লোকসভা নির্বাচনে একদিকে বিজেপি। অন্যদিকে বিরোধীরা। জাতীয় রাজনীতিতে এই সমীকরণ যত স্পষ্ট হচ্ছে, ততই আঞ্চলিক রাজনীতির ঘটনাবলিও পৌঁছে যাচ্ছে জাতীয়স্তরে। সেই সূত্র ধরে এবার বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী স্থান পেলেন দক্ষিণের তেলেঙ্গানা রাজ্যের আকচাআকচিতে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অমিত শাহর সফরের আগে তেলেঙ্গানায় হোর্ডিং পড়েছে। যাতে বিজেপিকে ওয়াশিং পাউডার নিরমার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। হোর্ডিংয়ে স্থান পেয়েছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা, নারায়ণ রানে, সুজন চৌধুরি, বীরুপক্ষাপ্পা, ঈশ্বরাপ্পা, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, অর্জুন খোটকরের মত নানা অভিযোগে অভিযুক্ত দলবদলু নেতারা। হোর্ডিংয়ে এই সব নেতাদের মুখ নিরমার বিজ্ঞাপনের বালিকাদের মুখের জায়গায় ব্যবহৃত হয়েছে। হোর্ডিংয়ের ওপরে লেখা হয়েছে ওয়াশিং পাউডার নিরমা। আর, নীচে লেখা আছে ওয়েলকাম টু অমিত শাহ।
দীর্ঘদিন ধরেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ করে চলেছে বিজেপি হল, 'ওয়াশিং পাউডার'-এর মত দল। দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা সেই দলে গেলে বা যোগ দিলেই আর তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত হয় না। কোনও কেন্দ্রীয় এজেন্সি তাঁদের কোনও বিরক্ত করে না। যেন বিজেপিতে যাওয়া মাত্রই কলঙ্কমুক্ত হয়েছেন ওই নেতারা। যে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা তৃণমূল কংগ্রেসের এই বিষোদগার, তার মধ্যে প্রথম নাম বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর।
তৃণমূলের মুখের সেই ভাষাই কার্যত তেলেঙ্গানায় এবার হোর্ডিংয়ের আকারে দেখা গেল। তেলেঙ্গানার শাসক দল তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি বা টিআরএস বেশ কিছুদিন হল নাম বদলে হয়েছে ভারত রাষ্ট্র সমিতি বা বিআরএস। তাদের দেওয়া হোর্ডিংয়েই উঠে এল শুভেন্দুকে নিয়ে এই বিজ্ঞাপন। সম্প্রতি বিআরএস প্রধান কেসিআরের মেয়ে কবিতাকে দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
আরও পড়ুন- সমকামী বিয়ের বিরুদ্ধে সরব মোদী সরকার, সুপ্রিম কোর্টে জোরদার সওয়াল কেন্দ্রের
ভারত রাষ্ট্র সমিতির মত বিরোধী দলগুলো তার প্রেক্ষিতে অভিযোগ করে চলেছে, স্রেফ রাজনৈতিক কারণেই ইডি-সিবিআইয়ের মত কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে কাজে লাগাচ্ছে কেন্দ্র বা নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এই অভিযোগের ব্যাপারে বিআরএস থেকে তৃণমূল কংগ্রেস কিংবা আম আদমি পার্টির মত বিরোধী দল- সবারই সুর একই।
শুধু তাই নয়, বিজেপিকে রুখতে কেসিআর থেকে শুরু করে নীতীশ কুমার- প্রায় সব বিরোধী রাজনৈতিক নেতাই দেশের অন্যান্য বিরোধী দলগুলোকে কাছে পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। সবটাই আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে। তেলেঙ্গানার হোর্ডিংয়ে বাংলার নেতা শুভেন্দু অধিকারীদের স্থান পাওয়া বিরোধীদের সেই একজোট হওয়ার চেষ্টাতেই নতুন করে সিলমোহর ফেলল।