প্রজাতন্ত্র দিবসে এ এক অন্য ছবি দেখল দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দারা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পায়ের নীচে বাংলার মনীষীদের ছবি। ছবিতে লেখা রয়েছে, সৌজন্যে সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। এই ব্যানারে ছেয়ে গিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের একাংশ। সেই ছবি নিয়েই তুলকালাম। বিজেপি, তৃণমূলের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছে। তৃণমূলের বক্তব্য, নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে তাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে বিজেপি। মোদ্দা কথা প্রধানমন্ত্রীর পূর্ণায়ব ছবির পায়ের তলায় বাংলার মনীষীদের ছবি ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে।
বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, "দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বোল্লা, বাউল অঞ্চলে আজ সকালে দলের কার্যকর্তারা দেখেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যানার রয়েছে এবং সেই ব্যানারের ছবির নীচে রয়েছে নেতাজি, রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, ক্ষুদিরাম বোস, ঋষি অরবিন্দ সহ বাংলার মনীষীরা। সেই ব্যানারে লেখা রয়েছে সৌজন্যে সুকান্ত মজুমদার।" এর পিছনে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র দেখছেন বিজেপি সাংসদ।
প্রজাতন্ত্র দিবসে এই ছবি দেখে হকচকিয়ে গিয়েছে এলাকার বাসিন্দারা। বালুরঘাটের সাংসদের দাবি, "এটা সম্পূর্ণভাবে তৃণমূলের চক্রান্ত। কারণ এই অঞ্চলের তৃণমূলের আইটি সেল থেকে গতকাল একটা পোস্ট করা হয়। সোশাল মিডিয়ায় সেই পোস্টে লেখা হয় সুকান্ত মজুমদার খেলা হবে। কাল ওই পোস্টের পর এই অঞ্চলে আমার নাম কালিমা লিপ্ত করা হয়েছে। এমন ছবি দিয়ে বাংলার মনীষী ও প্রধানমন্ত্রীকে অপমান করা হয়েছে।" এই ঘটনার প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে দোষীদের শাস্তির দাবি করেছে বিজেপি।
তৃণমূলের দাবি, বিজেপি এই কাজ করে অযথা তৃণমূলকে জড়াচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি গঙ্গারামপুরের বিধায়ক গৌতম দাস বলেন, "বিজেপির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এই ঘটনার দায় বিজেপি এড়াতে পারে না। প্রকাশ্যে এই কাজ করেছে। সাধারণ মানুষ এই ঘৃণ্য কাজের বিরোধিতা করেছে। নরেন্দ্র মোদীর পায়ের তলায় মনীষীদের ছবি দিয়ে প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করেছে। আমি বলব এদের মতিভ্রম হয়েছে। বাংলায় ক্ষমতায় আসার জন্য এই ধরনের চক্রান্ত করেছে।" তিনি বলেন, "তৃণমূলের এত দুর্দিন আসেনি নরেন্দ্র মোদীর ছবি ব্যবহার করতে হবে। আমাদের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যথেষ্ট।" এই ব্যানারকান্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি নেয় তৃণমূল কংগ্রেসও।
এই ছবি কান্ডের দায় যে কেউ ঘাড়ে নিতে চাইবে না এটা স্বাভাবিক। অভিজ্ঞ মহলের মতে, একাজ যে দল বা কোনও ব্যক্তি বিশেষ করুক তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। রাজনীতিতে যে ভাবে মনীষীদের ব্যবহার চলছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজনৈতিক মহল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন