রাজনৈতিক মহলে এখন জোর চর্চা, তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রিগেডের জনসভায় কারা আসছেন, আর কারা আসছেন না। এখনও সেই চিত্র স্পষ্ট হয়নি। তবে সেদিনের সভায় বড় ধরনের চমক থাকবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সূত্রের খবর, বিজেপির জাতীয় স্তরের দু-এক জন প্রাক্তন ও বর্তমান নেতার ওই সভায় হাজির থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সিপিএমের কোনও প্রতিনিধি তৃণমূলের ব্রিগেডে হাজির থাকবেন না, তবে রাহুল গান্ধী নিজে হাজির না থেকে কোনও প্রতিনিধি পাঠাবেন এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
২০১৯ লোকসভাকে সামনে রেখে ১৯ জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রিগেড। এই ব্রিগেডের জনসভাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক পারদ চড়চড় করে ঊর্ধ্বগামী। রাজ্য স্তরের শুধু নয়, জাতীয় স্তরের নেতৃত্বের নজর রয়েছে এই ব্রিগেডের সভা। তবে বিজেপি বিরোধী সমস্ত শক্তিকে এক মঞ্চে আনতে তৎপর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাম্প্রতিক পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের পর তিন রাজ্যে বড়সড় জয় পেয়েছে রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস। তবে এখনও রাজ্য কংগ্রেস নিশ্চিত করতে পারছে না ব্রিগেডের সভায় কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি হাজির থাকবেন কী না। এমনকী ব্রিগেডে হাজির থাকার ব্যাপারে প্রদেশ কংগ্রেসকে কোনও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেও জানিয়ে দিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি সোমেন মিত্র।
আরো পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প থেকে বেরিয়ে এল পশ্চিমবঙ্গ
এখন রাজনৈতিক মহলে সব থেকে বড় চর্চা, কোন কোন বিজেপি বিরোধী নেতা আসবেন ব্রিগেডের সভায়? তৃণমূল সূত্রে খবর, রাষ্ট্রীয় জনতা দলের প্রতিনিধি, মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির প্রতিনিধি, সমাজবাদী পার্টির নেতা খোদ অখিলেশ যাদব, ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন, তেলুগু দেশম পার্টির চন্দ্রবাবু নাইডু সহ অনেকেরই আসার কথা রয়েছে ব্রিগেডে। তবে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও এই সভায় না-ও আসতে পারেন বলেই খবর। এক্ষেত্রে যুক্তি, কংগ্রেসের সঙ্গে এক মঞ্চে উঠবেন না চন্দ্রশেখর। তিনি কংগ্রেস ও বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব বজায় রাখতে চান।
যদিও রাহুল গান্ধী এখনও জানান নি, কে যাচ্ছেন এই সভায়। তবে বিজেপি বিরোধী মঞ্চের এটা বড় সভা, সেক্ষেত্রে রাহুল না এলেও এআইসিসির কোনও প্রতিনিধি সভায় যোগ দিতে পারেন। ইতিমধ্যে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়েছে কংগ্রেসের। সূত্রের খবর, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজু জনতা দলের নেতা নবীন পট্টনায়েকের আসার সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন: তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে উত্তাল জলপাইগুড়ি, ঘেরাও থানা
রাজ্য কংগ্রেস তৃণমূলের এই বিজেপি বিরোধী সভা নিয়ে একেবারেই উদাসীন। সোমেন মিত্রের প্রতিক্রিয়া অনেকটাই সিওই সভায় কেউ গেলেই বা কী না গেলেও বা কী" গোছের। রাজ্য কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি থাকবেন কি? সোমেন মিত্রের জবাব, "না"। রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি বলেন, "আমাদের তো আমন্ত্রণই জানায়নি। কাগজে দেখেছি দিল্লিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। রাজ্য কংগ্রেসকে কোনও আমন্ত্রণ পত্র পাঠায়নি। রাজ্য কংগ্রেসের যাওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। এখন দিল্লি কী করবে না করবে তা দিল্লির সিদ্ধান্ত। আমরা চাইছিও না, আবার চাইছি না তাও না। এটা দিল্লির সিদ্ধান্তের বিষয়।"
তবে জনসভায় বিশেষ চমক থাকবে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। বিজেপির বিদ্রোহী ব্রিগেডকে কি ১৯ জানুয়ারির তৃণমূলের ব্রিগেডে দেখা যেতে পারে? এই নিয়ে জল্পনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। বিজেপি সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা দীর্ঘদিন ধরেই নোট বাতিল, জিএসটি সহ কেন্দ্রীয় সরকারের নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে সামালোচনার ঝড় বইয়ে দিয়েছেন। যশবন্ত সিনহা, অরুন শৌরিদের সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের ফারাক ক্রমশ বেড়ে অপূরণীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৯-এর মঞ্চে হাজিরার তালিকা তাই বাড়তে পারে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।