মমতা মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। পরিবহণ ও সেচ দফতরের দায়িত্ব ছাড়লেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যপালকেও চিঠি দিয়ে পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন তিনি।
চিঠিতে এতদিন রাজ্যবাসীর সেবা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তবে, বিধায়ক পদ ছাড়ছেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। শুভেন্দু অধিকারীর আগামিকাল দিল্লি যাওয়ার রব উঠলেও তা তিনি যাচ্ছেন না বলেই জানা গিয়েছে।
রাজ্যপাল টুইট করে শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগপত্র প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন।
Today at 1:05 pm a resignation letter of Mr. Suvendu Adhikari from office as minister addressed to Hon’ble Chief Minister has been forwarded to me.
The issue will be addressed from constitutional perspective. pic.twitter.com/cxjF68uomH— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) November 27, 2020
গতকাল হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্সের (এইচআরবিসি) চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তার ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই এদিন সরকারি সব নিরাপত্তা ছাড়েন শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার সকালে এই খবরেই নন্দীগ্রামের বিধায়কের মন্ত্রিত্ব এবং দলত্যাগের জল্পনা আরও তীব্র হয়েছিল।
এতদিন, 'জেড' ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পেতেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের অন্যতম মুখ শুভেন্দু অধিকারী। বাম আমল থেকেই নিরাপত্তা পেতেন তিনি।
গত কয়েকমাস ধরেই জোর চর্চায় শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান। তাঁর অরাজনৈতিক সভা ঘিরে দলের অন্দরেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই সভাগুলো থেকে নাম না করে দলীয় নেতৃত্বকে একের পর এক তোপ দাগেন শুভেন্দু অধিকারী। দূরত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে নন্দীগ্রামের বিধায়ক ও তৃণমূলের মধ্যে।
গত ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর সভা ও পাল্টা তৃণমূলের সভা থেকে সেই দূরত্ব কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। পরে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ ঘিরেও হুগলিতে দাঁড়িয়ে দলের কারোর নাম না করে জবাব দেন শুভেন্দু। বিতর্ক প্রশমণে সাংসদ সৌগত রায় শুভেন্দুর সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তাতে যে বরফ গলেনি তা শুভেন্দু অধিকারীর এদিনের পদক্ষেপ ঘিরেই স্পষ্ট।
দলের অবজারভার পদ তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করেই শুভেন্দু অধিকারীর অসন্তোষ বলে জানা গিয়েছে। দলের সঙ্গে প্রতাপশালী এই বিধায়কের সম্পর্কের ফাটল আরও জোড়াল হয়। জল্পনা তৈরি হয় তাহলে কী ফের দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হবে তাঁকে। কিন্তু সেই জল্পনায় ইতি টানেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। বাঁকুড়ায় মমতা বলেন, 'আমিই দলের পর্যবেক্ষক।'
এরপরই বৃহস্পতিবার এইচআরবিসি চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন শুভেন্দু অধিকারী। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই পদে বসানো হয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এরপরই এদিন মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিলেন শুভেন্দু।
শুভেন্দুর পদত্যাগ প্রসঙ্গে সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, 'মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন, কিন্তু দল ছাড়েননি। ফলে আবারও আলোচনা হতেই পারে। চাইব ও যাতে দল না ছাড়ে। ওর কিছু ক্ষোভ ছিল দলের সংগঠন নিয়ে। তা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। দেখা যাক কী হয়।'
এবার কী তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেবেন পূর্ব মেদিনীপুরের নেতা শুভেন্দু? মন্তিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরপরই রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, 'তৃণমূলের শেষের শুরু হয়েছে। এবার দলটাই উঠে যাবে। শুভেন্দুবাবু বিজেপিতে আসতে চাইলে স্বাগত। প্রয়োজনে আমিও কথা বলতে পারি।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন