গত সোমবারের পর বুধবারও ফের ধুন্ধুমার ঘটনা ঘটল বিধানসভায়। গত ৭ মার্চ বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের সময় হট্টগোল করার জন্য বিজেপির দুই বিধায়ক মিহির গোস্বামী এবং সুদীপ মখোপাধ্যায়কে বাকি বাজেট অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করেন অধ্যক্ষ। যা ঘিরেই বিধানসভার মধ্যে বিজেপি বিধায়করা প্রতিবাদে সামিল হয়। বিরোধীদের সেই বিক্ষোভের মধ্যেই ভাষণ চালিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। কটাক্ষ করেন গেরুয়া বিধায়কদের আচরণের।
বুধবার দুই বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব আনেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অধ্যক্ষ তা গ্রহণ করার পর প্রস্তাবটি ধ্বনিভোটে পাশ হয়ে যায়। এরপরই মুখর হন বিজেপি বিধায়করা। দুই দলীয় বিধায়কের সাসপেনশন প্রত্যাহারের জন্য অধ্যক্ষের কাছে অনুরোধ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর অভিযোগ, 'অধ্যক্ষের সম্মতিতেই অনরেকর্ড আমি সাসপেনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছিলাম। উনি আমাকে লিখিত দিতে বলেন। যা রীতি বিরুদ্ধ। কারণ পুরোটাই অনরেকর্ড বলেছিলাম আমি। অধ্যক্ষের নির্দেশ আমি মেনে নিতে পারব না। তাই সাসপেনশন প্রত্যাহার করেননি উনি।'
এরপরই ওয়েলে নেবে আসেন বিজেপি বিধায়করা। শুরু হয় প্রতিবাদ, বিক্ষোভ। তার মাঝেই বাজের অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপালের বক্তব্যের উপর নিজের ভাষণ শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। পদ্ম শিবিরকে নিশানা করেন তিনি। বলেন, 'মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। নিজেদের ওয়ার্ডে ওরা জিততে পারে না। তাই এখন চেঁচামিচি করছে এখানে। ওদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। এবাবে উন্নয়ন বন্ধ করা যাবে না।' মুখ্যমন্ত্রীর ৪০ মিনিটের ভাষণে আগাগোড়া বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেন বিরোধী বিজেপির বিধায়করা।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'মহম্মদ বিন তুঘলকের আচরণ চলছে। বিরোধী দলকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে। হিটলারের শাসন চলছে। কোনও কারণ ছাড়াই বিজেপির দুই বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আমার অনরেকর্ড আর্জি শোনেননি অধ্যক্ষ। মাত্র কয়েক ঘন্টায় বিধানসভার আলোচনা শেষ করে দেওয়া হল। রাজ্যের অবস্থা বিধানসভায় তুলে ধরার কোনও সুযোগ নেই।'
দুই বিধায়কের সাসপেনশের প্রতিবাদে অধিবেশনের বাকি দিনগুলিতে বিধানসভার লবিতে ধর্নায় বসবেন মিহির গোস্বামী এবং সুদীপ মখোপাধ্যায়। তাঁদের পালা করে সঙ্গ দেবেন বাকি দলীয় বিধায়করা। এছাড়া অধ্যক্ষ কাছেও তাঁদের সাসপেনশন প্রত্যাহারের আর্জি জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুবাবুর কথায়, 'এক্সিটপোল জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশে ফের ক্ষমতায় আসছেন যোগীজি। বাকি চার রাজ্যেও বিজেপি ভালো ফল করবে। তাই আগেভাগেই ভয় পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যা দেখতে পারবেন না বলে বৃহস্পতিবার বিধানসভার আলোচনা বন্ধ করা হল। ইয়ে ডর হামে আচ্ছা লাগা।'