মুসলিমদের আবার ওবিসি কী! মুসলিমদের তো কোনও ভেদাভেদ নেই। যত আছে হিন্দুধর্মে। তাই ওবিসি কোটার যাবতীয় সুযোগ হিন্দুরাই পাবে। এই ভঙ্গিতেই কর্ণাটকে মুসলিমদের জন্য বরাদ্দ ৪% শতাংশ ওবিসি কোটা তুলে দিয়েছিল বিজেপির বাসভরাজ বোম্মাইয়ের সরকার। যার বিরুদ্ধে আদালতের কড়া নেড়েছিল বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন। তার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার পর্যবেক্ষণে বোম্মাই সরকারকে বাছা বাছা বিশেষণে ভরিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
শীর্ষ আদালতের মত, বোম্মাই সরকার একটা 'নড়বড়ে' আর 'ত্রুটিপূর্ণ' সিদ্ধান্ত নিয়েছে 'সম্পূর্ণ ভুল ধারণার' ওপর ভিত্তি করে। তার মধ্যে আবার বিজেপির ভোটব্যাংক পোক্ত করতে কর্ণাটকের প্রভাবশালী ভোক্কালিগা আর লিঙ্গায়েতদের জন্য ২% করে সংরক্ষণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বোম্মাই সরকার। ওবিসি মুসলিমের জন্য যে কোটা বাদ দিয়েছিল, সেই জায়গায় সমানভাগে ভোক্কালিগা ও লিঙ্গায়েতদের সংরক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সিদ্ধান্তের প্রয়োগ এখন সুপ্রিম কোর্টে বিবেচনাধীন থাকায় বিশ বাঁও জলে।
সুপ্রিম কোর্ট মামলার পরবর্তী শুনানি ১৮ এপ্রিল ধার্য করেছে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসিমহা ও বিচারপতি জেবি পাদরিওয়ালার বেঞ্চে মুসলিম সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিত্ব করছেন আইনজীবী কপিল সিবাল। গত ৩০ মার্চ, মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোম্মাইয়ের নেতৃত্বাধীন সরকার মন্ত্রিসভা দ্বারা মুসলিমদের জন্য ৪ শতাংশ অনগ্রসর শ্রেণির কোটা বাতিল করার সিদ্ধান্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে।
আরও পড়ুন- আতিকের ছেলের এনকাউন্টারে যোগী যোগ? এসটিএফের প্রশংসায় আদিত্যনাথ
শুধু ভোক্কালিগা আর লিঙ্গায়েতদের সন্তুষ্ট করাই নয়। কর্ণাটক সরকার গত ২৪ মার্চ, তপশিলি জাতি বা এসসি কোটার মধ্যেও তপশিলি জাতির একাংশদের জন্য বিশেষ কোটা বা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১২ থেকে এই দাবিতে কিছু প্রভাবশালী তপশিলি জাতিগোষ্ঠী সরব। এর আগে কর্ণাটকে বিজেপি, কংগ্রেস এবং জেডিএস সরকার কুর্সিতে বসেছে। কিন্তু, তারা তপশিলি জাতিগোষ্ঠীর এই দাবিগুলো এড়িয়ে গিয়েছে। কারণ, অন্যান্য তপশিলি জাতিগুলো তাতে ক্ষুব্ধ হতে পারে।
কিন্তু, ভোটব্যাংকের রাজনীতিতে কর্ণাটকে এবার বিজেপির অবস্থান বেশ নড়বড়ে। তার প্রেক্ষিতে বিক্ষোভকারী তপশিলি জাতিগোষ্ঠীগুলোর দাবি মেনে নিয়েছে বোম্মাই সরকার। ১০ মে নির্বাচন ঘোষণা করেছেন কমিশন। তার ঠিক আগে এই সব সিদ্ধান্তগুলো সরকার ঘোষণা করে দিয়েছে। ফলে, মামলার মুখে না-পড়লে, এই সব সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর করার ব্যাপারে সরকারের কোনও অসুবিধা নেই।