Advertisment

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক, তারপরই রাজ্যের নিরাপত্তা ফেরালেন সুনীল-বিশ্বজিৎ

এই সাক্ষাৎ ঘিরে প্রকাশ্যে বিজেপি দোষের কিছু না দেখলেও আদতে ভিতরে ভিতরে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে শুরু করেছেন গেরুয়া নেতৃত্ব।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

চূড়ান্ত চমক। বঙ্গ রাজনীতির স্রোতের বিপরীমুখী ছবি ধড়া পড়ল ষোড়শ বিধানসভার শেষ দিনে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন নোয়াপাড়া এবং বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক। শুধু সাক্ষাতই নয়, মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রাণামটাও সেরেছেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। আপাতত সৌজন্যের এই ঘটনা ঘিরেই আপাতত বাংলার রাজনীতে চর্চা তুঙ্গে। কারণ সুনীল সিং ও বিশ্বজিৎ দাস খাতায়-কলমে তৃণমূলের বিধায়ক হলেও আদতে দলবদলে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। প্রতিদ্বন্দ্বি শিবিরের এই দু'জনের কেন হঠাৎ বিধানসভার শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার প্রয়োজন হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাহলে কী ঘরওয়াপসির পথে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে ঠাই নেওয়া সুনীল ও বিশ্বজিৎ?

Advertisment

আর এতেই অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপির। এই সাক্ষাৎ ঘিরে প্রকাশ্যে গেরুয়া নেতৃত্ব যাই বলুন না কেন দুই বিধায়ককে দলে রাখতে তড়িঘড়ি মরিয়া পদক্ষেপ করেছেন বিজেপির এ রাজ্যের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়। ইতিমধ্যেই নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিং ও বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের সঙ্গে একপ্রস্থ 'ক্লোজ-ডোর' বৈঠক সেরেছেন কৈলাস-মুকুল। তবে, ঠিক কী বিষয় আলোচনা হয়েছে তা খোলসা করেননি এই তিন নেতা। কিন্তু বৈঠকে সুফল মিলেছে বলে দাবি বিজেপির। মঙ্গলবার সুনীল ও বিশ্বজিৎকে রাজ্য নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানালেও তাঁরা তা ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আপাতত তাঁরা বিজেপিতেই রয়েছে বলে দাবি দুই বিধায়কের।

বিজেপি রাজ্য সভাপতির দিলীপ ঘোষের দাবি, দলের সঙ্গে আলোচনা করেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দুই বিধায়ক সাক্ষাৎ করেছেন। কিন্তু, ডাকসাইটে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের মন্তব্যে সুনীল ও বিশ্বজিতের দল বদলের ইঙ্গিত যেন স্পষ্ট। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ বলেছেন, 'ওখানে আমার ছেলেও আছে। ও কী গিয়েছিল? ছেলেতো বিধায়ক। ও তো যায়নি।' এরপরই নিজের আত্মীয় বিধায়ক সুনীল সিং সম্পর্কে অর্জুন সিং বলেন, 'রিলেটিভ কে কার হয়। ওসব ফালতু কথা। এখন বলব না। ও জয়েন করুক তারপর বলব।'

সোমবারের ঘটনায় ভোটের আগে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা বাড়লেও দুই তৃণমূল ত্যাগী বিধায়ক বা জোড়া-ফুল শিবির দলবদলের বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়েছেন। বিজেপিতে ঠাঁই নেওয়া সুনীল-বিশ্বজিতের দাবি, বিধায়ক তহবিলের বরাদ্দ খরচ নিয়ে কথা বলতেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁরা সাক্ষাৎ করেছেন। এর সঙ্গে দল বদলের কোনও সম্পর্ক নেই। একই দাবি শাক দলের বিধায়ক ও উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূলের কোওর্ডিনেটর পার্থ ভৌমিকের।

মন্ত্রিত্ব ও ঘাস-ফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরের নাম লিখিয়েছেন শুভেন্দু অধিকার, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। একই পথ অনুসরণ করেছেন প্রবীর ঘোষাল, বৈশালী ডালমিয়া সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল বিধায়ক। এই বদলই এখন দস্তুর বলে দাবি গেরুয়া বাহিনীর। কিন্তু, উল্টো ছবিও ধড়া পড়ছে। ইতিমধ্যেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরেছেন মুকুল রায়ের আত্মীয় সৃজন রায়। শাসক দলের পতাকা ধরছেন টলিউড-টেলিবিউডের একাধিক জনপ্রিয় মুখ। দলবদলের এই ভরা বাজারে তাই কোনও মতেই অস্বস্তি বাড়াতে রাজি নয় বিজেপি। তাই দুই বিধায়কের ঘরওয়াপসির ইঙ্গিত মিলতেই চটজলদি পদক্ষেপের পথে হাঁটলো গেরুয়া নেতৃত্ব।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc bjp mukul roy Kailash Vijayvargiya
Advertisment