Advertisment

'বিজেপিই বিরোধী দল', গলা ফাটালেন উদ্ধব, কেজরিওয়ালের পাশে থাকার বার্তা

সম্প্রতি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করেছেন

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mumbai News Live Updates: They (BJP) should be called oppn as they are against democracy, Constitution, says Uddhav as he vows support to Kejriwal

কেন্দ্রের অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সমর্থন চাইতে উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে দেখা করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। শুক্রবার দিল্লি সরকারের ক্ষমতা নিয়ে একটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অর্ডিন্যান্স অনুসারে, দিল্লিতে আধিকারিকদের বদলি-পোস্টিংয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর। এতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের কোন অধিকার থাকবে না। এরপরই বিরোধী দলের নেতাদের কাছে কেজরিওয়াল আবেদন করেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকল বিরোধী দলের আপের পাশে থাকার। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনার পর আজ বুধবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে দেখা করেন।

Advertisment

কেজরিওয়ালের মুম্বই সফরের সময় পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানও তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। কেজরিওয়াল উদ্ধবের সঙ্গে তাঁর বাসভবনেই দেখা করেন। আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং এবং রাঘব চাড্ডা পাশাপাশি দিল্লির ক্যাবিনেট মন্ত্রী অতীশিও এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আজকের বৈঠক শেষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে শিবসেনা সভাপতি উদ্ধব ঠাকরে বলেছেন যে তাঁর দল দিল্লিতে কেন্দ্রের অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আপের পাশে থাকবে। তিনি বলেন, “দেশ ও গণতন্ত্র বাঁচাতে আমরা সবাই আজ একত্রিত হয়েছি। আমি মনে করি আমাদের 'বিরোধী দল' বলা উচিত নয় আসলে তাদের (বিজেপি) 'বিরোধী দল' বলা উচিত কারণ তারা গণতন্ত্র এবং সংবিধানের বিরোধী," ।

দিল্লির প্রশাসনের ক্ষমতা থাকবে কার হাতে? এই প্রশ্নের জবাবে কয়েকদিন আগেই অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে বড় স্বস্তি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। পদস্থ আমলাদের বদলির বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, নিজেদের আধিকারিকদের নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার দিল্লির সরকারের রয়েছে। এর আগে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের হাতে ছিল দিল্লি সরকারের আমলা বদলির ক্ষমতা।

সুপ্রিম কোর্ট ১১ মে নির্দেশ দিয়েছিল যে অফিসারদের বদলি ও পদায়নের ক্ষমতা দিল্লি সরকারের হাতেই থাকবে। এখন অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে আদালতের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে কেন্দ্র। এখন ৬ মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি আইনও সংসদে করা হবে। একইসঙ্গে আপ কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বলেছে, কেন্দ্রের এই অধ্যাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আদেশের অবমাননা। কেজরিওয়াল সরকারের ক্ষমতার রাশ টানতেই এই অধ্যাদেশ আনা হয়েছে।

অধ্যাদেশ অনুসারে, দিল্লিতে আধিকারিকদের বদলি ও পদোন্নতির জন্য রাজধানীতে সিভিল সার্ভিসেস অথরিটি তৈরি করা হয়েছে। এতে তিনজন সদস্য থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল, দিল্লির মুখ্য সচিব এবং প্রিন্সিপাল হোম সেক্রেটারি। এই কমিটি সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে। এখন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল একা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। কমিটির সিদ্ধান্তে কোন বিরোধ থাকলে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিবেচনা করা হবে।

আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রী মোদী আবারও প্রমাণ করেছেন যে তিনি একজন স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী। তারা গণতন্ত্র, সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টে বিশ্বাস করে না। সুপ্রিম কোর্ট আদেশে বলা হয়েছিল দিল্লির সমস্ত ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের কাছে থাকতে হবে, কিন্তু মোদী সরকার একটি অধ্যাদেশ এনে এই সিদ্ধান্তকে উল্টে দিয়েছে। এই অধ্যাদেশ সুপ্রিম আদালতের আদেশের পরিপন্থী।

শিক্ষামন্ত্রী অতীশি জানিয়েছেন, ‘অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কর্তৃত্ব পাওয়ার আশঙ্কা থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার এই অধ্যাদেশ নিয়ে এসেছে। এটা অদ্ভুত যে দিল্লির মানুষ অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ৯০% আসন দিয়েছেন, কিন্তু অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির সরকার চালাতে পারে্ন না। তার প্রতিটি কাজে হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র’

বিজেপির রাজ্য সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেবা বলেছেন যে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার যেভাবে দিল্লির প্রশাসনের মানহানি এবং স্বেচ্ছাচারিতা করার চেষ্টা করেছে তার কারণে বিজেপি কেন্দ্রীয় সরকারের আনা অধ্যাদেশকে স্বাগত জানায়। যদিও মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল ইতিমধ্যেই এই অধ্যাদেশ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন

কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। তিনি বলেছিলেন যে শোনা যাচ্ছে যে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত রদ করতে একটি অধ্যাদেশ আনতে পারে।

বৃহস্পতিবার এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের সঙ্গেও দেখা করবেন কেজরিওয়াল। মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা করেন কেজরিওয়াল। মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী সফর শুরু করেছেন কেজরিওয়াল। মঙ্গলবার কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করার কিছুক্ষণ পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী দলগুলির কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, সকলের উচিত অধ্যাদেশের বিরোধিতা করা। মমতা বলেন, ‘একমাত্র সুপ্রিম কোর্টই দেশকে বাঁচাতে পারে। মমতা বলেছেন,  ‘কেন্দ্র বিচার বিভাগ সহ সমস্ত সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। আমি সকল বিরোধী দলকে অধ্যাদেশের বিরোধিতা করার জন্য আবেদন করছি, আমার দল অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে'। সম্প্রতি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করেছেন।

Arvind Kejriwal
Advertisment