সিপিএম-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জাতপাত, ধর্মীয় রাজনীতির তকমা সেঁটে দিতে মরিয়া তৃণমূল-বিজেপি। জাতপাতের রাজনীতিতে এবার বিজেপি দুই-জন বন্ধু পেল বলে মনে করছে জোড়া-ফুল শিবির। জন্মলগ্নে বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধায় রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগ তোলা হয় বারংবার। রবিবারের বাম-কং ব্রিগেডে আব্বাস সিদ্দিকির উপস্থিতির পর এবার ওই দুই দলকেও জাতপাত, ধর্মীয় রাজনীতির বৃত্তে ফেলে তাদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ খণ্ডণ করতে তৎপর তৃণমূল। বিষয়টিকে এবার প্রচারে জোরালভাবে ভোটারদের কাছে তুলে ধরবে জোড়া-ফুল শিবির। অন্যদিকে, বিজেপির সাফ কথা- বাম-কংগ্রেস ভাইজানের কাছে নিজেদের সমর্পণ করেছে। এই রাজনীতি মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে।
রবিবাসরীয় ব্রিগেডে হাজির ছিলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক আব্বাস সিদ্দিকি। কার্যত বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বকে ছাপিয়ে তিনিই হয়ে উঠেছিলেন ব্রিগেডের মুখ্য আকর্ষণ। ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে মোদীর বিরুদ্ধে কোপ দাগার পাশাপাশি মমতাকে জিরো করে দেওয়ারও ডাক দিয়েছেন তিনি।
সোমবার তৃণমূল নেতৃত্ব আব্বাসের নাম মুখে উচ্চারিত না করলেও নিশানায় ছিলেন তিনিই। তাঁকে জড়িয়েই কটাক্ষ করা হয় বাম-কংগ্রেসকে। জাতপাত-ধর্মীয় রাজনীতিতে এই দুই দল নাম লিখিয়েছে বলে আক্রমণ শানান রাজ্যের মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
কাস্তে-হাতুড়ি ও হাত শিবিরকে বিঁধে সুব্রত মুখোপাধ্যায় এদিন বলেন, 'আমাদের রাজনীতির সঙ্গে সিপিএম বা কংগ্রেসের অনেক বিরোধ রয়েছে। কিন্তু এতদিন আমরা কখনও ওদের জাতপাত-ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করে বলে বলিনি। বাংলায় এসবের স্থান নেই বলেও গর্ব করতাম। তবে, গতকাল যে অভিনব ঘটনা ঘটল তারপর আর তা বলব না। সিপিএম ও কংগ্রেস এখন আর জাতমুক্ত রাজনৈতিক দল নয়।' এরপরই তিনি বলেন, 'জাতপাতের রাজনীতির খাতায় এতদিন শুধু বিজেপির নাম ছিল, এবার তারা দুই বন্ধু পেল। এরা হল সিপিএম ও কংগ্রেস।'
জাতপাত-ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগে বিদ্ধ বিজেপি। গেরুয়া শিবিরকে সাম্প্রদায়িক বলে দেগে দেয় বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল। কিন্তু রবিবারের ব্রিগেডের কথা তুলে ধরে আব্বাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার পদ্ম শিবির। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, 'ভাইজানের রাজনীতির কাছে বাম-কংগ্রেস নিজেদের সমর্পণ করেছে। মানুষ অচিরেই এই অপচেষ্টার রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করবে। বিজেপি ফের বাংলা ভাগ হতে দেবে না। আব্বাসের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করে বিভাজন রুখবে বিজেপি।'
বঙ্গভোটে এবার মেরুকরণের রাজনীতির আভাস মিলেছে। রবিবারের ব্রিগেড যা আরও উস্কে দিল বলেই মত রাজনৈতিক বিশষজ্ঞদের একাংশের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন