খেলা এবার সত্যি সত্যি জমে উঠেছে। তৃতীয়বার বাংলা জয়ের পর তৃণমূলের ত্রিপুরা অভিযান, সেই অভিযান ঘিরেই খেলার ময়দান উত্তপ্ত। আগরতলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ির ওপর হামলা হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে দক্ষিণ ২৪ পরগানায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডার গাড়ির ওপর আক্রমণ হয়েছিল। এখানকার বিজেপি নেতা-কর্মীরা সেই ঘটনা স্মরণ করাচ্ছেন। আবার তৃণমূলের কেউ কেউ সাধুভাষায় ত্রিপুরার ঘটনার পাল্টা নিদান দিচ্ছেন।
২০২৩-এ ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। বাঙালি অধ্যুষিত ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে অপেক্ষাকৃত সফট টার্গেট। মূলত ভাষাগত বিভেদ কম, পরশী রাজ্য, অন্য রাজ্যের তুলনায় সাংগঠনিক লোকবল বেশি, সাংগঠনিক ভাবে বামেরা দুর্বল। তাছাড়া বাংলায় টানা তিন বারের জয়ের প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এমন নানা কারণে সর্বশক্তি দিয়ে ত্রিপুরায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
ত্রিপুরায় তৃণমূলের হানা দেওয়ায় পরশি দুই রাজ্যেই রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে। দুই রাজ্যেই দুই দল টগবগ করে ফুটছে। প্রকৃতই যেন 'খেলা জমেছে'। ইতিমধ্যে ত্রিপুরা বিজেপির একাংশ তৃণমূল নেতৃত্বকে বহিরাগত প্রশ্নে বিঁধেছে। পশ্চিমবঙ্গে যদি কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব বহিরাগত হয় তাহলে অভিষেক বন্দ্যোপয়ধ্যায়, মলয় ঘটক, ব্রাত্য বসুরাও ত্রিপুরায় বহিরাগত।
আরও পড়ুন- কেন ত্রিপুরায় তৃণমূল? ছত্রে ছত্রে বাংলার উদাহরণ তুলে ধরলেন অভিষেক
এরাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপির বহিরাগত নেতৃত্ব, কেন্দ্রীয় বাহিনীর আগমনের জন্য করোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দাবি করেছিলেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার ত্রিপুরায় দেখা গেল পিকের টিমের ২৩ জন সদস্যকে হোটেলবন্দি করেছিল ত্রিপুরা পুলিশ। তাঁরা করোনা টেস্ট ছাড়া বাইরে বেরতে পারবেন না। এরপরই দাবি ওঠার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব ত্রিপুরায় করোনা সংক্রমণের জন্য দায়ি। দুই রাজ্যে দুই সরকারের কার্যক্রম প্রায় একই। তফাতটা শুধু দলের নাম ও পতাকায়।
এরাজ্যে জেপি নাড্ডার কনভয়ে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল। হামলার ঘটনা মিথ্যা তাও তৃণমূল নেতৃত্ব বলতে পারেনি। কিন্তু কারা হামলা করেছিল তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিল তৃণমূল। এবার আগরতলায় অভিষেকের গাড়িতে হামলা নিয়ে বিজেপির বক্তব্য, পতাকা তো কিনতে পাওয়া যায়। অযথা প্রচার চাইছে তৃণমূল। রাজ্য ভিন্ন, কিন্তু প্রেক্ষাপট যেন একইরকম। তৃণমূল নেতা কমল গুহ তো ফেসবুকে লিখেই দিলেন, 'দিনহাটায় বিজেপি নেতাদের দেখাশুনা কদতে হবে।' এ যেন সেই অতিথি দেব ভব-র আরেক রূপ।
হকিতে পাঞ্জাব, ক্রিকেটে মুম্বাই আর সারা দেশের মধ্যে ফুটবলে খ্যাতি ছিল কলকাতার। সেই খেলার মান আজ তলানিতে, ক্লাবের কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ ক্লাবপ্রেমী, খেলাপাগল সদস্য-সমর্থকরা। তবে খেলা চলছে রাজনীতির ময়দানে। সেই খেলা এখন বাংলা ছাড়িয়ে ত্রিপুরায়। তবে প্রতিবেশী রাজ্যে তৃণমূলের প্রকৃতই সম্ভাবনা কতটা তার জন্য ২০২৩ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন