সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বড়সড় স্বস্তিতে গুজরাতের কংগ্রসে নেতা হার্দিক পটেল। পতিদার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি দাঙ্গা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন হার্দিক। গুজরাতের আদালত এই মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। তবে নিম্ন আদালতের সেই রায়ের উপরেই এবার স্থগিতাদেশ সর্বোচ্চ আদালতের।
এদিন হার্দিকের মামলায় রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি এস আব্দুল নাজির এবং বিক্রম নাথের বেঞ্চ উল্লেখ করেছেন, ''সিনিয়র আইনজীবী মণিন্দর সিংয়ের কথা শুনে এবং গোটা পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের মনে হয়েছে, হাইকোর্টের বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়া স্থগিত করতে এটিই উপযুক্ত মামলা। আপিলের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এই দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিষয়টি স্থগিত থাকবে।"
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে গুজরাতের বিসনগরের দায়রা আদালত ২০১৫ সালের পতিদার কোটা আন্দোলনের সময় শহরে দাঙ্গা ও আগুন লাগানোর দায়ে হার্দিক পটেলকে দু'বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। গুজরাত হাইকোর্ট ২০১৮ সালের আগস্টে হার্দিককে জামিনে মুক্তি দেয়। পতিদার আন্দোলনের মুখ এবং যুবনেতা হার্দিক পটেল ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন।
হাইকোর্টের কাছে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সেই মামলায় স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন। কারণ দেশের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১-এর অধীনে কেউ দোষী সাব্যস্ত এবং কমপক্ষে কারও দু'বছরের কারাদণ্ড হলে তিনি আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।
যদিও ২০১৯-এর মার্চে গুজরাত হাইকোর্ট হার্দিক পটেলের আবেদন নাকচ করে দেয়। হাইকোর্ট তাঁর পর্যবেক্ষণে জানায়, হার্দিকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলা এবং ১৭টি এফআইআর নথিভুক্ত রয়েছে। এমনকী বিভিন্ন আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে বিচারাধীন একাধিক মামলাও রয়েছে। সেই সব দিক বিবেচনা করেই হার্দিকের আবেদন ফেরায় গুজরাত হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন- মমতার কর্মতীর্থ ভাঁওতা, বাংলায় ঘুঘুর বাসা ভাঙতে চায় আপ
মঙ্গলবার হার্দিক পটেলের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন সিনিয়র আইনজীবী মণিন্দর সিং। তিনি আদালতে জানান, হার্দিককে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দেওয়া তাঁর মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের লঙ্ঘনের সামিল। আইনজীবী সিং আরও বলেন, ''হার্দিক পটেল ইতিমধ্যেই ২০১৯-এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার একটি সুযোগ হারিয়েছেন। রাজ্য সরকার পটেলের বিরুদ্ধে পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে।''
অন্যদিকে, এদিন গুজরাত সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে বলেন, ''আদালতের সামনে এটা প্রশ্ন নয় যে পটেল নির্বাচনে লড়ছেন কিনা। ফৌজদারি আইনের ভিত্তিতে এই মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। ফৌজদারী আইনে কোনটি সঠিক তা বলার জন্য কোনও একটি আদর্শ নির্দেশিকা নেই। বিচারপতিরাই এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। পটেল ভোটে জয়ী হবেন কিনা সেটা এই মামলার সঙ্গে কোনওভাবে সম্পর্কিত নয়।''
এদিন সলিসিটর জেনারেল মেহতা হার্দিক পটেলের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩৯৫ (ডাকাতি)-এর অধীনে থাকা একটি অভিযোগের নথিও আদালতে জমা দিয়েছেন।
Read story in English