‘দুয়ারে সিবিআই।‘ তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার নোটিশ পাঠানো ঘিরে এমন কটাক্ষ করছে বিরোধীরা। রবিবার সেই নোটিশের জবাব ট্যুইটারে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। সোমবার সিবিআইকে নোটিশের জবাব দেন খোদ অভিষেক-পত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ভোটমুখী বাংলায় এমন গরমা গরম ইস্যু হাত ছাড়া করতে নারাজ বিরোধী দলগুলো। তাই তৃণমূল সাংসদ এবং মুখ্যমন্ত্রীর ‘ভাইপো’র বিরুদ্ধে সুর আরও চড়াল বিজেপি। এদিন চুঁচুড়ার ডানলপ মাঠে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্যের আগে বলতে ওঠেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সভায় অভিষেককে বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি।
গত কয়েকটি প্রকাশ্য জনসভায় অভিষেকের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন, ব্যাঙ্ককের ব্যাঙ্কে টাকা জমা করানোর। একটি রসিদ দেখিয়ে সেই দাবি করেছিলেন তিনি। এবার আরও একধাপ এগিয়ে গরুপাচারে অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার ডায়েরি নিয়ে ময়দানে নামার হুমকি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার সাহাগঞ্জের ডানলপ মাঠে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সভামঞ্চ থেকে এই হুমকির পাশাপাশি ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তোপ দেগেছেন ওই বিজেপি নেতা। একইভাবে সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া আরও এক নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওই মঞ্চ থেকে তোপ দেগেছেন তৃণমূলনেত্রীকে। প্রাক্তন বনমন্ত্রীর আবার ‘খেলা হবে’ স্লোগানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘আমরাও গোল দিতে জানি।’ তাঁর কটাক্ষ, ‘খেলা হবে মানে কী বলতে চাইছে? সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হবে। ভোটের সময় অশান্তি-ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করা হবে?’ ওর দলে এখন খেলার লোক নেই, গোল করার লোক নেই। তাই উনি বলছেন আমি গোলকিপার। এভাবেও নাম না করে তৃণমূল সুপ্রিমোকে বিঁধেছেন রাজীব।
এদিকে, সোমবার যখন অভিষেকের শ্যালিকার বাড়িতে গিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ডানলপের সভা থেকে আরও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘শুধু তাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কের রসিদ দেখিয়েছিলাম। এ বারে লালার ডায়েরি নিয়ে মাঠে নামব। তৃণমূল সাবধান।’ খোঁচার সুরে তাঁর স্লোগান, ‘হরে কৃষ্ণ হরে হরে, সিবিআই এবার ঘরে ঘরে।‘
একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, ‘এখন আর ‘দুয়ারে সরকার’ বলছে না, বলছে ‘দুয়ারে সিবিআই’।’ রবিবার বাবুল সুপ্রিয় আসানসোলে নতুন স্লোগান তুলেছিলেন, ‘কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, ভাইপো যাবে শ্রীঘরে’। সোমবার শুভেন্দুর মুখেও শোনা গিয়েছে একই স্লোগান।
ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে নাম না করে দুর্নীতির ইঙ্গিত করে শুভেন্দু এ দিন বলেন, ‘মিনি পাকিস্তান বলা মন্ত্রীর মেয়ে প্রিয়দর্শী হাকিম কে? চেতলায় তাঁর চার চারটে ফ্ল্যাট।’ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই ‘তোলাবাজ ভাইপো’ বলে অভিষেকের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আসছিলেন শুভেন্দু। তাঁর পাশপাশি এ বার ফিরহাদকেও দুর্নীতির কাঠগড়ায় তুললেন তিনি।
অপরদিকে, রবিবার মমতা ‘ভাষা দিবস’ পালনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘একুশে একটা খেলা হবে। চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছি, দেখি কার জোর কত! আমি গোলরক্ষক। দেখি কে জেতে, কে হারে।’ তার প্রেক্ষিতেই সোমবার রাজীব ডানলপের মঞ্চ থেকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রীকে।