‘ছেলে ঢুকিয়ে দেব’, এই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরেই তুমুল সমালোচিত ও নিন্দিত হয়েছিলেন তাপস পাল। এই মন্তব্যের পর রীতিমতো অনুতপ্ত ও লজ্জিত ছিলেন তাপস পাল। তাঁর প্রয়াণে এমন কথাই জানালেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদের প্রয়াণে কংগ্রেস সাংসদ বললেন, ‘‘বক্তৃতায় খারাপ ভাষা বলেছিলেন। আমি একবার বলেছিলাম, তাপস দা, মুখের ভাষা তীর ছোড়ার মতো, তীর ছুড়ে দিলে আর ফিরিয়ে নেওয়া যায় না। উনি লজ্জিত বোধ করতেন, অনুতাপ বোধ করতেন, দেখে খারাপ লাগত’’।
দেখুন: তাপস পালের উত্থান-পতন! কেমন ছিল রাজনৈতিক কেরিয়ার?
তাপস পাল সম্পর্কে কী বলেছেন অধীর চৌধুরী?
এদিন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘‘সংসদে তাঁর সঙ্গে কথা বলতাম, মজা করতাম। যখন উনি গ্রেফতার হলেন, তখন খারাপ লেগেছিল, মনে হয়েছিল, লঘু পাপে গুরুদণ্ড পাচ্ছেন তাপস পাল। বক্তৃতায় খারাপ ভাষা বলেছিলেন। আমি একদিন বলেছিলাম, জানেন তো তাপস দা, মুখের ভাষা তীর ছোড়ার মতো, তীর ছুড়ে দিলে ফিরিয়ে নেওয়া যায় না। উনি লজ্জিত, অনুতাপ বোধ করতেন। দেখে খারাপ লাগত। শেষের দিকে, তাপসদার সঙ্গে যখন কথা বলতাম, তখন ওঁকে হতাশাগ্রস্ত লাগত। তিনি অবহেলার শিকার হয়েছিলেন। উনি বলতেন, কেউ তো আমায় পাত্তা দেয় না আর। আমার আর কোনও দাম নেই’’।
আরও পড়ুন: ‘আবার আমায় রাজনীতিতে ফেরাও’, মমতার মন্ত্রীকে একথাই বলেছিলেন তাপস পাল
তাপসকে কী পরামর্শ দিয়েছিলেন অধীর?
এদিন কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘‘উনি খুব ভেঙে পড়েছিলেন। আমি বলেছিলাম, ভেঙে পড়বেন না। রাজনীতি করতে ভাল না লাগলে ছেড়ে দিন। অভিনয় জীবনে ফিরে যান। সাহেবের স্পিরিট নিয়ে ফিরে যান। ফোনে কথা হত তাপসদার সঙ্গে। তারপর তাপসবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। খুব খারাপ লাগছে আজ’’।
আরও পড়ুন: কুমন্তব্যের জন্য আজ আর বিদ্বেষ নয়, তাপসকে ক্ষমা করেছে চৌমুহা
২০০৯ সালে নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ নির্বাচিত হন তাপস পাল। পাঁচ বছর পর ২০১৪ -য় ফের জয় পান তিনি। কিন্তু ভোটে জেতার পরেই বিতর্কে জড়ান সাংসদ। চৌমুহা গ্রামের একটি পথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে চরম অশালীন মন্তব্য করে বসেন তাপস পাল। গোটা দেশের সংবাদমাধ্যমে যা সমালোচিত হয়। যার জেরে দলের মধ্যেই চাপে পড়ে যান অভিনেতা- সাংসদ। পরে ক্ষমাও চান তিনি। সাংসদের এই মন্তব্য ভাল ভাবে নেননি চৌমুহা গ্রামের মানুষও। একদা প্রিয় সাংসদের বিরুদ্ধেই সরব হন তাঁরা। যদিও তাপসের প্রয়াণে তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছে সেই গ্রাম। তাপস পালের অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন