গত বছর হিজাব বিতর্কে উত্তাল হয়েছিল কর্ণাটক। দক্ষিণের এই রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরেই পঠনপাঠনের দাবি জানিয়েছিলেন মুসলিম ছাত্রীরা। কিন্তু তা মানতে নারাজ ছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সেই বিতর্কের আগুনে যিনি ঘি দিয়েছিলেন সেই নেতাকেই বিধানসভা নির্বাচনের টিকিট দিল বিজেপি।
গত বছর দক্ষিণ কর্ণাটকের উদুপিতে হিজাব বিতর্ক দানা বাঁধে। তার পর তা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপির যশপাল সুবর্ণ তখন আন্দোলনকারী ছাত্রীদের জঙ্গি বলে তোপ দেগেছিলেন। যা এই বিতর্কে ঘি ঢালে। আসন্ন কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে সেই উদুপি থেকেই সুবর্ণকে টিকিট দিল বিজেপি। সেই সঙ্গে সিটিং বিধায়ককে বসিয়ে দেওয়া হল। সুবর্ণ প্রথমবার ভোটে লড়বেন।
ব্রাহ্মণ নেতা রাঘপতি ভাট তিনবারের জয়ী উদুপি থেকে। এবারও টিকিট পাওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু পার্টি ইউ-টার্ন নিয়ে তাঁর বদলে সুবর্ণকে টিকিট দিয়েছে ওই কেন্দ্র থেকে। সুবর্ণ অনগ্রসর শ্রেণির নেতা। উপকূল অঞ্চলে একজন অনগ্রসর নেতাকে টিকিট দেওয়ার জন্য দাবি উঠছিল। মোগাভিরা সম্প্রদায়ের লোক সুবর্ণ তৃণমূল স্তরে দলের কাজ করেন। উদুপরির সরকারি মহিলা কলেজের উন্নয়ন কমিটির সহ-সভাপতি তিনি। তিনিই ছাত্রীদের সন্ত্রাসবাদী বলেছিলেন।
তবে মঙ্গলবার সন্ধেয় দল প্রথম দফায় ১৮৯টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার পর মুখের হাসি উবে গিয়েছে ভাটের। তাঁর বদলে অন্য কাউকে টিকিট দেওয়ায় ভাট অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। তবে সেটা মুখে প্রকাশ করেননি। বরং বলেছেন, "আমি দলের জন্য অনেক কাজ করেছি। আমার অবদান দল স্বীকার করেছে, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।" পাল্টা সুবর্ণ বলেছেন, "উদুপিতে দল ব্যক্তির থেকে বড়। প্রার্থীপদ ঘোষণার পর সবাইকে দলের কাজ করতে হবে। আমি আত্মবিশ্বাসী জয়ের ব্যাপারে।"
একসময় হিজাব বিতর্কের মধ্যেই হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীদের তিনি গেরুয়া চাদর বিলি করেছিলেন। যাতে হিজাব আন্দোলনকে উড়িয়ে দেওয়া যায়। গত ১৩ বছর ধরে দক্ষিণ কন্নড়ের সভাপতি সুবর্ণ। তার সঙ্গে উদুপির সমবায় মৎস্যবাজার ফেডারেশনের সভাপতি তিনি। উপকূল অঞ্চল তাঁর দখলে, তাই ভোটারদের মন পেতে তাঁকেই টিকিট দিয়েছে বিজেপি।