বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাওয়ের বুধবারের বৈঠককে কটাক্ষ করল বিজেপি। বিহার বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা সুশীলকুমার মোদীর কটাক্ষ, 'এই বৈঠক আসলে দুই দিবাস্বপ্ন দেখা ব্যক্তির মিলন।' তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রাও রাজনৈতিক মহলে 'কেসিআর' নামে পরিচিত। বুধবার তাঁর পাটনায় নীতীশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকের কথা জানার পর থেকেই রীতিমতো অস্বস্তিতে বিজেপি। কারণ, চন্দ্রশেখর রাও আগেই লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী বিরোধী জোট গড়ে তোলার পক্ষে সওয়াল করেছেন।
আর, নীতীশ কুমারের নাম প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ইতিমধ্যেই ভাসিয়ে দিয়েছেন আরজেডি নেতা তথা বিহারে তাঁর সরকারের ডেপুটি তেজস্বী যাদব। বর্তমানে দেশের যে রাজ্যগুলোয় বিজেপি বিরোধীদের কিস্তিতে মাত হয়েছে, তার মধ্যে বিহার ও তেলেঙ্গানা অন্যতম। তার মধ্যে দক্ষিণের রাজ্য তেলেঙ্গানায় চন্দ্রশেখর রাও বিজেপির বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই সুর চড়াচ্ছেন। কিন্তু, সেখানে বিজেপি নেতৃত্ব প্রথমসারির নেতাদের পাঠিয়েও বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। তেলেঙ্গানার শাসক দল তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির অভিযোগ, রাজনৈতিক ভাবে তাদের মোকাবিলা করতে না-পেরে বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগাচ্ছে। চন্দ্রশেখর রাওয়ের মেয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করছে।
তেলেঙ্গানার যখন এই পরিস্থিতি, তখন বিহারে সম্প্রতি বিজেপির সঙ্গে জোট ছেড়ে দিয়েছেন নীতীশ কুমার। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিজেপি বিহারে মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছিল। শরিক সংযুক্ত জনতা দল বা জেডিইউকে পঙ্গু করে বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিজেরাই পুরোপুরি কুর্সি দখলের চক্রান্ত করেছিল। এই পরিস্থিতিতে বুধবার নীতীশ কুমার ও চন্দ্রশেখর রাওয়ের বৈঠক জাতীয় রাজনীতিতে রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন- বেঙ্গালুরুর ইদগাহ ময়দান: এই জমি নিয়ে কেন এত আইনি টানাপোড়েন?
তার মধ্যে আবার চন্দ্রশেখর রাও পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত সৈন্যদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণের চেক প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চিনের সঙ্গে মোদী সরকারের নেতৃত্বাধীন ভারত সীমান্তে নরম মনোভাব দেখাচ্ছে বলে দীর্ঘদিনই অভিযোগ করছেন বিরোধীরা। চিন-ভারত সীমান্তের গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের সময় মোতায়েন ছিলেন বিহার রেজিমেন্টের জওয়ানরা। সেই সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন ভারতীয় জওয়ান প্রাণ হারিয়েছিলেন।
এসবের মধ্যেই মোদী সরকার সেনাবাহিনীতে নিয়োগের জন্য 'অগ্নিপথ' প্রকল্প চালু করায় সেনাবাহিনীর প্রতি মোদী সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। বিক্ষোভও দেখিয়েছেন দেশজুড়ে। সেই পরিস্থিতিতেই গালওয়ানের জওয়ানদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেসিআর চেক বিলির সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিজেপি স্বভাবতই অস্বস্তিতে।
Read full story in English