/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/09/Unity-In-Diversity.jpg)
বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য! (অমিত চক্রবর্তীর এক্সপ্রেস ছবি)
আগামীর লড়াই ২৪-এ। গোটা ভারত কোমর বাঁধছে। একদিকে নাম-কা-ওয়াস্তে এনডি। আসলে বিজেপির শো। অন্যদিকে 'ইন্ডিয়া' জোটের ২৬ দল। এই গ্রুপিংয়ের বাইরে যারা, তারাও অবশ্য নেহাত ফেলনা নয়। কিন্তু, মূল লড়াইটা বিরোধীদের মহাজোট 'ইন্ডিয়া'র সঙ্গে বিজেপির। আর এজন্য ছক বা রণকৌশল সাজাতেই এখন মরিয়া দুই মহাশক্তি। বিজেপির নতুন রণকৌশল এখনও পরিষ্কার নয়। সব দেখে বাজারে সেই কৌশল প্রয়োগ করতে চায় মোদী ব্রিগেড। তার পিছনে বড় আর পেশাদার মাথারা থাকবেন। এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের। কিন্তু, বিরোধীদের রণকৌশলটা কী? এই যে একের পর এক বৈঠক হচ্ছে, দেশের নানা-প্রান্ত থেকে বিজেপি বধের জন্য জড় হওয়া বিরোধীদের বিভেদ তাতে ঘুচবে?
এখন পর্যন্ত যা ঘটেছে
বিরোধীদের শেষ বৈঠক হয়েছে মুম্বইয়ে। সেখানে রাজ্যভিত্তিকভাবে দ্রুত আসন ভাগাভাগির রাস্তায় হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিরোধীরা। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করে গৌতম আদানি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণও শানিয়েছেন। কাকতালীয়ভাবে অথবা উদ্দেশ্য নিয়েই ক্ষমতাসীন বিজেপি বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'র মুম্বই বৈঠকের প্রথম দিনই পাল্টা আঘাত হানার রাস্তায় হেঁটেছিল। হঠাৎ করে সংসদের বিশেষ অধিবেশনও (১৮-২২ সেপ্টেম্বর) আহ্বান করেছে। কিন্তু, কেন এই অধিবেশন? অর্থাৎ এজেন্ডাটা কী? এই প্রশ্ন অনেকেরই।
অধিবেশন সম্পর্কে অভিযোগ
এই বিশেষ অধিবেশন কার্যকরভাবে এই সরকারের শেষ অধিবেশন হতে পারে। সেটাও কিন্তু, এখনও স্পষ্ট নয়। আবার অন্য কোনও অধিবেশন সরকার ডেকে বসবে না তো? বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, তাদের সঙ্গে পরামর্শ না-করে, এই অধিবেশন ডাকা হয়েছে। অধিবেশন শুরুর আগে কোনও বিজনেস অ্যাডভাইজারি কমিটিকে ডাকা হয়নি। আর, তাতেই সমালোচনা তুঙ্গে উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই সরকার সংসদকে একটি নির্বাচনী খেলনা বানিয়ে তুলেছে।
'হিডেন' এজেন্ডা
সরকার কি বিশেষ অধিবেশনে, 'এক জাতি, এক নির্বাচন'-এর প্রসঙ্গ তুলবে? প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে এর সম্ভাব্যতা যাচাই করায় সরকারের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়েছে। এমনটাই মনে করছেন বিরোধীরা। তাঁদের ধারণা, মোদীর এতদিনের চলার পথ দেখে (রাম মন্দির, ৩৭০ ধারার বিলুপ্তি, তিন তালাকের অপসারণ) বোঝা গিয়েছে যে তিনি বিজেপি এবং সংঘের ভাবধারাকে পূর্ণতা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিজেপি এবং সংঘের দীর্ঘদিনের দাবি মেনেই তিনি 'এক জাতি' শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন। সেই লক্ষ্যেই 'এক নির্বাচন' একটি পরীক্ষামূলক ব্যাপার। গোটাটা আসলে মোদী সরকারের 'হিডেন' গোপন এজেন্ডা বলেই বিরোধীদের মত।
আরও পড়ুন- এক দেশ-এক ভোটের ভাবনা, কী কী চ্যালেঞ্জ?
ইন্ডিয়া জোটের চেষ্টা
মোদী তথা বিজেপিকে রুখতে ইন্ডিয়া জোট ইতিমধ্যেই ১৪ সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করেছে। রাজ্যস্তরের কমিটি ঘোষণা করেছে। কিন্তু, তাদের লোগো তৈরির সিদ্ধান্ত একটা অবাস্তব কল্পনা। কারণ, বিভিন্ন রাজ্যে দলগুলো পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়ছে। সেখানে কোন দল একই লোগো ব্যবহার করবে? করলে জনগণের কাছে আদৌ বিশ্বাসযোগ্যতা থাকবে? দ্বিতীয়ত, জোটের দলগুলোর কেউ চাইছে বর্ণভিত্তিক আদমসুমারি। কেউ আবার চাইছে জাতিভিত্তিক আদমসুমারি। এনিয়ে এই সব দলগুলোর পরস্পরের মধ্যে বিরোধিতা আছে। এভাবে কি মোদীর মত একজন দৃঢ় শাসক ও নেতার বিশাল সংগঠিত রাজনৈতিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আদৌ লড়া করা সম্ভব? ভোট এগিয়ে আসছে। একটা করে দিন কিন্তু কমছে।