নন্দীগ্রামে শহিদস্মরণের মঞ্চে দাঁড়িয়ে আগাগোড়াই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমবলকে আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। চাঁচাছোলা ভাষায় বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে, ঠেকায় পড়ে তৃণমূল শিবির নন্দীগ্রামবাসীকে আপন করার চেষ্টা করলেও তাঁদের আত্মীয় আদতে শুভেন্দু অধিকারীই।
তৃণমূলের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলন পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করত না। সেই দাবি নস্যাৎ করেছেন দমি আন্দোলনের এই নেতৃত্বদানকারী। শুভেন্দুর দাবি, লালকৃষ্ণ আদবাণী নন্দীগ্রামে আসার ফলেই সকলে সেখানে ঢুকতে পেরেছিল। এ দিন তিনি বলেন, 'সবাই কবে নন্দীগ্রামে প্রবেশ করেছিল? ১৭ মার্চ লালকৃষ্ণ আজবাণী, সুষমা স্বরাজজি, এসএস আলুওয়ালিয়া ও রাজনাথ সিংজিরা ছিলেন। এসপিজি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আমরা অবরোধ ভাঙতে ভাঙতে ভাঙাবেড়া পৌঁছেছিলাম। তৃণমূলে হয়ে তিন জন ছিল। আমি, আমার পিতৃদেব ও দীনেশ ত্রিবেদী। ঘটনাচক্র আমি ও দীনেশ ত্রিবেদী-দু'জনেই এখন বিজেপিতে।'
তখন ইউপিএ-১ সরকার আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয় বলে নন্দীগ্রাম ইস্যুতে আলসোচনা সংসদে করতে রাজি ছিল না বলেও দাবি করেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, 'সেই সময় বিজেপি ৬২ দিন সংসদ অচল করে রেখেছিল। পরে দুই কক্ষেই নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছিল।'
সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলে শুভেন্দুর মন্তব্য, 'নেপোয় মারে দই, তাই না? চকলেট আর স্যান্ডুইচ খেয়ে অনশনের নাটক মনে নেই? সে সময় শরবত খাইয়েছিলেন এই রাজনাথ সিং-ই।'
ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তাল বাংলা। চলছে সিবিআই তদন্ত। বিরোধী নেতা শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, 'গত পাঁচ মাসে নন্দীগ্রাম থানায় ৪০০-র বেশি মিথ্যা মামলায় বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের ফাঁসানো হয়েছে। আমি ১০৫-টার বেশি সার্টিফায়েড কপি বের করেছি। ডিসেম্বরেই জনস্বার্থ মামলা করব। সিট বা সিবিআই তদন্তের আবেদন জানাব।' তাঁর দাবি, প্রশাসনকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে রাজ্য।
পুরভোটের আগে তৃণমূল সরকারকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, 'সিপিএম যখন মধ্যগগণে আমি লক্ষণ শেঠকে হারিয়েছিলাম। আবার তৃণমূল যখ মধ্যগগণে আমি তখও তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছি। সিপিএমকে কে সোজা করেছি। আমি জানি কী ভাবে এঁদের সোজা করতে হয়। আগেও জিতেছি ভবিষ্যতেও জিতব। সবাইকে এককাট্টা হয়ে লড়তে হবে। সকলে একসঙ্গে থাকুন। ঐক্যবদ্ধভাবেই আমাদের লড়াই চলছে, আর চলবে। ভারতবর্ষে বিজেপির-র গেরুয়া পতাকা উড়ছে। বাংলাতেও ওড়াব। শিকড় গভীরে চলে গিয়েছে। উপড়ানো মুশকিল।'
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখনটেলিগ্রামে, পড়তেথাকুন