তাঁর খুড়তুতো ভাই অজিত পাওয়ার দল ভাঙার তিন মাস পরে মহারাষ্ট্রের পথে নেমেছেন জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)-র নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে। দলকে ফের আগের মত গুছিয়ে নিতে তিনি স্লোগান তুলেছেন, 'সেবা, সম্মান, আত্মাভিমান' এনসিপির ভিত্তি। একইসঙ্গে এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের কন্যা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন দিল্লিতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের দিকে। সুপ্রিয়া সুলের অভিযোগ, দিল্লি থেকে 'অদৃশ্য হাত' তাঁর দল এবং তাঁদের পরিবারকে ভাঙার খেলায় নেমেছে।
মহারাষ্ট্রজুড়ে সফর
মহারাষ্ট্রজুড়ে এনসিপির হয়ে প্রচারের জোয়ার তুলতে সুলে বিদর্ভ থেকে তাঁর সফর শুরু করেছেন। কারণ, সেখানে মহারাষ্ট্রের অন্যান্য অংশের তুলনায় দলের হাল দুর্বল। নাগপুরের দীক্ষাভূমিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি নাগপুরে দলের ভান্ডারা-গোন্ডিয়া শাখার পর্যালোচনা সভায় ইতিমধ্যে অংশ নিয়েছেন। কারণ, অজিত পাওয়ারের শিবিরে যোগদানকারী রাজ্যসভার সাংসদ প্রফুল প্যাটেল এই ভান্ডারা-গোন্ডিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা।
আত্মবিশ্বাসী সুপ্রিয়া
সুলে তাঁর বাবা শরদ পাওয়ার ও ভাইপো রোহিত পাওয়ারের পরে পাওয়ার বংশের তৃতীয় নেতা, যিনি দল ভাঙার পরে এনসিপি পুনর্গঠনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই ব্যাপারে নাগপুরে এক সাংবাদিক বৈঠকে সুপ্রিয়া সুলে বলেন, 'আমি প্রতিবছর নাগপুর এবং ওয়ার্ধায় আসি। আমাদের পাওয়ার পরিবারের সঙ্গে এখানকার বাসিন্দাদের ছয় দশকেরও বেশি সময়ের মানসিক সম্পর্ক। তবে, এবার আসার বিশেষ উদ্দেশ্য আছে। অনেক সংগঠনই সমস্যার সম্মুখীন হয়। যেমন, বর্তমানে আমাদের সংগঠন মুখোমুখি হচ্ছে। আমাদের দল এই সমস্যা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। একটি নতুন সূচনা করেছে।'
চেষ্টা চালাচ্ছেন শরদ পাওয়ার
এনসিপি ভাঙার পরই দলের সভাপতি শরদ পাওয়ার জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি গোটা মহারাষ্ট্র সফর করবেন আর ভাঙা দলকে পুনর্গঠন করবেন। কথা রেখেছেন শরদ পাওয়ার। ইতিমধ্যেই তিনি মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় চারটি জনসভা করেছেন। বেশ কয়েকটি সভায় যোগ দিয়েছেন। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে মিলে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
আইনি প্রস্তুতি
আর সুপ্রিয়া সুলে গত তিন মাস ধরে আড়ালে থেকে দলের আইনি লড়াই সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা মেটানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন। আগামী ৬ অক্টোবর ভারতের নির্বাচন কমিশনের (ইসিআই) সামনে এই আইনি লড়াই চলবে। কারণ, অজিত পাওয়ার এনসিপির নাম এবং প্রতীক দাবি করেছেন। বিবাদমান উভয় শিবিরই কমিশনের সামনে তাঁদের যুক্তি তুলে ধরবে। সুলের অভিযোগ, তাঁদের বিরুদ্ধে দলের ভিতর থেকে বড় ষড়যন্ত্রের চেষ্টা হয়েছে।
আরও পড়ুন- কেসিআরের মাটিতেই রণহুংকার মোদীর! কার বিরুদ্ধে তুললেন একের পর এক অভিযোগ?
প্রফুল প্যাটেলের ষড়যন্ত্রের চেষ্টা
তিনি বলেন, 'আমি জানি যে নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সংস্থা। তাই, ভাইজি (প্রফুল প্যাটেল) যখন জানালেন যে ১০-১৫ দিনের মধ্যে সমস্যাটা মিটে যাবে, তখন আমার সন্দেহ শুরু হয়।' পরে পাওয়ার পরিবার বুঝতে পারেন যে প্রফুল প্যাটেল তাঁদের ভুলপথে পরিচালনা করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি আসলে অজিত পাওয়ারের হয়ে কাজ করছিলেন। সেটা বোঝার পরই প্রফুল প্যাটেলকে দল থেকে বহিষ্কার করেন শরদ পাওয়ার। আর, প্রফুল প্যাটেল গিয়ে যোগ দেন অজিতের শিবিরে।