ঘোষণা অনুযায়ী ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দেওয়া নিয়ে দু'দিন আগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রণ্ট। বাম-কংগ্রেস শুধু আসন সমঝোতা নয়, মিছিল মিটিংয়েও একসঙ্গে লড়াই করে। বামেদের এই ব্রিগেড প্রস্তুতিও বেশ কিছু দিন ধরেই চলছে। কিন্তু এদিনের ব্রিগেডে অন্যদের পিছিয়ে দিয়ে ঝড় বইয়ে দিয়েছেন আব্বাস সিদ্দিকি তথা ভাইজান, সঙ্গে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রণ্টের কর্মী-সমর্থকরা। রাজনৈতিক মহলের মতে, বক্তব্য থেকে দলের কর্মী সমর্থকদের উচ্ছ্বাস-আবেগ, সবেতেই বাম-কংগ্রেসকে টেক্কা দিয়ে গেল ভাইজানের দল। শুধু তাই নয়, আসন সমঝোতায় দাবি না মিটলেও জোটের রাশ যে নিজের হাতেই রাখতে মরিয়া ভাইজান, তা-ও হাবেভাবে বুঝিয়ে দিতে বেছে নিলেন রবিবারের ব্রিগেডকেই।
এদিন ব্রিগেডে এসে একাই কাড়লেন জনতার উচ্ছ্বাস-আবেগ। সাধারণ মানুষকে হাত তুলিয়ে একপ্রকার শপথ বাক্য পাঠ করালেন। ১৫ মিনিটের বক্তব্য অন্যরা যেন আলোচনায় জায়গাই পেলেন না। ভাইজান বক্তব্য শেষ করতেই মাঠ ছাড়তে শুরু করলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রণ্টের কর্মী-সমর্থকরা। সীতারাম ইয়েচুরি যখন বক্তব্য রাখছেন তখন আর মঞ্চের দিকে ফিরেও তাকাতে দেখা গেল না অধিকাংশ সেকুলার ফ্রণ্টের কর্মী-সমর্থকদের। এদিন মঞ্চ বা ময়দান যেন অপেক্ষাই করছিল আব্বাসের বক্তব্যের জন্য।
আরও পড়ুন- ভোটের ফল ত্রিশঙ্কু হলে কী করবে বামেরা? জবাব দিলেন সীতারাম
রবিবারের ব্রিগেডে তিনিই যে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু তা নিজের বক্তব্যে দফায় দফায় বুঝিয়ে দিয়েছেন ভাইজান। এক সপ্তাহ আগে তিনি ব্রিগেডের প্রস্তুতি নিলে ভরিয়ে দিতেন বলেও মন্তব্য করেন ভাইজান। অভিজ্ঞ মহলের মতে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে তাঁর জনসমর্থন নিয়ে তিনি বাম-কংগ্রেসকে বিশেষ বার্তা দিলেন। আব্বাস সিদ্দিকি নতুন দলে গঠনের অনেক আগে থেকেই বাম-কংগ্রেস একসঙ্গে পথা চলা শুরু করেছিল। এদিন ভাইজান প্রতি পদক্ষেপে আআকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন আসন সমঝোতায় ৩০টি আসন পেলেও জোটের রাশ তাঁর হাতেই রাখতে চান। নাম না করে কংগ্রেসকে মঞ্চ থেকেই তোপ দেগে দিলেন।
আরও পড়ুন- আব্বাসকে ঘিরে সেলিমের অতি উচ্ছ্বাস, ক্ষুব্ধ অধীর, তাল কাটল ব্রিগেডের
এদিন ব্রিগেডের জনসভায় সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের বক্তব্য রাখা হয়ে গিয়েছে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী রাখছেন। প্রবীণ ও বর্ষীয়াণ নেতৃত্ব সকলেই যখন মঞ্চে তখন আইএসএফ-এর প্রতিষ্ঠাতা ভাইজান সেখানে প্রবেশ করেন। ফ্রণ্টের কর্মী-সমর্থকরাও তারস্বরে অভিবাদন জানান ভাইজানকে। পরিস্থিতি এমনই হয়ে উঠেছিল যেন তাঁর জন্যই সকলে অপেক্ষা করছেন। তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকদের যে আবেগ ছিল তা কিন্তু বাম বা কংগ্রেসের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়নি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, আব্বাসের দলের সঙ্গে জোটের ফলে বাংলার ভবিষ্য়ৎ রাজনীতি কী মোড় নেয় তাই অবশ্যই দেখার। বিশেষত বাম দলগুলির ভবিষ্যত। এদিনের ব্রিগেডের পর ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক জটিলতা আরও বাড়বে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। নতুন করে অঙ্ক কষতে হবে তৃণমূল কংগ্রেসকেও।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন