Advertisment

Exclusive: 'তালিবানি আদর্শে বিশ্বাসী তৃণমূল, হিংস্র শ্বাপদের সঙ্গে লড়াই', দায়িত্ব নিয়েই বিস্ফোরক সুকান্ত মজুমদার

সংগঠন থেকে বাংলা ভাগ, কী মত নয়া রাজ্য বিজেপি সভাপতির? অকপটে জানালেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Sukanta Majumder new west bengal bjp president exclusive interview

প্রধানমন্ত্রীর মোদীর সঙ্গে সুকান্ত মজুমদার।

বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির লক্ষ্য ছিল ২০০ আসন। গেরুয়া শিবিরের জুটেছে ৭৭টি আসন। তৃণমূল বিপুল ভাবে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পরই বঙ্গ বিজেপির কোন্দল একেবারে প্রকাশ্য চলে আসে। বিধানসভা নির্বাচনের ফল বের হওয়ার পর বিজেপির বুথ স্তরের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ ছিল, তাঁদের ওপর হামলার সময় দলীয় নেতৃত্বের কোনও সাহায্য পাননি। সর্বভারতীয় সহসভাপতি তথা কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দেন। তারপর একে একে চার বিধায়ক ঘাসফুল শিবিরে ভিড় জমিয়েছেন। সাংসদ সুনীল মণ্ডল ঘরে ফিরে গিয়েছেন। প্রাক্তন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বহু বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যাওয়ার জন্য লাইন দিয়েছেন বলে ঘাসফুল শিবির দাবি করে চলেছে। এই অবস্থায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে দল সভাপতি করেছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সুকান্ত মজুমদার স্পষ্ট জানালেন, বুথ কর্মীরাই তাঁদের দলের শক্তি। যদি কোনও বুথ কর্মী নেতৃত্বের কাছে সাহায্য না পেয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী বলেও জানিয়ে দিলেন।

Advertisment

প্রশ্ন: বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ফল আশানুরূপ না হওয়ায় অনেকেই দল ছেড়েছেন। এখনও ছাড়ছেন। সবাই তৃণমূলে গিয়ে যোগ দিচ্ছেন। বাবুল সুপ্রিয়ও চলে গেলেন। নতুন সভাপতি হয়ে কীভাবে সামলাবেন?

সুকান্ত মজুমদার: ভারতীয় জনতা পার্টির আসল সম্পদ হচ্ছে তার বুথে লড়াই করা কর্মীরা। যাঁরা ভারতীয় জনতা পার্টির নীতি, আদর্শকে বুকে নিয়ে পদ্মফুলকে হাতিয়ার করে লড়াই করেছে এবং আগামিদিনেও করবে। নেতৃত্বের প্রয়োজন হয় মুখ করার জন্য বা সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদের মূল শক্তি হচ্ছে আমাদের কর্মীরা। তাঁরা বিজেপির সঙ্গে আছেন, দলের আদর্শ মেনে নিয়ে চলছেন। আগামিদিনেও বিজেপির সঙ্গে থাকবেন। যাঁরা চলে গিয়েছেন তাঁরা থাকলে ভাল হত, একসঙ্গে লড়াই করতাম।

প্রশ্ন: বুথ কর্মীদের একাংশের অভিযোগ ছিল বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর তাঁরা হামলার শিকার হলেও নেতৃত্বকে ফোনে পায়নি। তাঁদের পাশে পায়নি। কি বলবেন?

সুকান্ত মজুমদার: যদি সত্যি এমন হয়ে থাকে যেহেতু আমি দলের সভাপতি প্রত্যেকটি বুথ কর্মীর কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কারণ তাঁরাই দলের সম্পদ। তাঁরাই লড়াই করে দলকে এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন। আমরা ওপরে নেতৃত্ব দিই শুধু। আসল লড়াই তাঁরা মাটিতে করে। তাঁদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি আশা করি আগামিদিনে তাঁরা পার্টির হাল ধরবেন। পার্টিকে আরও শক্তিশালী করবেন। পার্টিকে রক্ষা করবেন।

প্রশ্ন: রাজ্য বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস দলীয় কর্মীদের ওপর লাগাতার অত্যাচার করে আসছে। কীভাবে লড়াই করবেন?

সুকান্ত মজুমদার: তৃণমূল তো এমন একটি দল তালিবানি আদর্শে বিশ্বাস করে। আমরা জানি যে কাদের  সঙ্গে লড়াই। হিংস্র শ্বাপদের সঙ্গে আমাদের লড়াই। আমরা সেইভাবে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হব।
 
প্রশ্ন: এখনও বিধায়করা একে একে দল ছেড়ে তৃণমূলে চলে যাচ্ছেন……

সুকান্ত মজুমদার: আমার মনে হয় যাঁরা ভারতীয় জনতা পার্টির আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিধায়ক হয়েছেন তাঁরা কেউ যাবেন না। যাঁরা গিয়েছেন আমরা তাঁদের সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। বিধায়ক সাংসদ একটি পদ মাত্র, রাজ্য সভাপতির মতো। যা ক্ষণস্থায়ী, যা আজ আছে কাল থাকবে না। কর্মীরা আসল শক্তি। তাঁরা বুথে থাকবেন। বুথে থেকে লড়াই করবেন।

প্রশ্ন: ভোটের ফলপ্রকাশের পর বঙ্গ বিজেপির কাদা ছোড়াছুড়ি একেবারে প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। দলের অন্তর্কলহ মেটাবেন কী করে?

সুকান্ত মজুমদার: আশা করি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এটা একটা সংসার। সেই সংসারে থাকলে এরকম হয়। আশা করি ঠিক হয়ে যাবে।

প্রশ্ন: দক্ষিণবঙ্গে বিজেপির সংগঠন তুলনামূলক ভাবে দুর্বল। সেখানে সংগঠন মজবুত করতে কোনও পরিকল্পনা?

সুকান্ত মজুমদার: আলাদা করে স্ট্র্যাটেজি করে সামলাতে হবে।

প্রশ্ন: দলে নতুন কমিটি কবে হবে?

সুকান্ত মজুমদার: দলের নিয়ম অনুসারে সমস্ত কিছু হবে। কোনও অসুবিধা হবে না। সবার সঙ্গে আলোচনা করে, সবার মতামত নিয়ে করা হবে। 

প্রশ্ন: পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন বিজেপি সাংসদ, বিধায়ক। তৃণমূল বলছে বিজেপি বাংলা ভাগের পক্ষে। আপনার কী প্রতিক্রিয়া?

সুকান্ত মজুমদার: দলের নীতি একটাই। বিজেপি অখণ্ড বাংলার পক্ষে। আমিও তার পক্ষেই। আর আমাকে সমগ্র বাংলার বিজেপি সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম- এভাবে দেখলে চলবে না। ভাবতেও চাইছি না।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

bjp west bengal politics Sukanta Majumder
Advertisment