বঙ্গ বিজেপির ক্ষয় রোধে মরিয়া নয়া সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দলত্যাগীদের দলে ফিরতে খোলাখুলি আহ্বান জানালেন তিনি। বললেন, "অন্য দলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কী আদৌ সঠিক? নিজেরাই পর্যালোচনা করুন। পারলে ফিরে আসুন।"
ভোটের আগে যোগদান মেলা করতে হয়েছিল বিজেপিকে। ভিন্ন দল থেকে দলে দলে নেতা, কর্মী যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু, মোক্ষ লাভ হয়নি। বাংলা জয় অধরা গেরুয়া শিবিরের। এরপরের চিত্র একেবারে উল্টো। ২রা মে-র পর থেকেই এ রাজ্যে বিজেপি ছাড়ার হিড়িক। একাধিক বিধায়ক ও বিজেপি নেতা বেসুর।
ইতিমধ্যেই পদ্ম পতাকা ছেড়ে জোড়া-ফুলে ফিরেছেন মুকুল রায় সহ চার বিধায়ক। প্রকাশ্যে দলের প্রতি অসন্তোষের কথা জানিয়েছে বেশ কয়েকজন। এই তালিকা আরও বাড়তে পারে বলে রোজই হুঙ্কার দিচ্ছে তৃণমূল। তার মধ্যেই আসানসোলের বিজেপি সাংসদও আচমকা যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। প্রকট হচ্ছে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। এতে দলের যে 'ফেস লস' হচ্ছে তা আগেই স্বীকার করেছিলেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন- নজরে লোকসভা ২০২৪, বড় লক্ষ্য বাঁধলেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত
ক্ষমতায় এসেই তাই বঙ্গ বিজেপির এই ক্ষয় ঠেকাতে সচেষ্ট সুকান্ত মজুমদার। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পাশে বসে একসঙ্গে সব বিজেপি নেতা, কর্মীদের চলার বার্তা দিয়েছেন তিনি। দলছুটদের দলে ফেরার ক্ষেত্রেও খোলাখুলি আহ্বান জানিয়েছেন নয়া বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
আরও পড়ুন- ‘তালিবানি শাসন রাজ্যে, বিপদের মুখে গণতন্ত্র’, তৃণমূলকে তুলোধনা সুকান্তর
এ রাজ্যে প্রায় প্রতিদিনই বিজেপি ছাড়ছেন বিধায়ক, নেতা কর্মীরা। এতে দলের ভবামূর্তির আদৌ কী ক্ষতি হচ্ছে? সুকান্তবাবুর জবাব, 'বিজেপি নীতি, আদর্শ নির্ভর দল। সেই নীতি মেনেই সকলকে চলতে হবে। যাঁরা কিছু পেতে চাইছেন তাঁরা থাকতে পারবেন না। আর দু-একজন গেলে দলীয় সংগঠনের কোনও ক্ষতি হবে না। বড় সংসারে মতবিরোধ থাকেই। সব বিরোধ আলোচনার মাধ্যমেই মিটাতে হবে। যাঁরা দল ছেড়েছেন তাঁদের বলব, অন্য দলে গিয়ে কী আদৌ সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? নিজেরাই পর্যালোচনা করুন। পারলে ফিরে আসুন।'
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোট বিপর্যের পর বঙ্গ বিজেপির অন্দরে গোষ্ঠী রাজনীতি ব্যাপক হারে মাথাচাড়া দিয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে সংগঠনে। দল ছাড়ছেন বিধায়ক, সাংসদ, নেতারা। রাজ্য বিজেপিতে ধস নামছে। এতে দলেরই একাংশের তিরে দিলীপ ঘোষ। যা আঁচ করে হস্তক্ষেপ করেছে গেরুয়া দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে নয়া রাজ্য সভাপতি করা হয়েছে বাবুলঘাটের সাংসদকে। শিক্ষিত, মৃদু ভাষী, সবার গ্রহণযোগ্য, দীর্ঘদিন আরএসএস সংগঠনে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন উত্তরবঙ্গের এই দলীয় নেতাকে দলের শীর্ষ পদে বসিয়ে সংগঠনে বদলের ইঙ্গিত দিতে চেয়েছেন মোদী-শাহ-নাড্ডারা। নয়া দায়িত্বর প্রথম দিনেই সেই বদলের নীতি মেনে সকলকে একসঙ্গে চলার বার্তা দিলেন সুকান্ত মজুমজদার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন