লোকসভা নির্বাচন যে সত্যিই এবার দরজায় কড়া নাড়ছে তার জের রাজ্যের রাজনৈতিক নেতৃত্বের কথাবার্তায় ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। রবিবার তৃণমূল ভবনে এক প্রশ্নের জবাবে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, "কে দিলীপ ঘোষ, কে সায়ন্তন?" কটাক্ষের জবাব এল কটাক্ষেই। "কে পার্থ চট্টোপাধ্যায়?" পাল্টা প্রশ্ন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুরও। বাদানুবাদের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন না তুললেও, পরস্পরের প্রতি উষ্মা প্রকাশে কোনো খামতি নেই।
রবিবার তৃণমূল ভবনে কিষান তৃণমূল কংগ্রেসের বৈঠকের পর বিজেপি প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মহাসচিব। নাম না করে কটাক্ষ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রকেও। "তিনি জঙ্গলে আছেন," বলে মন্তব্য করেন পার্থবাবু। তবে এদিন কিষান তৃণমূলের বৈঠকে কৃষকরা যাতে ফসলের সঠিক মূল্য পান, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন সংগঠনের নেতাদের। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূল কংগ্রেসের কৃষক সংগঠনের তৃতীয় বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হবে।
আরো পড়ুন: কেন গেরুয়া শিবিরের নজরে রামপুরহাট?
বিজেপি নিয়ে প্রশ্ন করতেই ক্ষিপ্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "দিলীপ ঘোষ এই বলছে, সায়ন্তন না কে আছে? এই নামগুলো পশ্চিমবঙ্গের ব্লকে কেউ চেনে না। তোমরা রোজ বলে বলে চেনাচ্ছো। এটা ঠিক হচ্ছে না। জিরোকে হিরো বানানোর চেষ্টা করলেও মিডিয়া পারবে না। যা করবার করে দেখাক, শূন্য কলসী বেশি বাজছে। বিনা খাটুনিতে বিবৃতি দিয়ে মানুষের কাছে নাম প্রচার করছে।" তাঁদের বয়কট করারও আহ্বান জানান তিনি। সোমেন মিত্র কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধীকে বলেছেন, তৃণমূলের সঙ্গে জোট নয়। কী বলবেন আপনি? পার্থবাবুর জবাব, "যাঁরা জঙ্গলে চলে গেছেন, তাঁদের নিয়ে আসছেন কেন?"
এদিকে কটাক্ষের জবাব কটাক্ষেই দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তিনি বলেন, "জনগণের ভোট হারিয়ে যাবে, তাই মাথা খারাপ হয়ে গিয়ে এসব বকতে শুরু করেছেন। জনগণও বলছেন, কে পার্থ চট্টোপাধ্যায়? আর উনি বলছেন কে দিলীপ ঘোষ, কে সায়ন্তন বসু?"
রবিবার তৃণমূল ভবনে পশ্চিমবঙ্গ কিষান ক্ষেতমজুর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির বৈঠকে আগামী তৃতীয় বার্ষিক সম্মেলন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে পার্থবাবু বলেন, "আমাদের দেখতে হবে কৃষকরা যেন ফসলের ন্যায্য দাম পান। তাঁরা যেন সরকারের কাছে সরাসরি ধান বিক্রি করতে পারেন। ফড়েরা কোনও ফায়দা না নিতে পারে।" পাশাপাশি নেতাজি ইন্ডোরের সভায় মাঠের লোকদের নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, "আমরা তো ঠান্ডা ঘরে বসে কৃষকদের কথা বলছি।" কৃষক সংগঠনকে আরও জোরদার করার কথাও বলেছেন পার্থবাবু।
আরো পড়ুন: মমতার ব্রিগেডে থাকবেন কী না সোমেনকে জানালেন না রাহুল
সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বেচারাম মান্না বলেন, "সিপিএমের আমলে ধান রোয়ার পর বীজ পেতেন কৃষকরা। কোনও কাজ হত না। সর্ষে বীজ এমন সময়ে পৌঁছত, যে সেই বীজ কেউ বসাতো না। এখন আর সেসব হয় না। তবে কিষান ক্রেডিট কার্ড নেই, এমন কৃষক যেন একজনও না থাকেন। তার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।"