Civic Polls 2021: এক বছরের মধ্যেই তিনটি ভোট দেখছে শহর কলকাতা। একুশের বিধানসভা নির্বাচন, ভবানীপুর উপনির্বাচন এবং কলকাতা পুরনির্বাচন। প্রথম দুটি ভোটে প্রভাব রেখেই জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। একুশের ভোটে জিতে তৃতীয়বার রাজ্যে সরকার গড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এক বাটি দুধে সামান্য চোনা ছিল নন্দীগ্রামে তাঁর পরাজয়। যদিও অক্টোবরের উপনির্বাচনে সেই চোনাও সরিয়েছেন ভবানীপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের গড়ে দাপট দেখিয়েই জয় পান তিনি। সেই ভোটগুলোর রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগে ফের আরও একটা নির্বাচন।
এবার প্রায় ১ বছর ধরে ঝুলে থাকা কলকাতা পুরসভার নির্বাচন। এই নির্বাচনে লড়াই তৃণমূল বনাম বিজেপি, বাম এবং কংগ্রেস। অর্থাৎ একুশের ভোটে যে লড়াই ত্রিমুখী ছিল, ৭-৮ মাস পর সেই লড়াই চতুর্মুখী। এই রণক্ষেত্রেও আবার অ্যাডভান্টেজ তৃণমূল। কারণ একুশের বিধানসভা ভোট এবং পরবর্তী উপনির্বাচন পরাজয়ের জ্বালা এখন গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। দলের অন্দরে বিদ্রোহ-বেসুরো রাজনীতি। পাশাপাশি শহর কলকাতায় সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং প্রার্থীতালিকায় স্থানীয় মুখের অভাব। লড়াইয়ে অনেকটা পিছিয়ে রেখেছে বিজেপিকে। তবে এবার পুরভোটে ভোটের শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাম এবং কংগ্রেসের। কারণ এই দুই পক্ষ একলা লড়ায় তৃণমূল স্তরে তাদের ভোটব্যাঙ্ক ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটাই মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল।
সেক্ষেত্রে ভোট শতাংশের বিচারে কিংবা কাউন্সিলরের নিরিখে প্রধান বিরোধী দলকে পিছনে ফেলতে পারে বাম কিংবা কংগ্রেস। তবে সেক্ষেত্রে লড়াই দুই, তিন এবং চার নম্বরের। কারণ পরপর তিনবার ছোট লালবাড়ির দখল রাখতে একাধিক কৌশল নিয়েছে ঘাসফুল শিবির। এর আগে ২০১০ এবং ২০১৫ দুটি ভোটেই জয় পেয়েছে তৃণমূল। একুশের ভোট এবং উপনির্বাচনের দাপট এই ভোটেও রাখতে চায় শাসক দল। তাই প্রার্থী তালিকায় এক পদ, এক ব্যক্তি নীতি থেকে সরেছে তৃণমূল।
সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থী ফিরহাদ হাকিম-সহ দলের সাংসদ-বিধায়কদের পুরভোটে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। ১৯ ডিসেম্বর ভোটে নজরকাড়া ঘাসফুল প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন অতীন ঘোষ দেবাশিস কুমার, মালা রায়, দেবব্রত (মলয়) মজুমদার, রত্না চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। এঁদের কেউ দলীয় সাংসদ, কেউ আবার বিধায়ক।
এই পরিচিত মুখের বাইরে একগুচ্ছ নতুন মুখ তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় জায়গা পেয়েছে। সেই মুখগুলোর মধ্যে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী এবং বিধায়কের এবং নেতার পুত্র-কন্যারা রয়েছেন। এবার ভোটে তৃণমূলের তরুণ প্রার্থী তালিকায় জায়গা পেয়েছেন শশী পাঁজার কন্যা পূজা পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের পুত্র সৌরভ বসু, বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহার ছেলে সন্দীপন সাহা। এছাড়াও রয়েছেন সাংসদ শান্তনু সেনের স্ত্রী কাকলি সেন এবং মেয়র পারিষদ তথা বর্তমান পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তারক সিংয়ের পুত্র এবং কন্যা। তৃণমূলের পাশাপাশি প্রার্থীতালিকায় তারুণ্যে ভরসা রেখেছে বিজেপিও। তাদের ৪৮ জন প্রার্থীর বয়স ৪০-এর নীচে। বিদায়ী কাউন্সিলরদের রেখেই অনেক তরুণ মুখকে প্রার্থীতালিকায় স্থান দিয়েছে বাম এবং কংগ্রেসও।
তবে উনিশের ভোটে বিরোধীদের নিয়ে বেশি ভাবতে নারাজ রাজ্যের মন্ত্রী তথা এই পুরভোটে প্রার্থী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী আমরাই। আমাদের মানুষের বিশ্বাস জিততে হবে। এবং ঝুলে থাকা কাজগুলো শেষ করতে হবে।‘ একই সুর শোনা গিয়েছে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী তথা দলীয় বিধায়ক অতীন ঘোষের গলায়। তাঁর দাবি, তৃণমূল ১৩০-১৩৪টি আসন এমনিতেই জিতবে। মানুষ বিজেপির রাজনীতি ছুঁড়ে ফেলেছে। বাম এবং কংগ্রেস এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন