ম্যাজিক ফিগার ২১ ছুঁতে পারলো না কোনও দলই। বুথ ফেরৎ সমীরক্ষার ইঙ্গিত মিলল বাস্তবেও। ২০ আসন পেয়ে গোয়ায় এবার একক সর্ববৃহৎ দল বিজেপি। তবে, সরকার গড়তে কোনও অসুবিধা হবে না গেরুয়া শিবিরের। কারণ জয়ী ৪ নির্দল প্রার্থী ইতিমধ্যেই বিজেপিকে তাঁদের সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছে। পদ্ম শিবির সূত্রে খবর, সৈকত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ফের বসতে চলেছেন ৪৮ বছরের প্রমোদ সাওয়ান্ত। সাঙ্কেলিম থেকে খুবই অল্প ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বেলা তিনটে পর্যন্ত গোয়ায় বিজেপি পেয়েছে ২০টি আসন। কংগ্রেস জয়ী ১১টি আসনে। কংগ্রেসের জোটসঙ্গী গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি পেয়েছে ১টি আসন। তৃণমূলের জোটসঙ্গী মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির দখলে ২টি আসন। এছাড়া আপ পেয়েছে ২টি। ৪টি আসনে জিতেছেন নির্দল প্রার্থীরা।
মাস কয়েক আগে আগে গোয়ায় সংগঠন বিস্তারের কাজে হাত দিয়েছিল বাংলার শাসক শিবির। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ভোটের আগে গোয়ায় কর্মসূচি করে তৃণমূল। গোয়ায় নতুন ভোর আনার সংকল্প দেখিয়েছিল জোড়া-ফুল শিবির। বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেস যোগ্য বিকল্প নয় বলে ওই রাজ্যের প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন মমতা ও অভিষেক। ২৬টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। বাকিগুলিতে প্রার্থী দেয় জোটসঙ্গী মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি। তারা ২টি আসন জিতলেও শিকে ছিঁড়ল না মমতার দলের। শূন্য হাতেই গোয়া থেকে ফিরতে হচ্ছে তৃণমূলকে।
আরও পড়ুন- পাঞ্জাবে ঝাড়ুর যাদু, বাংলায় আপের নজরে পঞ্চায়েত ভোট
তবে, তৃণমূলের জোটসঙ্গী নির্দল প্রার্থীদের পথ অনুসরণ করে শেষ পর্যন্ত বিজেপিকেই সমর্থন দিতে পারে বলে জল্পনা। মুখ্যমন্ত্রীও সেই আভাসই দিয়েছেন ঘনিষ্ঠ মহলে।
সূত্রের খবর, সরকার গঠনের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী বিজেপি। আজই রাজ্যপাল পিএস শ্রীধরণ পিল্লাইয়ের কাছে গিয়ে গোয়ায় সরকার গঠনের দাবি জানাবে পদ্ম ব্রিগেড।
পাঁচ বছর আগেই ত্রিশঙ্কু হয়েছিল গোয়ার ফলাফল। শেষ পর্যন্ত ১৩টি আসন পেয়েও এমজিপি পার্টি, গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি এবং নির্দল বিধায়কদের সমর্থনে সরকার গড়ে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন মনোহর পারক্কর। এবার অবশ্য সেই রাজ্যে বিজেপির সরকার গঠন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
২০১৯ সালে পারিক্করের মৃত্যুর পর গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন প্রমোদ সাওয়ান্ত। এরপরই ১০ কংগ্রেস ও ২ এমজিপি বিধায়ক পদ্ম দলে যোগ দেন। ফলে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় বিজেপি। কোর্টেও রায়ও দলত্যাগী বিধায়কদের পক্ষেই যায়।
আরও পড়ুন- গোয়ায় ঘাস-ফুলের ফল শূন্য, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলকে টেক্কা আপের
মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সাওয়ান্তের নানা সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। করোনাকালে, বিশেষ করে দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় সরকারি হাসপাতাহে অক্সিজেনের সরবরাহ ঘিরে প্রবল সমালোচিত হন তিনি। এমনকী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও এপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধ প্রকট হয়েছিল। বেনৌলিমে দুই নাবালিকা ধর্ষণের পর গত বছরের জুলাই মাসে বিধানসভায় একটি বিবৃতি দিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন সাওয়ান্ত। তাঁর মেয়াদে মোল্লেম বাঁচাও আন্দোলন মাথা চাড়া দিয়েছিল। প্রবল বিতর্ক হয়েছিল গোয়া ভূমিপুত্র অধিকার বিলনিয়েও। কিন্তু, এতোসবের মাঝেও সাওন্ত নেতৃত্বাধীন বিজেপিতেই আস্থান রাখলেন মানুষ।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক প্রমোদ সাওয়ান্ত শুরু থেকেই আরএসএস ঘনিষ্ঠ। জানা গিয়েছে, তাঁকেই আবার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে চলেছে বিজেপি।
আরও পড়ুন- যোগীর নজির, উত্তরপ্রদেশ ফের বিজেপির, এক্স-ফ্যাক্টর কোনগুলি?
Read in English