‘মোদীজির তিন পুঁজিপতি বন্ধুর স্বার্থেই কৃষি আইন’, বিজনৌরে সরব প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

‘মোদীজির তিন পুঁজিপতি বন্ধুর স্বার্থে কৃষি আইন’, বিজনৌরে সরব প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

‘মোদীজির তিন পুঁজিপতি বন্ধুর স্বার্থে কৃষি আইন’, বিজনৌরে সরব প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ভাইয়ের পথে হেঁটেই কৃষি আইন নিয়ে সুর চড়ালেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। উত্তর প্রদেশের বিজনৌরে এক কৃষক মহা পঞ্চায়েতে এদিন বক্তব্য রাখেন প্রিয়াঙ্কা। সেই মঞ্চ থেকে তিনি অভিযোগ করেন, ‘তিনটি কৃষি আইন প্রধানমন্ত্রীর তিন জন পুঁজিবাদী বন্ধুর স্বার্থে আনা হয়েছে। এই আইনে কৃষক স্বার্থ চরিতার্থ হবে না।‘ দিন কয়েক আগেই সংসদে ‘হাম দো হামারে দো’ স্লোগান তুলে কৃষি আইন নিয়ে মোদী সরকারকে বিঁধেছিলেন রাহুল গান্ধী। এদিন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী খানিকটা সেই সুর গাইলেন। তাঁর খোঁচা, ‘প্রধানমন্ত্রীর পুঁজিবাদী বন্ধু সংবাদ মাধ্যমের সর্বময় কর্তা। নির্বাচনে বিজেপিকে সাহায্য করেন এই বন্ধুরা। গোটা দেশকেই এই তিন জনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।‘

Advertisment

এদিন বিজনৌরে তিনি তিনটি কৃষি আইনের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেন কংগ্রেস নেত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রথম আইনে কর্পোরেটদের ছাড় দেওয়া হয়েছে। তারা ইচ্ছামতো কৃষি পণ্য কিনে মজুত করতে পারবেন। ফলে বাড়বে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মুল্য। দ্বিতীয় আইনে এপিএমসি মার্কেট বা কৃষক মান্ডি ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। আর তৃতীয় আইনে চুক্তি চাষের গুরুত্ব বাড়বে। নিগ্রহের কবলে পড়বেন কৃষকরা।‘

সুর চড়িয়ে তাঁর আরও কটাক্ষ, ‘সারা বিশ্ব ঘুরতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু উনি বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বসে থাকা কৃষকদের সঙ্গে এসে কথা বলতে পারেন না।‘ এদিন অবিলম্বে ওই তিনটি কৃষি আইন বাতিলের সওয়াল করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।

কৃষক আন্দোলনের পাশে গোটা কংগ্রেস, এই দাবি করে প্রিয়াঙ্কার মন্তব্য, ‘আমি আপনাদের সঙ্গে, রাহুল আপনাদের সঙ্গে প্রত্যেক কংগ্রেস কর্মী আপনাদের সঙ্গে। আমার বিশ্বাস আছে এই আন্দোলনের আপনারা শেষ দেখে ছাড়বেন।‘ এদিকে, পাঞ্জাব-হরিয়ানায় কৃষক আন্দোলনের ঝাঁঝ চরমে। এর মধ্যেই মৃত কৃষকদের প্রতি হরিয়ানার কৃষিমন্ত্রী জেপি দালালের ‘অসংবেদনশীল’ মন্তব্য আগুনে ঘি ঢেলেছে। ছড়িয়ে পড়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্যের মন্ত্রীর বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপিং। যা ঘিরে প্রতিবাদে মুখর কৃষকরা। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় চলছে দালালের কুশপুতুল দাহ। কৃষকদের এই ক্রোধ বজায় থাকলে যে হরিয়ানার আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি-জেজেপি জোটের ভরাডুবি হতে পারে বলে আশঙ্কা শাসক শিবিরের।

Advertisment

শনিবার হরিয়ানার ভিওয়ানিতে দলীয় সমর্থকদের নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন হরিয়ানার কৃষিমন্ত্রী জেপি দালাল। আন্দোলন চলাকালীন মারা যাওয়া কৃষকদের নিয়ে সেখানে তাঁর অনুভূতি জানতে চান এক সাংবাদিক। জবাবে তিনি বলেন, ‘বাড়িতেও মরতেই হত এঁদের। এখানে কি লোক মারা যাচ্ছে না? ২ লক্ষ লোকের মধ্যে ৬ মাসে ২০০ জনের মৃত্যু কি অস্বাভাবিক?’ মন্ত্রী দাললালের এই বক্তব্যেই ভাইরাল হয়।

এরপরই দালালের মন্তব্যের বিরুদ্ধে রাগে ফেটে পড়েন বিক্ষোভকারী কৃষকরা। জাতীয় সড়কে টোল প্লাজায় ধর্নায় অবস্থানকারী কৃষকরা জেপি দালালের কুশপুতুল দাহ করেন। কৃষকদের অসন্তোষের কথা জানান অল ইন্ডিয়া কিষাণসভা (হরিয়ানা)র সম্পাদক দয়ানন্দ পুনিয়া। তিনি বলেন, ‘আন্দোলকারী কৃষকদের মৃত্যু নিয়ে মন্ত্রী মশকরা করছেন। আন্দোলনকে বিকৃতভাবে তুলে ধরছেন। যা মেনে নেওয়া যায় না।’ চাষীদের বিক্ষোভ নিয়ে বিজেপি মন্ত্রীর অবস্থান আরও স্পষ্ট করতে দাদালের বক্তব্য বেশি করে তুলে ধরার দাবি জানাচ্ছেন ক্ষুব্ধ কৃষকরা।

প্রতিবাদের ঢেউ ক্রমশ বাড়ছে বুঝেই অবশ্য রবিবার হরিয়ানার কৃষিমন্ত্রী জেপি দালাল সাফাই হিসাবে জানান, তাঁর বক্তব্যের ‘ভুল ব্যাখ্যা’ হয়েছে। কেউ তাঁর শনিবারের বক্তব্যে আহত হলে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী। কৃষখ স্বার্থেই কাজ করতে চান বলে দাবি করেন দালাল। বলেন, ‘মান্ডি ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও বিকল্প ব্যবস্থার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা যেকোনও একটি বেছে নিতে পারেন। কৃষকদের বিক্ষোভের কোনও যুক্তি নেই। নয়া কৃষি আইন লাগু হলে মান্ডি ব্যবস্থার ও ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের বিলুপ্তির যে ভয় ছোট কৃষকরা পাচ্ছেন তা অমূলক।’

Priyanka Gandhi Farm Law narendra modi