'কংগ্রেসে থেকে মানুষের সেবা করা যাচ্ছে না।' এই অভিযোগেই দল ছেড়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। সংকটে কমলনাথ সরকার। তাহলে কী গো-বলয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর পথে কংগ্রেস? সহজে হাল ছাড়ার পাত্র নন দলের বহু যুদ্ধের পোড় খাওয়া সৈনিক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দ্বিগিজয় সিং। বিধানসভায় আস্থা ভোটে 'চমকে'র ইঙ্গিত তাঁর মুখে।
প্রশ্ন: রাজ্যসভার টিকিট না দেওয়ার কারণেই কী বিবাদের সূত্রপাত? এই জন্যই দল ছাড়লেন জ্যোতিরাদিত্য?
উত্তর: আজেবাজে কথা! কে তাঁকে (জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া) না বলেছিল? ফের তাঁকে যাতে রাজ্যসভার টিকিট দেওয়া হয় তার জন্য আমরা সকলেই চেষ্টা করছিলাম। আমরাতো তাঁকে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি ও উপমুখ্যমন্ত্রীও করতে চেয়েছিলাম। এই বিষয়ে কিছু দিন আগেই আমি নিজে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে কথা বলেছি। এছাড়াও আলোচনা এগিয়েছিল মধ্যপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সাধারণ সম্পাদক দীপক বাবারিয়ার সঙ্গেও।
প্রশ্ন:'কিছু দিন আগে' বলতে কত দিন?
উত্তর: তিন-চার মাস হবে।
প্রশ্ন: দল যদি জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার নাম ওইসব পদের জন্য ঘোষণা করে দিত, তাহলে কী অসুবিধা হত?
উত্তর: আসল কথা হল গত তিন মাস ধরেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বিজেপির সঙ্গে রফা করছিলেন। জানতে পেরেছি যে, অমিত শাহের সঙ্গেই তাঁর করথা হচ্ছিল কিন্তু, গুনা ও দাতিয়ার বিজেপি নেতা, কর্মীরা জ্যোতিরাদিত্যের দলে ঢোকার বিষয়ে বিরোধ করছিল। ফলে বিজেপি নেতৃত্ব তাঁকে কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা নিশ্চিত করতে পারেনি। অনেক বিজেপি নেতাই বলেছিলেন যে, জ্যোতিরাদিত্যকে ছাড়াই কংগ্রেস ভাঙা সম্ভব, তবে তাঁরা ব্যর্থ হতেই ময়দানে নামেন অমিত শাহ। গত তিন মাস ধরে এই প্রক্রিয়াটি চলছিল।
আরও পড়ুন: সংকটে কমলনাথ সরকার: নজরে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার স্পিকারের ভূমিকা
প্রশ্ন: তাহলে কী আপনারা কমলনাথ সরকারের পতন দেখতে এখন প্রস্তুত?
উত্তর: (হাসি মুখে) কখনই নয়। হয়তো এই পর্যায়ে আমি এতটাই বলতে পারি যে, চলতি মাসের ১৮ তারিখ বিধানসভায় আস্থা ভোটের সম্ভাবনা রয়েছে। তখনই আপনারা চমক দেখতে পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের রাজনৈতিক দঢ়তা ও একগ্রতার উপর আমার বিশ্বাস রয়েছে।
প্রশ্ন: গত কয়েকদিনে কী আপনাদের সঙ্গে জ্যোতিরাদিত্যের কোনও কথা হয়েছিল?
উত্তর: মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ ও আমি- দু'জনেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছিলাম। যদিও তার মধ্যেই এইসব ঘটনা ঘটেছে। আগামী দু'দিনের মধ্যেই দিল্লিতে জ্যোতিরাদিত্য ও কমলনাথের আলোচনায় বসার কথা ছিল। আমিও কথা বলেছিলাম। যদিও হঠাৎ করেই জ্য়োতিরাদিত্য ফোন বন্ধ করে দেয়। পরে আর আমার ফোন গ্রহণ করেনি। বলা হয় যে তাঁর জ্বর হওয়ায় কথা বলতে পারবে না। পরে জানতে পারি যে, তাঁর অনুগামী ১৫ বিধায়ক যাঁরা ইস্তফা দিয়েছেন তাঁদের মন্ত্রী করার দাবি করছিল জ্যোতিরাদিত্য।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কংগ্রেস ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিধানসভা থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ট বলে পরিচিত ১৯ বিধায়করা। বিজেপির দাবি, আরও তিন কংগ্রেস বিধায়কও দল পাল্টে তাদের শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। ফলে বিধানসভায় কার্যত সংখ্যালঘু কমলনাথ সরকার। এই পরিস্থিতিতে বহু যুদ্ধের নায়ক কমলনাথ কী তাঁর সরকার টিকিয়ে রাখতে পারবেন? নাকি মধ্যপ্রদেশে ফুটবে কমল? নজর সেদিকেই।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন