Advertisment

কাঁটা দিয়ে অন্দরের কাঁটা তোলা, দলত্যাগীর ফেরানোর নেপথ্যে গভীর ছক তৃণমূলের

যত দিন গড়াচ্ছে তত বঙ্গ বিজেপির ঘর খালি হচ্ছে। তৃণমূল থেকে আসা নেতারা ফিরে যাচ্ছেন পুরনো দলে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
TMC have a deep plan behind the return of the defectors

মুকুল রায়, সব্যসাচী দত্ত, সুনীল মণ্ডল

যত দিন গড়াচ্ছে তত বঙ্গ বিজেপির ঘর খালি হচ্ছে। তৃণমূল থেকে আসা নেতারা ফিরে যাচ্ছেন পুরনো দলে। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব ঘোষণা করেছিল যাঁরা 'গদ্দার' তাঁদের দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে না। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলকে ডোবাতে পদ্মশিবিরে যাঁরা ভিড়েছিলেন তাঁরা তৃণমূলের দরজায় লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এক এক করে ঘাসফুলের ছাতার তলায় জড়ো হচ্ছে। এই ঘরওয়াপসি নিয়ে নানা কারণ উপলব্ধি করছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisment

অতিসম্প্রতি বিধানসভায় পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন বিজেপির পরাজিত প্রার্থী ও প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। তাঁর এই দলে ফেরা নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন একেবারে প্রকাশ্যে। শুধু নেতৃত্ব শুধু নয়, দলের নীচুতলার কর্মীদের একাংশ তৃণমূল ভায়া বিজেপি হয়ে তৃণমূল ফেরত নেতাদের বাঁকা চোখেই দেখছেন। তবে শুধু সব্যসাচী নয়, অন্যদের ক্ষেত্রেও নীচুতলার কর্মীদের একই মতামত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবু এই তৃণমূল যোগ চলছে, চলবে।

আরও পড়ুন- ‘কংগ্রেসকে কংগ্রেস(এম)-এ পরিণত করার চেষ্টা করছেন মমতা’, দাবি অধীরের

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় মুকুল রায় থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল মন্ডল থেকে সব্যসাচী দত্ত, এঁদের সকলকেই 'মীরজাফর', 'গদ্দার', 'বিভীষণ'সহ নানা উপাধিতে ভূষিত করেছিল দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে সাদরে। রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূলের একটা বড় অংশ গেরুয়া শিবিরে চলে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় একটা লবি বেশি সক্রিয় হয়ে উঠছিল। স্থানীয়স্তরে দলের নিয়ন্ত্রন শুধু তাঁদের হাতেই চলে গিয়েছিল। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়ে উঠছিল। এদিকে পুজো মিটলেই হয়তো রাজ্যে পুরভোট হবে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় স্তরে নেতৃত্বের ব্যালান্স করা খুবই জরুরি বিষয় হয়ে দাড়িয়েছিল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। যে কোনও ক্ষেত্রে দু-তিনটে লবি থাকলে সহজেই সকলের খবর কলকাতায় বসেই পাওয়া যায়। তার জন্য অতিরিক্ত নজরদারির প্রয়োজন হয় না। 'চেক অ্যান্ড ব্যালান্স'। অভিজ্ঞ মহলের বক্তব্য, শুধু 'গদ্দার' বা 'মীরজাফর'-এ আবদ্ধ থাকেনি দল, সিন্ডিকেট নিয়েও সব্যসাচিকে বিঁধতে ছাড়েনি।

আরও পড়ুন- বিজেপিতে ফের স্বপদে কৈলাস, বিড়ম্বনায় দলের একাংশ, তুঙ্গে ‘কপি-পেস্ট’ বিভ্রান্তি

তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনের আগে যাঁরা দলের সঙ্গে বেইমানি করল, সেই 'গদ্দার'-দের ছাড়াই ২১৩টি আসন পেয়ে তৃতীয়বারের জন্য় বাংলায় দল ক্ষমতায় এসেছে। তাহলে এখন তাঁদের দলে নেওয়ার কোনও প্রয়োজন আছে কিনা তা নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও কার্যক্ষেত্রে তাঁদের প্রশ্ন তোলাই অবান্তর বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ ছাড়া কোনও কার্য ঘটে না এটা সর্বজনবিদিত। একদিকে যেমন 'চেক অ্যান্ড ব্যালান্স' পদ্ধতি, পাশাপাশি বিজেপির শক্তি কিছুটা হলেও কমছে তা নিয়েও সন্দেহ নেই। এই দলছুটদের পিছু পিছু কিছু অনুগামীও ভিড়ছে তৃণমূলে। মুকুল রায়ের অধিকাংশ অনুগামী ইতিমধ্যে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বিজেপি যে ভাবে তৃণমূলের দল ভেঙেছিল তার পাল্টা জবাবও দিচ্ছে তাঁরা। বিজেপির ৭৭ বিধায়ক, এখন ৭১-এ। বিরোধী দলনেতা বাদ দিয়ে তৃণমূল থেকে এসে বিজেপি বিধায়ক হওয়া অধিকাংশের নামেই জল্পনা ছড়িয়েছে।

ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখন টেলিগ্রামে, পড়তেথাকুন

tmc Mamata Banerjee mukul roy Sunil Mandal Sabyasachi Dutta
Advertisment