আবারও শুভেন্দুর নিশানায় রাজ্য সরকার। ফের একবার বালি দুর্নীতি নিয়ে ঘুরিয়ে রাজ্য প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। এপ্রসঙ্গে নাম না করে শুভেন্দুর তির শাসকদলের এক শীর্ষ নেতার দিকেই। রাজ্য সরকারের প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিকে ঢাল করে এবার ভবানীপুর উপনির্বাচনের আগে শাসকদলকে চাপে রাখার কৌশল শুভেন্দু অধিকারীর।
বিতর্কের সূত্রপাত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বালি খাদানে খনন ও খাদান থেকে বালি তুলে স্টকইয়ার্ড বা ডিপো পর্যন্ত নিয়ে যেতে আগ্রহীদের নাম নথিভুক্তকরণে দরখাস্তের আবেদন করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের এই বিজ্ঞপ্তিকেই ঢাল করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বালি নিয়ে বড়সড় দুর্নীতির আশঙ্কা করছেন রাজ্য বিজেপির এই শীর্ষ নেতা।
উল্লেখ্য, এরাজ্যের বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, হুগলি-সহ বেশ কিছু এলাকায় বালির কারবারে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে বহু দিন ধরেই। এই জেলাগুলিতে সরকারি বালি খাদানের পাশাপাশি বেশ কিছু বেসরকারি খাদানও রয়েছে বলে অভিযোগ। সেই খাদানগুলি থেকেই বেআইনিভাবে বিশাল অঙ্কের টাকার কারবার চলে। সরকারের কর ফাঁকি দিয়ে চলে সেই ব্যবসা, এমনই অভিযোগ বিরাধীদের। বালির বেআইনি কারবার নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে খোদ রাজ্য সরকারও। এর আগেও বাঁকুড়া, বীরভূম-সব বেশ কিছু এলাকায় বালি পাচার রুখতে গিয়ে পাচারকারীদের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে সরকারি আধিকারিকদের। প্রভাবশালী কারও-কারও মদতেই এই কারবার চলে বলে অভিযোগ উঠেছে বারবার।
প্রাকৃতিক সম্পদের লুঠ ঠেকাতে তাই সচেষ্ট রাজ্য সরকারও। চলতি বছরের জুলাই মাসে খনিজ সম্পদের লুঠ আটকানোর লক্ষ্যে স্যান্ড মাইনিং পলিসি তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। খনির নিলাম থেকে যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাড়তি মুনাফা লুঠতে না পারে তার জন্য বিশেষ পরিকল্পনাও নিয়েছে রাজ্য সরকার। স্যান্ড মাইনিং পলিসি অনুযায়ী এব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মিনারেল মাইনিং কমিটিকে। মুখ্যসচিব ও অর্থ সচিবের নজরদারিতে এই নিলামের প্রক্রিয়ায় রয়েছে মাইনিং কমিটি।
এদিকে, সম্প্রতি রাজ্য সরকার বালি খাদানে খনন ও খাদান থেকে বালি সংগ্রহের জন্য করে স্টকইয়ার্ড বা ডিপো পর্যন্ত নিয়ে যেতে আগ্রহীদের নাম নথিভুক্তকরণে দরখাস্তের আবেদন করেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সেই বিজ্ঞপ্তি নিয়েই বড়সড় দুর্নীতির আশঙ্কা করছেন। বালি খনির নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন- ভোটের আগেই বড় ধাক্কা, প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের জীবনে বজ্রপাত
টুইটে সরাসরি কারও নাম না নিয়ে শাসকদলের একাধিক নেতাকে বিঁধতে চেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শুভেন্দু অধিকারী টুইটে লিখেছেন, ''গর্ভে আরেকটি বড় কেলেঙ্কারী!!! এই কেন্দ্রীভূত বালি খনির বাস্তুতন্ত্র কে নিয়ন্ত্রণ করবেন? গম্ভীর অরোরার কথা ভাবছেন, অরোরা নারুলার কথা ভাবছেন, নারুলা মণ্ডলের কথা ভাবছেন এবং তাই… .. শান্তিনিকেতনে ওম শান্তি।'' টুইটে সরকারি বিজ্ঞপ্তির ছবি তুলে বালি দুর্নীতির আশঙ্কা বিরোধী দলনেতার। তবে এব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট এই দফতরের কোনও কর্তার প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন