সন্দেশখালিতে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে তাদের দলের চারজন খুন হয়েছে বলে দাবি করেছে বিজেপি। এ ঘটনায় তাদের দলের আরও পাঁচজন আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। তৃণমূলের তরফ থেকে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে, বিজেপি কর্মীদের আক্রমণে তাদের দলের একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে বসিরহাটে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, সকাল থেকেই বসিরহাট জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার জেরে দিল্লি থেকে আজই সন্দেশখালি যাচ্ছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তাঁর সঙ্গে যাচ্ছেন বিজেপি রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং দলের অন্য়তম সম্পাদক রাহুল সিনহা। এই হিংসার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুকুল রায়।
স্থানীয় এক পুলিশ আধিকারিক সানডে এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "একজন মারা গিয়েছেন, আরও কয়েকজন গুরুতর আহত। মৃতের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।"
লোকসভা ভোটের পর রাজ্যে এটিই প্রথম বড় অশান্তির ঘটনা। সন্দেশখালি এলাকা বসিরহাট লেকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত। এখানে বিজেপির সায়ন্তন বসুকে হারিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নুসরত জাহান সংসদে গিয়েছেন।
শনিবার সন্দেশখালির ন্য়াজাট থানা এলাকার হাটগাছি অঞ্চলে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে গুলি বিনিময়ে গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। গুলির সঙ্গেই মুহূর্মুহূ বোমাবাজিও চলতে থাকে। এর ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। জানা যাচ্ছে, ঘটনাস্থলে যাবে বিজেপির প্রতিনিধি দল। এদিনের ঘটনার কথা সবিস্তারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের কাছে রিপোর্টও তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
নিহত প্রদীপ মণ্ডল
টুইট করে এদিনের ঘটনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করেছেন মুকুল রায়। অন্যদিকে, এ ঘটনায় সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও।
বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর অভিযোগ, "সন্দেশখালি হাটগাছি এলাকায় বিজেপি লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফল করেছে। এরপর সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকারের নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনিধি দল যায় ওই এলাকায়। শনিবার স্থানীয় তৃণমূল নেতা শাহজাহানের নেতৃত্বে তৃণমূলী দুষ্কৃতীরা দুপুর ১২ টা থেকে বিজেপির ঝান্ডা খুলতে শুরু করে। এরপর দুপুর তিনটে নাগাদ গুলিগোলা নিয়ে বিজেপি কর্মীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তৃণমূলীরা।" সায়ন্তন আরও জানাচ্ছেন, আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় নিয়ে আসার চিন্তাভাবনা করছে দল।
তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এ ঘটনার জন্য বিজেপিকেই দায়ী করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, "হঠাৎই ১০-১২ জন বিজেপি কর্মী হাটগাছি এলাকায় দলের এক সভায় ঢুকে পড়ে। আমাদের দলের কর্মী ২৬ বছরের কায়ুম আব্দুল মোল্লাকে কাছ থেকে গুলি করা হয়। তারপর তাকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাঁর শরীরে অনেকবার আঘাত করা হয়।"