হাইকোর্টের নির্দেশে বগটুই কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছে। এদিন ঘটনাস্থলে গিয়েছে সিবিআইয়ের প্রতিনিধি দল। এদিকে রামপুরহাট এসডিও অফিসের সামনে অবস্থানে বসেছে বিজেপি। রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি ও খুন-সন্ত্রাস-লুটের রাজনীতির প্রতিবাদে দুদিন ধরে অবস্থান-বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অবস্থানে বীরভূমের বিজেপি নেতৃত্ব ছাড়াও একাধিক দলীয় বিধায়ক হাজির হয়েছেন।
অবস্থান সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে। মুখ্যমন্ত্রীর মদতেই অনুব্রত মন্ডল গোটা বীরভূমে পুলিশ প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে বলেও জানিয়ে দেন শুভেন্দু। পাশাপাশি অনুব্রত মন্ডল ও মুখ্যমন্ত্রীর ফোন কলের রেকর্ড প্রকাশ্যে আনার দাবিও তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর পরামর্শ খতিয়ে দেখা হোক অনুব্রতর কল রেকর্ড।
শুভেন্দু এদিন বলেন, শুধু খুনীদের ধরলে হবে না, 'শুধু বাইকবাহিনীকে ধরলে হবে না। যাঁরা ফোন করেছেন তাঁদের কল রেকর্ড ধরতে হবে। অনুব্রত মন্ডলের কল রেকর্ড আগে ধরা উচিত। তার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশমন্ত্রীর ওই দিন তাঁর কতবার কথা হয়েছে সেটা প্রকাশ্যে আসা উচিত। কী নির্দেশ দিয়েছিলেন সেটাও আসা উচিত। আমরা দাবি করব নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের ধরতে হবে।' হেলিকপ্টারে যাতায়াত করায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'আকাশরাণী' বলেও কটাক্ষ করেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
আরও পড়ুন- বগটুইকাণ্ড: থ্রি-ডি স্ক্যান, তদন্তে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার CBI-র
তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রশাসনিক বৈঠক নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতা বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, 'অশিক্ষিত একজন তোলাবাজ, একজন গুন্ডা সর্দার জেলা সভাপতি আছেন। তাঁকে প্রশাসনিক সভাতে বসিয়ে রেখে আইসি, ওসি, বিডিও, এসডিও, ডিএম, এসপিকে তিনি নির্দেশ দিয়ে যান, এই লোকটার কথা আপনাকে শুনে চলতে হবে। গোটা জেলাতে প্রশাসিক নিরপেক্ষতাকে ধংস করে দিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশকে ধংস করে দেওয়া হচ্ছে।' শুভেন্দুর দাবি, 'প্রতিটি সাব ডিষ্ট্রিক্ট জেলে যান সেখানে গিয়ে দেখতে পাবেন বিনাবিচারে, আর্মস কেস, গাঁজা ও ৩০২ মিথ্যা মামলায় কেস দিয়ে বিশেষ করে বিজেপি কর্মকর্তা-সমর্থকদের জেলের ভিতরে রাখা হয়েছে। গোটা জেলা জুড়ে পাথর ও বালুর লুটের ব্যবসা চলছে।'
বগটুইয়ের ঘটনার পর থেকেই ভাদু শেখ ও আনারুলের বাড়ির ছবি রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে। এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, 'ভাদু শেখের বাড়ি ও আনারুলদের দুটি বাড়ির ছবি শুধু নয় প্রত্যেকটা গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরঅঞ্চলে যদি খোঁজেন তাহলে দেখবেন আগে ফাটা জামা পড়ত, সাইকেল চড়ত, বিড়ি নিভিয়ে নিভিয়ে খেত, রাস্তার পাশে বসে তাস খেলত সেই লোকগুলিরও পরিবর্তন কিভাবে হয়েছে বীরভূমে। তার ফলশ্রুতিতে রামপুরহাটের এই মর্মান্তিক ঘটনা।'