সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবার্তাকে ভাল চোখে দেখছে না অন্য বাম শরিকরা। শরিক নেতৃত্বের স্পষ্ট বক্তব্য, বামফ্রণ্টের বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্তের আগে এভাবে বার্তা না দিলেই ভাল হত। কংগ্রেসের সঙ্গে আসন রফা করে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আক্ষরিক অর্থে বামেদের ক্ষতি হয়েছে বলেই তাদের অভিমত।
পাঁচ রাজ্যে বিধানসভার ভোটপ্রচার চলছে। ২০১৯ সালে লোকসভার ভোট। এরাজ্যে ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে বামফ্রণ্টের জোট হয়েছিল। অবশ্য পরে সেই জোট আন্দোলনের ময়দান থেকে হারিয়ে যায়। যৌথ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দুদলের নেতৃত্বকে এক মঞ্চে বহু দিন দেখা যায় নি। যাই হোক, সিবিআই ইস্যুতে এক সভায় ফের জোটের বার্তা দিয়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র। যদিও এই বার্তা দেওয়া নিয়েই বাম শরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাফালে বা সিবিআই ইস্য়ু নয়, লাগাতার আন্দোলনে জোর কংগ্রেসের
এদিন রাজ্য সিপিআই নেতা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কেন সূর্যবাবু এই কথা বললেন? এর ফলে ভোটার ও পার্টির সদস্যদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।এই রাজ্যে এখন কোনও ভোটের দেখা নেই। এখানে বার্তা দেওয়া খুব একটা জরুরি বলে আমি মনে করি না। এটা না বললেই ভাল হত। কি ভেবে বলেছেন তা জানি না, তবে এটা অনুচিত।" তাঁর আরও বক্তব্য, "আমরা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে আমাদের পার্টি কংগ্রেসে ডাক দিয়েছি যে বিজেপিকে হারাতে হবে। আর পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী ভোট যেন ভাগ না হয়। তবে এখানে দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেসকে বামেরা ভোট দিলেও কংগ্রেস বামেদের ভোট দিচ্ছে না। এটা পশ্চিমবঙ্গের রসায়ন। বামফ্রন্ট ও গণতান্ত্রিক দলগুলোর সঙ্গে কংগ্রেসকে জোটে যেতে হবে আলোচনার ভিত্তিতে। কোনও একটা দল এককভাবে তা করলে আমরা মানতে পারব না।"
আর এক বাম শরিক আরএসপিও চাইছে, বামফ্রণ্টে সামনা-সামনি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হলে তা যেন স্পষ্ট হয়। সূর্যকান্তবাবুর বক্তব্য প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান আরএসপি নেতা ক্ষিতি গোস্বামী বলেন, "অন্য রাজ্যে নির্বাচন হচ্ছে, সেই প্রেক্ষিতে তিনি বলেছেন। আমাদের এখানে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা এখনও আলোচনা সেরে ফেলতে পারিনি। ২০১৬ সালে বলেছিলাম কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লাভ হয়নি, ক্ষতি হয়েছে। এবার আমরা বলব জোট নিয়ে যা করবেন স্পষ্ট করবেন। সামনাসামনি করবেন।" ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা নরেন চট্টোপাধ্যায় সূর্যকান্ত মিশ্রের ওই বক্তব্য নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
আরও পড়ুন: উৎসবের মাসেও নানা ঝামেলায় জড়িয়েছে তৃণমূল, ক্ষুব্ধ শীর্ষ নেতৃত্ব
এদিকে বিধানসভায় এক সাংবাদিক বৈঠকে রাফালে, সিবিআিই বা অন্য কোন বিষয়ে যৌথ আন্দোলন নিয়ে সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেন, "ভবিষ্যতে এই রাজ্যে একযোগে কংগ্রেস সিপিএম আন্দোলন করতেই পারে।" এদিকে রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র এ বিষয়ে বলেন, "প্রস্তাব এলে ভেবে দেখা যেতে পারে। তবে ২০১৬ সালে জোটের পর সিপিএমই সরে গিয়েছিল।"