামলেছেন। তিনি আইএনটিইউসির রাজ্য সভাপতি ছিলেন, অথচ ছিলেন কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়রের পদেও। অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর। রাজনৈতিক মহলে মতে, অভিজ্ঞতায় ভরপুর এই রাজনৈতিক নেতা অনেক হিসেব ওলট-পালট করতে পারেন ঠান্ডা মাথায়। ২০১১-তে নন্দীগ্রামে ভোটের লড়াই ছিল বিরোধী হিসেবে, এবার তৃণমূলের প্রার্থী খোদ মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisment

নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ধর্মীয় মেরুকরণের পথে হেঁটেছেন। একেবারে সংখ্যাতত্বের বিশ্লেষণ করেছেন। তবে অন্য ভোটেও সিঁদ কাটবেন বলে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন শুভেন্দু। শেষমেশ তৃণমূল নেত্রী অভিজ্ঞতার ওপর ভরসা রাখলেন। অভিজ্ঞ মহলের মতে, তৃণমূলের একাংশের বডি ল্যাঙ্গুয়েজের থেকে ঢের আলাদা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মেলামেশা। ফোন তিনি নিজেই ধরেন, শোনা যায় জেলা নেতৃত্বের অনেকের ফোন ধরার অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকে। যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, মনে রাখতে হবে ২০১৯-এ বাঁকুড়া লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক মার্জিনে পরাজিত হয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

ন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc Mamata Banerjee nandigram Subrata Mukherjee